মায়ের মদত, অভিযোগ
শিকলে বাবা, ছেলেদের শাস্তি দিল প্রতিবেশিরা
প্রৌঢ় বাবাকে প্রায় দু’সপ্তাহ শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন তিন ছেলে। ওই কাজে ছেলেদের মদত দিয়েছেন মা বলেও অভিযোগ। স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে প্রতাপচন্দ্র দাস নামে ওই ব্যক্তিকে মুক্ত করেন। নির্যাতনের ‘শাস্তি’ দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাই।
আইন হাতে তুলে নিয়ে প্রতাপবাবুর স্ত্রী ও তিন ছেলেকে প্রকাশ্যে কানধরে বসিয়ে রাখা হয়।
ময়নাগুড়ির আনন্দনগরের রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকার ওই ঘটনায় প্রতাপবাবুর স্ত্রী ও ছেলেদের আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, পেশায় চাষি, বছর আটান্নর প্রতাপবাবু প্রায় ১৫ দিন শিকল বন্দি অবস্থায় পড়ে ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এত দিন প্রতিবেশীরা তা টের পাননি। স্থানীয় বাসিন্দা, ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম উপপ্রধান পরেশচন্দ্র রায় বলেন, “সম্পত্তির লোভে ছেলেরা মাকে সঙ্গে নিয়ে বাবাকে শিকল দিয়ে ঘরে বেঁধে রেখেছিল। এত দিন কেউ কিচ্ছু টের পায়নি।”
শুক্রবার সকালে ঘটনার কথা জানাজানি হলে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কিন্তু, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে প্রতাপবাবু নিজের স্ত্রী এবং ছেলেদের গ্রেফতার না করে একবার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা তাতে রাজি হননি। তাঁরা মা ও তিন ছেলেকে বাড়ির উঠোনে কান ধরে বসিয়ে রাখেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ তিন ছেলে ও মাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রোজ সকালে কয়েক জন পড়শিকে নিয়ে গ্রামে ঘুরে কীর্তন করেন প্রতাপবাবু। বেশ কয়েক দিন তাঁকে দেখতে না পেয়ে এ দিন উত্তম বসাক নামে এক জন বাড়িতে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, ঘরে শিকল বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছেন প্রতাপবাবু। স্থানীয় ক্লাবের তরফে তুহিন মজুমদারের অভিযোগ, “প্রতাপবাবু আগে ধূপগুড়ি ব্লকের নাথুয়ায় থাকতেন। সেখানে তাঁর ৯ বিঘা জমি রয়েছে। ওই জমি লিখে দেওয়ার জন্য স্ত্রী কাজল দেবী, বড় ছেলে অজয়, মেজ ছেলে বিক্রম এবং ছোট ছেলে বিপ্লব তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল।”
পড়শিরা জানান, বাইরের কেউ যেন ঘুণাক্ষরে টের না পায়, সে জন্য ঘরের জানলা পেরেক পুঁতে আটকে দেওয়া হয়েছিল। স্নান বা খাওয়ার সময় শিকলে বাঁধা অবস্থায় প্রতাপবাবুকে টেনে নিয়ে যেতেন স্ত্রী। এ দিন উদ্ধার হওয়ার পরে বিধ্বস্ত প্রতাপবাবুর চোখে ছিল জল। বললেন, “চেঁচালে অত্যাচার বাড়তে পারে, এই ভয়ে এত দিন টুঁ শব্দটিও করিনি।” তাঁর বড় ছেলে অজয় সম্পত্তি হাতানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন। উল্টে তিনি দাবি করেছেন, “বাবা মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।” এত কিছু ঘটা সত্ত্বেও পুলিশে কেন অভিযোগ করেননি, জানতে চাইলে প্রতাপবাবু ছলছল চোখে বলেন, “হাজার হলেও ওরা তো আমারই ছেলে!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.