নাটক: স্লিপ নো মোর
দেশ: আমেরিকা
পরিচালক: ফেলিক্স ব্যারেট, ম্যাক্সিন ডয়েল সাল: ২০১১
একটা ছ’তলা বাড়ি। প্রায় একশোটা ঘর। এক একটা ঘর এক এক রকম সাজানো: পাগলা-গারদ, কবরখানা, যুদ্ধবিধ্বস্ত স্তূপ, বাথরুম, নাচঘর, বাচ্চার শোওয়ার ঘর, দোকান, মরা জন্তু স্টাফ করে রাখার গুদাম। আরও অনেক, অনেক। প্রায় সব ঘরেই কেউ না কেউ কিছু না কিছু করছে। একটা কোনও দৃশ্য অভিনীত হয়ে চলেছে। এই বাড়িতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে সমস্ত দর্শককে। বলা হচ্ছে, যেখানে খুশি যান। এমনকী ভাল না লাগলে বাড়িটা থেকে বেরিয়েও যেতে পারেন। বা, নীচে বার আছে, বসে মদ খান। এই ভাবে নাটক করছে ইংল্যান্ডের ‘পাঞ্চড্রাংক’ সংস্থা, আমেরিকায়। নাটকটা ‘ম্যাকবেথ’, কিন্তু বলে না দিলে বোঝা শক্ত (বলে দিলেও শক্ত)। নাটকে প্রায় কোনও সংলাপ নেই। দর্শকদেরও কথা বলার অনুমতি নেই।
যেই আপনি নাটক দেখতে ঢুকলেন, কোট টুপি ও মোবাইল নিয়ে নেওয়া হবে এবং দেওয়া হবে একটা তাস। এক তলায়, বার-এ বসে, আপনাকে এক পাত্তর অর্ডার করতে অর্ডার দেওয়া হবে। মুখে তুলেছেন কি তোলেননি, আপনার তাসের নম্বর ধরে ডাকা হবে, নিয়মগুলো শুনিয়ে দেওয়া হবে (কোনও কথা নয়, কোনও অভিনেতাকে স্পর্শ নয়, আর হ্যাঁ, এই সাদা মুখোশটা পরে নিন), তার পর এক জন আপনাকে লিফ্টে চড়িয়ে যে কোনও তলায় ছেড়ে দেবে। এ বার, আপনিই আপনার নাটক নির্মাণ করবেন। যে কোনও তলায় যে কোনও ঘরে ঢুকুন। যা কিছু রয়েছে যত খুশি হাঁটকে দেখুন। মনোরোগীদের সারি সারি খাট রয়েছে, প্রত্যেকের অসুখের ও অতীতের বিবরণ সেখানে লাগানো। পড়ুন। গাদা গাদা শিশি ভর্তি লজেন্স আছে। খান। আলমারি ভর্তি ফাইল তছনছিয়ে দিন, কফিন খুলে দেখুন, যে ঘরটায় মুন্ডুহীন পুতুল-বাচ্চা সারি সারি ঝুলছে সিলিং থেকে, সেখানে শিউরে উঠুন। যেখানে-সেখানে ডাঁই জানোয়ারের হাড়, টেবিলফ্যান যা নিজের ইচ্ছেমত ঘুরতে শুরু করে, গোয়েন্দাদের তোলা বীভৎস খুন হওয়া মৃতদেহের ছবি, অনেক রক্তের দাগ যা যখন তখন মিলিয়ে যায় আবার গজিয়ে ওঠে, চলন্ত গাছ। বা, এ সবের দিকে মন না দিয়ে, আপনি অনুসরণ করুন যে কোনও একটি চরিত্রকে, আর সে যখন যেখানে যাচ্ছে তার পিছন পিছন চলুন।
লেডি ম্যাকবেথ তাঁর নিজের ঘরে গিয়ে কিছু ক্ষণ ঘোরাঘুরির পর বাথরুমে ঢুকে চান করবেন। সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে। চান দেখুন। কিছু ক্ষণ পর লেডির ঘরে ঢুকবেন ম্যাকবেথ। দু’জনের কিছু শরীর-খেলা হবে। এ বার হয়তো আপনি ঠিক করলেন, ম্যাকবেথকেই অনুসরণ করবেন। তাঁর সঙ্গে নিচে যান, তিনি একটা আশ্চর্য নাচ দেখবেন। তার পর এক জনকে খুন করবেন। হয়তো মনে হল, এ বার অন্য কারও সঙ্গে ভিড়ে যাই। যান। অথবা র্যান্ডম উঁকি মারুন। হয়তো দেখবেন এক শেখের তাঁবুতে রাজা ডানকান-কে খুন করা হচ্ছে, হয়তো দেখবেন গর্ভিণী লেডি ম্যাকডাফ-এর মুখে প্রায় জোর করে বিষাক্ত দুধ ঢেলে দিচ্ছে লেডি ম্যাকবেথের পরিচারিকা। কোথাও লেডি ম্যাকবেথ বাথটবে বসে বার বারে হাত ধুচ্ছেন। কোথাও তিন ডাইনি (দু’জন নারী এক জন পুরুষ) নাচছে তীব্র আমিষগন্ধী নাচ, যার মধ্যে হঠাৎ ম্যাকবেথ এসে ঢুকলে তা দুরন্ত সমবেত যৌনতায় গড়াবে। সমস্ত জায়গায় আলো বেশ কম, গোটা বাড়িতেই বেজে চলেছে অনবরত বাজনা, যার ধাঁচ হরর ফিল্মের। অনেক রকম গানের সঙ্গে টুকরো টুকরো জোড়া আছে হিচকক-এর বহু ছবির মিউজিক। জায়গাটারও নাম দেওয়া হয়েছে ‘ম্যাক্কিট্রিক হোটেল’ (হিচককের ‘ভার্টিগো’ ছবির হোটেলের নাম)।
নাটকটা মূলত নাচ, মূকাভিনয় ও শরীরী বিভঙ্গ নির্ভর। কথা একেবারে নেই তা নয়, কিন্তু সে কথা অভিনেতারা নিজেদের মধ্যেই বলবেন তার মানে নেই। হয়তো আপনাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে এক অভিনেত্রী বিশাল আলমারিতে ঢুকিয়ে দেবেন এবং কানে কানে বলবেন ‘কাল রাতে স্বপ্ন দেখলাম আবার ম্যান্ডারলে গিয়েছি’, যা হিচককের ‘রেবেকা’-র ডায়লগ। শেক্সপিয়রের লাইনও বলতে পারেন। নাটক নয়, এঁরা আপনাকে দিচ্ছেন একটা ‘অভিজ্ঞতা’। তা হলে কি দর্শকরা গল্পটাও বুঝল না, আর একটা নির্দিষ্ট ক্রম অনুযায়ী দৃশ্য দেখে নাটকও ভোগ করল না? না। সবাই তার নিজস্ব নাটক অনুভব করল। যে যখন যে ঘরে গিয়েছিল, সে তো তখন অন্য ঘরের নাটক দেখতে পায়নি। তাই সকলে, একটা স্বপ্নের মতো, কিছুটা দৈবতাড়িত আর কিছুটা নিজ পছন্দ-অনুগামী হয়ে, দেখে এল অনেক গল্পের টুকরো, হ্যালুসিনেশনের কোলাজ, বানিয়ে নিল নিজের মতো মানে, কারণ তারাই তো পরে ছিল মুখোশ, অর্থাৎ তারাই তো ছিল অভিনেতা, নিজের নাটক করতেই তো গেছিল সে দিন ওখানে।

