এটিএম থেকে তিনি তুলেছিলেন দশ হাজার টাকা। কিন্তু ব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, চার কিস্তিতে দশ হাজার টাকা করে তোলা হয়েছে মোট ৪০ হাজার টাকা। এমন অভিযোগ তুলে অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা ফেরত চেয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন দুর্গাপুর সিটি সেন্টার নন-কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা অজয়কুমার রায়। যে এটিএম থেকে তিনি টাকা তুলেছিলেন, দুর্গাপুরে সেই ব্যাঙ্কের শাখার তরফে জানানো হয়, এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে এটিএম ব্যবহারে গ্রাহকের সচেতনতার অভাবের জন্যও এমন ঘটে থাকতে পারে বলে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের অনুমান।
অজয়বাবু জানান, সিটি সেন্টারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তিনি সিটি সেন্টারের এডিডিএ ভবনের নীচের তলায় অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে ১০ হাজার টাকা তোলেন। তিনি জানান, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাঁর মোবাইলে টাকা তোলার তথ্য জানিয়ে এসএমএস আসে। অজয়বাবুর দাবি, এটিএম থেকে বেরোনোর কিছুক্ষণের মধ্যে একই রকম আরও তিনটি এসএমএস আসে। বিষয়টি তিনি তখন খুব একটা গুরুত্ব দেননি। তাঁর কথায়, “ভেবেছিলাম প্রযুক্তিগত কোনও গোলমালে বারবার একই এসএমএস আসছে। কিন্তু বিকেলে বেনাচিতির একটি এটিএম থেকে ‘মিনি স্টেটমেন্ট’ বের করে হতবাক হয়ে যাই। তাতে লেখা ছিল, মোট চার বার ১০ হাজার টাকা করে তোলা হয়েছে।”
অজয়বাবুর দাবি, এর পরে যে ব্যাঙ্কে তাঁর অ্যাকাউন্ট তাদের হেল্পলাইনে ফোন করে বিষয়টি জানান। কিন্তু ব্যাঙ্কের তরফে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে ১১ অক্টোবর দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ জানায়, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের তরফে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। যে ব্যাঙ্কে অজয়বাবুর অ্যাকাউন্ট, তাদের তরফে জানানো হয়, যে এটিএম থেকে টাকা তোলা হয়েছিল সেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
যে এটিএম থেকে অজয়বাবু টাকা তুলেছিলেন, সেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওই ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, গ্রাহকের সচেতনতার অভাবের জন্য এমন ঘটে থাকতে পারে। তিনি জানান, টাকা তোলার পরে কিছু এটিএমে গ্রাহক ফের কোনও পরিষেবা চান কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে একটি নির্দিষ্ট বোতাম টিপলেই আবার কাজ শুরু করে এটিএম। ফের পার্সোনাল আইডেন্টিটি নম্বর (পিআইএন) দিতে হয় না। ওই আধিকারিকের দাবি, ওই গ্রাহক হয়তো পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করে বেরিয়ে পড়ায় পরবর্তী গ্রাহক বেআইনি ভাবে সুযোগ কাজে লাগিয়েছে বলে তাঁদের অনুমান। এটিএম কাউন্টারে লাগানো ক্যামেরার ছবি দেখে সেই ব্যক্তিকে ধরা সম্ভব কি না, সে প্রশ্নে ওই আধিকারিক জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” |