বন্ধুত্বের হাত বাড়ালেও জরিমানা এড়াতে পারলেন না মেহতাব হোসেন ও হরমনজিৎ সিংহ খাবরা। অনুশীলনে মারামারি করার অপরাধে লাল-হলুদ মাঝমাঠের দুই ফুটবলারকেই পনেরো হাজার টাকা করে জরিমানা করলেন ট্রেভর মর্গ্যান।
এখন প্রশ্ন, দুই অভিজ্ঞ ফুটবলারের এই আচরণ আদৌ কি কোনও প্রভাব ফেলতে পেরেছে দলের অন্দরে? পেন ওরজি থেকে উগা ওপারা কিংবা অধিনায়ক সঞ্জু প্রধান, সবাই উল্টো কথাই বলছেন। পেন বলছিলেন, “আমাদের দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে বলেই এ সব ঘটনা হয়। ওরা দু’জন তো আর একে অপরের শত্রু নয়! ভেবে দেখুন, সামান্য একটা অনুশীলন ম্যাচ নিয়ে কতটা সিরিয়াস ফুটবলাররা। তা হলে আসল ম্যাচে কী হবে?” একটু দূরেই দাঁড়িয়ে আবার ওপারা বলছিলেন, “বিশ্বের সব ক্লাবেই এ রকম ঘটনা হয়। একতা আমাদের শক্তি। এ সব ছোটখাটো ঘটনার কোনও জায়গা নেই ইস্টবেঙ্গলে।” |
‘ফিল গুড’-এর প্রত্যাবর্তন। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। ছবি: উৎপল সরকার |
শুক্রবার সাত-সকালে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, পেন-ওপারার কথাই অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। কোথায় গণ্ডগোল, মন-কষাকষি! বৃহস্পতিবারের ঘটনাকে যেন অতীতের বাক্সে পুরে নতুন উদ্যমে অনুশীলন করছেন মেহতাব-খাবরা। হাসি-ঠাট্টায় মজে দুই বন্ধু। কোচের নিষেধাজ্ঞার জেরে সরকারি ভাবে দু’জনেই কোনও মন্তব্য করেননি। তবে ক্লাব সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ড্রেসিংরুমে মর্গ্যানের সামনেই সব সমস্যা মিটিয়ে নেন তাঁরা। সঞ্জু বলছিলেন, “ঘটনা বললেই ঘটনা। না হলে নয়। বৃহস্পতিবার যা ঘটেছে, সেটা কোনও ঝামেলাই নয়।”
মারামারি-র এপিসোড ভুলে অবশ্য ‘মিশন’ আই লিগের প্রস্তুতি ফের জোর কদমে শুরু করে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। সোমবার ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ পুণে এফসি ম্যাচ থেকে মর্গ্যানের লক্ষ্য পুরো তিন পয়েন্ট। শুক্রবার অনুশীলনের পরে লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ বললেন, “আই লিগের শুরুতে পয়েন্ট নষ্ট হলে শেষের দিকে চাপ বেড়ে যায়। এ বার তাই শুরু থেকেই নির্দিষ্ট একটা পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে চাই। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, তিন পয়েন্ট ছাড়া কিছুই ভাবব না। (হাসতে হাসতে) আই লিগে আর রানার্স হতে চাই না।”
মোটামুটি যা পরিস্থিতি, তাতে পুণে ম্যাচে খুব একটা পরিবর্তনের পক্ষপাতী নন মর্গ্যান। গোড়ালির চোট সারিয়ে একমাত্র মননদীপ সিংহ প্রথম দলে ঢুকতে পারেন। বলজিৎ সিংহের জায়গায়। বাকি দল একই থাকছে। কেননা পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে দশ দিনের জন্য পার্থে নিজের বাড়িতে গেলেও, ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে বেশ খুশি লাল-হলুদ কোচ। সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরির কাজেও সন্তুষ্ট। তবে এ সবের মধ্যেও একটা খচখচানি থেকেই যাচ্ছে চতুর্থ বিদেশি নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ায় এক ফুটবলারকে খুব পছন্দ হয়েছিল মর্গ্যানের। সব ঠিকঠাক চললে, দু’এক দিনের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল ট্রায়ালেও দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর হাঁটুর চোট সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। মর্গ্যান অবশ্য হাল ছাড়ছেন না। সরাসরি কিছু না বললেও, কোচের যা ইঙ্গিত তাতে খুব শীঘ্রই মিটতে চলেছে চতুর্থ বিদেশির সমস্যা। |