পুজো উদ্যোক্তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এ বার দুর্গাপুজোর মেয়াদ আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে দেওয়ায়, রাস্তায় মানুষের অবিশ্বাস্য ঢল নেমেছে। গত কাল, মহাসপ্তমীর ভিড় আগের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাওয়ায় মিডিয়া এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক ঠিক’ বলে অভিহিত করেছে। মণ্ডপশিল্পী ও ঝাড়লণ্ঠন ভাড়া-দেওয়া সংস্থাগুলি কৃতজ্ঞতা জানাতে মহাকরণে ফুল ও ফুলকপি এত পরিমাণে পাঠিয়েছেন, কোনগুলি খাবেন কোনগুলি ফেলবেন বাছতে কর্মীদের হিমসিম অবস্থা। শ্রেষ্ঠ উৎসবটিকে দশ দিন ধরে চুটিয়ে উদ্যাপনের এই অভিনব ধারণায় সকলে অনুপ্রাণিত, ‘বেশি দিন পুজো, বেশি নিন ছাড়’ স্লোগানের জন্মদাতা শপিং মল ‘কুল এন কম্ফি’ জানিয়েছে, তারা তৃতীয় সন্ধিপুজোয় মুখ্যমন্ত্রী-ছাপ বারমুডা বিতরণ করবে তেরোশো কাঙালির মধ্যে। কাঙালি হওয়ার ফর্ম পেতে গেলে অন্তত তেরো হাজার টাকার কেনাকাটা করতে হবে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দুর্গার এই ‘প্রসারিত ইনিংস’-এর ফলে আর আলাদা করে লক্ষ্মীপুজো করার দরকার নেই, ওই দিন তো মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গার পাশে লক্ষ্মী থাকবেনই, তাঁকেই অঞ্জলি দেওয়া হোক। বিশ্ব জোড়া মন্দার প্রকোপ ঠেকাতেই তাঁর এই নিদান। এর প্রতিবাদে কুমোরটুলির ‘লক্ষ্মী-স্পেশালিস্ট’ মৃৎশিল্পীরা মুখে মাটি লেপে মৌনী মিছিল বের করেছেন গত কাল। অন্তত পক্ষে পেঁচা তাঁদের গড়তে না দিলে দুর্গার ভাসান-অবরোধ করবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন।
দেখলেই পেশা চেনা যায়,
এমন দশ রকম গোঁফ

