রোড শো হবে লন্ডন-সিঙ্গাপুরে
অর্থতালুকে অবশেষে ৬ সংস্থার লগ্নি-প্রস্তাব
দেড় বছরের খরা অবশেষে কাটল। নিউটাউনের অর্থতালুকের জন্য অবশেষে ছ’টি বিনিয়োগের প্রস্তাব পেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এর দু’টো অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরই অধীনস্থ সংস্থা। রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বুধবার বলেন, “এ বার বিদেশি ব্যাঙ্ক-সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লগ্নি-প্রস্তাব আদায়ের লক্ষ্যে লন্ডন, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে রোড-শো করা হবে।”
অর্থতালুক বা ‘ফিনান্সিয়াল হাব’কে বলা যেতে পারে আর্থিক কর্মকাণ্ডের স্নায়ুকেন্দ্র। ব্যাঙ্ক, বিমা, মিউচুয়াল ফান্ড-সহ বিবিধ আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেখানে ফ্রন্ট অফিস, শাখা অফিস, ডেটা অফিস খোলে, থাকে বিদেশি মুদ্রা বিনিময়, শেয়ার ও ঋণপত্র কেনা-বেচার বন্দোবস্ত। সোজা কথায়, এক চৌহদ্দির মধ্যে সংস্থা ও গ্রাহকের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আর্থিক পরিষেবার সংস্থান। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে নিউটাউনে এক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এমন একটি অর্থতালুক তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। ২০১০-এ প্রকল্পটির উদ্বোধনও হয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেই তা বাতিল করে জানিয়ে দেন, নিউটাউনে একটি বিশ্বমানের অর্থতালুক রাজ্য সরকার একাই গড়ে তুলবে।
সেই মতো গত বছরের মার্চে নতুন করে প্রকল্পের শিলান্যাস করে তৃণমূলের সরকার। দ্বিতীয় দফায় উদ্বোধনের পরে অর্থতালুকে বিনিয়োগ আকর্ষণে দিল্লি ও মুম্বইতে রাজ্য সরকার ‘রোড-শো’ করেছে। একই উদ্দেশ্যে ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএস)-এর মতো পরিকাঠামো উন্নয়ন ও আর্থিক বিষয়ক সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছে মোটা টাকায়। পাশাপাশি আগ্রহীদের থেকে বিনিয়োগ-প্রস্তাব পেতে তিন-তিন বার বিজ্ঞাপনও দিয়েছে হিডকো। সর্বশেষ বিজ্ঞাপনে প্রস্তাব পেশের শেষ দিন ধার্য হয়েছিল ৩১ অক্টোবর, বুধবার।
আর সেই সময়সীমা ফুরনোর পরে দেখা যাচ্ছে, মোট ছ’টি প্রতিষ্ঠানের তরফে প্রকল্প-প্রস্তাব জমা পড়েছে। সংস্থাগুলো হল: ইউকো ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স, শ্রেয়ি ইন্টারন্যাশনাল, পশ্চিমবঙ্গ অর্থ নিগম ও পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন অর্থ নিগম। শেষের দু’টি সংস্থা রাজ্য অর্থ দফতরের অধীন বলে এ দিন জানিয়েছেন নগরোন্নয়নমন্ত্রী। ফিনান্সিয়াল হাবে এরা কত টাকা ঢালবে?
ছ’টি সংস্থা এখানে কত লগ্নি করবে, কী ধরনের প্রকল্প করবে, তাতে কত লোকের কর্মসংস্থান হবে, কিংবা কবে তারা জমির দখল নিয়ে নির্মাণ শুরু করবে এ সবের কিছুই অবশ্য জানেন না হিডকো’র কর্তারা। তবে ছ’টি প্রতিষ্ঠানই বিজ্ঞাপনের শর্ত মেনে জমির বায়না বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে আবেদন করেছে বলে হিডকো-সূত্রের খবর।
একটি আন্তর্জাতিক মানের অর্থতালুক গড়ে তুলতে নিউটাউনের সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) এলাকায় ২৫ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে। এতে ন’টি প্লট, যার ছ’টির বায়না হয়ে যাওয়ার পরে তিনটি এখনও শূন্য। যে জমির বায়না হল, তার আয়তন সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ একর। প্রতি একরের দাম পড়বে ১৩ কোটি টাকা। হিডকোর দাবি: জমি তৈরি রয়েছে, পুরো দাম পেলেই তা হস্তান্তর করা হবে। ফিনান্সিয়াল হাবের জন্য সিবিডি ছাড়াও একটা বাড়িতে ৮০ হাজার বর্গফুট জায়গা রাখা হয়েছে। তার পুরোটাই খালি পড়ে রয়েছে। নগরোন্নয়নমন্ত্রী এ দিন বলেন, “সিবিডি-র জায়গা মোটামুটি ভর্তি। এখন সিবিডি-র লাগোয়া একটা কুড়ি একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে, শুধুমাত্র বিদেশি ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য।”
রাজ্যের অর্থতালুকে সেই বিদেশি লগ্নি আকর্ষণের তাগিদে এ বার লন্ডন-সিঙ্গাপুর-হংকংয়ে বিনিয়োগকারী সম্মেলনের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। তার ব্যবস্থাপনার ভার থাকছে আইএলএফএসের হাতে। সিঙ্গাপুরের সম্মেলনে মন্ত্রী নিজে উপস্থিত থাকতে পারেন। “ওই কুড়ি একরের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। সময়সীমা থাকবে আগামী মার্চ পর্যন্ত।” বলেন নগরোন্নয়নমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.