জাতীয় নির্বাচকদের কাজে ঢুকতে চান না। কিন্তু আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজে অশোক দিন্দার হয়ে সওয়াল করে রাখলেন বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। ঠিক যে দিন দিন্দা প্রথম বারের জন্য বোর্ডের চুক্তিতে ঢুকে পড়লেন, সে দিনই মনোজ বলে রাখলেন, “আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, এক জন পেসার ছন্দে থাকতে থাকতে তাকে খেলানো উচিত। নির্বাচন নিয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। বলা উচিতও নয়। কিন্তু পেসারের কাছে ছন্দটাই সব। সে কারণে এখনই যদি দিন্দাকে জাতীয় দলে খেলানো হয়, তা হলে সেটা ওর পক্ষেও ভাল হবে।”
শুক্রবার চুক্তি তালিকা পেশ করা হল বোর্ডের তরফ থেকে। সেখানে গ্রেড ‘সি’-তে দিন্দা ছাড়াও বাংলা থেকে আছেন মনোজ ও ঋদ্ধিমান সাহা। মনোজ-ঋদ্ধি এর আগেও চুক্তি তালিকায় ছিলেন। কিন্তু দিন্দা এই প্রথম। “আমি এতটুক অবাক হইনি। ও গত বছর থেকেই অবিশ্বাস্য ফর্মে আছে। দলীপেও সাত উইকেট নিল,” এ দিন ইডেনে প্র্যাক্টিস শেষে বলছিলেন মনোজ।
চব্বিশ ঘণ্টা পরই বাংলার এই তিন তারকা ক্রিকেটারই চলে যাবেন ভারত ‘এ’ দলে যোগ দিতে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ১ নভেম্বর রাতে মুম্বই থেকে ফিরে পরের সকালেই ইডেনে নেমে পড়তে হবে রঞ্জি ট্রফিতে। প্রতিপক্ষ আবার রাজস্থান যারা কিনা গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন। সমস্যা হবে না? “এটা ঠিক যে টানা সাত দিন আগে কখনও খেলতে হয়নি। কিন্তু সূচি এ রকম হলে আর কী করা যাবে,” বলে দিচ্ছেন বাংলা অধিনায়ক। সঙ্গে যোগ করলেন, “আর রঞ্জিতে প্রথমেই রাজস্থানকে সামলাতে হবে ভেবে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। বরং এটা ভালই হল। প্রথমেই কঠিন প্রতিপক্ষ পেলে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার কাজটা হয়ে থাকে।”
এক দিকে রঞ্জি অভিযানের প্রস্তুতি। অন্য দিকে, সদ্য দলীপ ট্রফি জয়ী পূর্বাঞ্চলকে নিয়ে টিমের দুই সিনিয়রের সার্টিফিকেট। মনোজ-ঋদ্ধি দু’জনেরই মনে হচ্ছে, পরপর দু’টো দলীপে পূর্বাঞ্চলের ‘সাইক্লোন’ থেকে বাংলা ক্রিকেটের দাপটই স্পষ্ট। “সর্বভারতীয় টুর্নামেন্টে পরপর দু’বছর এ রকম পারফর্ম করা সহজ নাকি? বোঝাই যাচ্ছে, বাংলার ক্রিকেট কতটা এগিয়েছে,” বলছেন মনোজ। সঙ্গে ঋদ্ধির সংযোজন, “আমি এ বার ছিলাম না। কিন্তু তবু ট্রফি জেতা আটকায়নি। এটা দেখে আরও ভাল লাগছে।” আর যাবতীয় আকর্ষণের ভরকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে যিনি, সেই অনুষ্টুপ মজুমদার আবার পুরো ঘটনাপ্রবাহ দেখে স্তম্ভিত। ব্যাটসম্যান নয়, বোলার অনুষ্টুপ। দলীপ ফাইনালে যাঁর চার উইকেট রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে বাংলা ক্রিকেটমহলে। কারও কথায়, অনুষ্টুপ এখন কমপ্লিট ক্রিকেটার। যে ব্যাটিং-বোলিং-কিপিং তিনটেই করতে পারে। নির্বাচকরা আবার স্বস্তিতে স্পিনার নিয়ে টেনশন কেটে যাওয়ায়। এ বার রঞ্জিতে মনোজের কাছ থেকে বল চেয়ে নেবেন? দুপুরের ইডেনে উত্তর দিতে গিয়ে হাসেন অনুষ্টুপ। “পরিস্থিতি বুঝে। তবে মজা কী জানেন। সবাই মেসেজে লিখছে, তুই আবার কবে থেকে বোলার হলি? আমাদের পূর্বাঞ্চল ক্যাপ্টেন নটরাজ নিজেও কিন্তু জানত না। শেষে নিজের ঢাক নিজেকেই পেটাতে হল!” |