এক যুবককে খুন করে কাদা মাখিয়ে মাঠে ফেলে রেখে যাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল চার জনকে। বুধবার সকালে কালনার কৃষ্ণদেবপুর পঞ্চায়েতের হরিহরপাড়ায় একটি ইটভাটার কাছে দেহটি উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কওসর শেখ (৩৫)। তাঁর বাড়ি হরিহরপাড়া থেকে সাত কিলোমিটার দূরে কালীনগর গ্রামে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা খুনের কথা স্বীকার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরেই এমন ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কওসর পেশায় খেতমজুর। মাঝে-মধ্যে নৌকা চালানোর কাজও করতেন। মঙ্গলবার বিকেলে ভাগীরথী পেরিয়ে মালতিপুরে যান তিনি। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁকে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে তাঁকে বসে থাকতে দেখেছিলেন এলাকার মানুষজন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কালীনগরেরই বাসিন্দা, মাটি ও বালির কারবারি সোনাজুল শেখের সঙ্গে মোটরবাইকে চড়ে কওসর কালনা শহর লাগোয়া রংপাড়া এলাকায় একটি জলসার আসরে রওনা হয়। সঙ্গে ছিল সোহরাব আলি নামে আর এক যুবক। রংপাড়া গ্রামে পৌঁছে তারা কানাই বালা নামে পরিচিত এক জনের বাড়িতে যায়। পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, কানাইয়ের বাড়িতে মদ্যপানের আসর বসে। নবী মণ্ডল নামে কানাইয়ের এক বন্ধুও সেখানে উপস্থিত ছিল। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সেখান থেকে বেরোন কওসরেরা। এর কিছু পরেই তিনি খুন হন বলে জেনেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কওসরের মাথা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে। পড়ে গিয়ে তাঁর মাথায় ক্ষত হয়। পুলিশ জানায়, হরিহরপাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ গ্রামে একটি মোটরবাইক ঢোকার শব্দ পেয়েছিলেন তাঁরা। বুধবার সোনাজুল, সোহরাব, কানাই ও নবীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জেরা করেই পুরো ঘটনা জানা গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। খুনের কারণ প্রসঙ্গে মহকুমার এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, সোনাজুলের সঙ্গে কওসরের পুরনো বিবাদ ছিল। সম্ভবত তার বদলা নিতেই খুনের ছক কষে সে। ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শোকস্তব্ধ কওসরের বাবা খোরসেদ শেখ। এ দিনি তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মালতিপুরে চায়ের দোকানে বসে থাকতে দেখেছিলাম। রাতে বাড়ি ফেরেনি। সকালে যে এমন খবর পাব, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।” |