১ পরিবেশবিদ

২ পেয়াদা


৩ ডাক্তার

৪ ছুতোর


৫ জলদস্যু


৬ ঝাড়ুদার

৭ সাপুড়ে

৮ প্রথাভাঙা ‘রেবেল’


৯ ব্যায়লাবাদক

১০ রূপকথার গল্প উল্টে ‘র‌্যাপাঞ্জেল’-এর পুরুষ-ভার্সনের নায়ক।


+১ বেকার
• এক সময় নিয়ম ছিল, তাঁর মুখ বানানো হবে চলতি সময়ের সেরা ভিলেনের আদলে। পরাধীন ভারতে সেই মুখ হত লালমুখো সাহেবের, স্বাধীন রোশনাইয়ের সময় গব্বর সিং বা মোগাম্বো-র। সে সব রসের দিন অস্তমিত, এখন মহিষাসুর শুধুমাত্র অসুর, ওঁর মুখ কোনও সোশাল কমেন্টের ধারকাছ মাড়ায় না। অবশ্য থিম-পুজোর যুগে আদ্ধেক মণ্ডপে তাঁর মুখটা অবধি দেখা যায় না। কোথাও তিনি স্রেফ মোষ, কোথাও শুধু মোষের মাথাটুকুন। এক মণ্ডপে আবার সেই মাথার তলা থেকে লাল লেসার-আলোর ছটা প্রতিমার দিকে ধাবমান। ওইগুলো কি প্রচণ্ড আক্রোশের রশ্মি? আর এক প্যান্ডেলে মহিষের গোটা মাথাটাও নেই, শুধু এক জোড়া বিরাট শিং, সেই অপূর্ব বক্র ভেলায় দুর্গা সপরিবার চড়ে বসেছেন। একটা পুজোয় অবশ্য অসুররাই নায়ক। ঢোকার মুখে অসংখ্য ডিমের ভিতর ভ্রূণাবস্থায় তাঁরা ভাসছেন, দেখতে মানুষ-শিশুর মতোই, শুধু মাথায় দু’টি করে কিউট শিং! গুচ্ছের পুজোয় অসুর অস্ত্রটস্ত্র ধরেনইনি, হাতজোড় করে পুরুতের মতো দেবী-উপাসনায় ব্যস্ত। আর এক পাড়া থিম করেছে ‘বাউল’, সেখানে দুর্গা-লক্ষ্মী-সরস্বতী সব্বার হাতে একতারা-দোতারা, আর, মহিষাসুর একদম নেই, পূর্ণ বেপাত্তা! বোঝা গেল, ত্রিশূল দিয়ে স্রেফ হত্যা করা যায়, কিন্তু সুরের গুঁতোয় অসুরের অস্তিত্বটাই ভ্যানিশ!

• কাল্ট ফরাসি সফট-পর্ন ছবি ‘ইম্যানুয়েল’-এর নামভূমিকায় ঝড় তোলা ডাচ অভিনেত্রী সিলভিয়া ক্রিস্টেল মারা গেলেন। ১৯৭৪-এ আছড়ে পড়ে ইউরোপের মূল ধারার ছবিকে যৌনতার পাঠে সাবালক করেছিলেন, প্যারিসের একটি হল-এ ‘ইম্যানুয়েল’ রমরমিয়ে চলেছে টানা ১৩ বছর, গোটা বিশ্বে দেখেছেন সাড়ে তিনশো মিলিয়নের বেশি মানুষ। পেয়েছিলেন হলিউড-খ্যাতি, ১৯৮১-র বিখ্যাত সেক্স কমেডি ‘প্রাইভেট লেস্ন’-এ ফরাসি পরিচারিকা, শরীরী ফাঁদে বাথটবে এনে ফেলেন মালিকের কিশোর ছেলেটিকেও। তিন দশক জুড়ে পঞ্চাশের বেশি ছবিতে অভিনয়, লেডি চ্যাটার্লি, মাতা হারি-র মতো বর্ণিল চরিত্রে অনায়াস। আত্মজীবনী ‘ন্যু’-তে (‘নগ্ন’) সপাটে লিখেছেন ন’বছর বয়সে হোটেল-ম্যানেজারের হাতে যৌন লাঞ্ছনা, বয়সে অনেক বড় একাধিক পুরুষ-সকাশে জীবনভর ‘পিতৃপ্রতিম’ কাউকে খুঁজে বেড়ানো। ফিল্টার-ছাড়া সিগারেট খেতেন ছোট থেকেই, কোকেনকে বলতেন ‘সুপারভিটামিন’, একটা ‘শট’ না নিয়ে ছবির সেটেও শট দিতে পারতেন না। বলতেন, ‘আমি ছিলাম এক নীরব অভিনেত্রী, একটা শরীর মাত্র।’ ভুল। সঙ্গে ছিল সাহসের বারুদ ভর্তি হৃদয়।


আঁটুল বাঁটুল শামলা সাঁটুল শামলা গেছে হাটে
মাঠের ধারে লাকি-ড্র’য়ের হলদে টিকিট কাটে
সন্ধেঝোঁকে বেবাক লোকে নাচছে মাথায় নিয়ে
শামলাদের মেয়েগুলোর দারুণ দারুণ বিয়ে

• সরকারি লটারি হল নির্বোধদের ওপর লাগু হওয়া ট্যাক্স।
ক্যামিলো ডি ক্যাভর

• বিয়ে অনেকটা লটারির মতো এই উপকথাটি লটারি-ব্যবসার কী ক্ষতি করেছে, বলার নয়!
ক্যাথরিন লায়াল হোয়াইটহর্ন

• বাছারা, জীবনে কিছু পেতে চাইলে, তার জন্য খাটতে শেখো। এই চুপ চুপ, লটারির ফল ঘোষণা করছে!
ড্যান ক্যাস্টেলানেটা

• ...পাবলিকের নিরাসক্তির চোটে লটারি ব্যবসা লাটে ওঠে আর কী। তখন এক জন একটা নতুন জিনিস লটারিতে ঢোকাল: কয়েকটা নম্বর উঠলে, তার ফল খারাপ হবে। এই নিয়মে, লটারি কিনলে, হয় ক্রেতা দ্বিগুণ টাকা পাবে, অথবা অনেকটা টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য থাকবে। এই বিপদের সম্ভাবনা...মানুষের প্রবল উৎসাহ জাগিয়ে তুলল। ব্যাবিলনীয়রা উত্তাল হয়ে উঠল খেলায়। যে লোক লটারি কেনে না, তাকে দেখা হতে লাগল দুর্বলচিত্ত, ভিতুর ডিম হিসেবে।
হোর্হে লুই বোর্হেস-এর ‘দ্য ব্যাবিলন লটারি’ গল্পের অংশ

• প্রঃ লটারি-ক্রেতা কি বোকা?
গর্গরেফ: প্রত্যেক মানুষ জীবন কাটায় এই ভেবে: আর ক’সপ্তাহ বা ক’মাস বাদেই, ঠিইক একটা শুভ-বাঁক আসবে, সুখ ছলকাবে। যুক্তিভিত্তিহীন এই প্রত্যাশাই মানুষের ইঞ্জিন। এ কি লটারি-প্রত্যয় নয়?
প্রঃ লটারি-ক্রেতা চালাক?
গর্গরেফ: তা হলে তো সে টিকিটের পয়সাগুলো জমাত এবং ফুচকা খেত!
প্রঃ লটারি-ক্রেতা তবে কী?
গর্গরেফ: মানুষ। যে অবিশ্বাস্য ফলের জন্য অযৌক্তিক লাফ দেয় বলেই বিশ্বাস করে প্রেম, ধর্ম আর হিন্দি সিনেমায়।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.