বোর্ডের চুক্তি তালিকায় অশোক দিন্দার নামটা দেখে অদ্ভুত তৃপ্তি হচ্ছে। গত বছর ও যা পারফর্ম করেছে, তার পর ওকে সেন্ট্রাল কন্ট্র্যাক্টের বাইরে রাখা হলে অন্যায় হত। এক মরসুমে ৭০টার মতো উইকেট তোলা কি মুখের কথা? চলতি মরসুমেও ওর শুরুটা ভাবুন। দলীপ সেমিফাইনালে সাত উইকেট নিল। গ্রেড সি-তে ওকে রাখা হয়েছে। কিন্তু আমার মতে সি নয়। দিন্দাকে গ্রেড বি-তে রাখা উচিত ছিল।
বোর্ডের এই চুক্তিকে টাকার অঙ্কে মাপতে গেলে ভুল হবে। এক জন ক্রিকেটার পঞ্চাশ লক্ষ পাচ্ছে না পঁচিশ, সেটা বড় কথা নয়। বিচার্য বিষয় গুরুত্ব। অর্থাৎ বোর্ড এবং নির্বাচকরা সেই ক্রিকেটারকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। দিন্দাকে গ্রেড সি-তে রাখার মানে ও নির্বাচকদের ‘প্রায়োরিটি লিস্টে’ আছে। দেশের সেরা চার-পাঁচ জন পেসারের মধ্যে ওকে ধরা হচ্ছে। সে জন্যই বিনয় কুমার, অভিমন্যু মিঠুনের সঙ্গে এক ব্র্যাকেটে। বাংলার ছেলে বলে পক্ষপাতিত্ব করছি না, গত এক বছরে দিন্দার যা পারফম্যান্স তাতে কিন্তু ও বিনয়দের সঙ্গে একই জায়গায় থাকে না। ইশান্ত শর্মার চেয়ে দিন্দা কম কোথায়? ইশান্তকে যখন গ্রেড বি-তে রাখা হচ্ছে, তখন দিন্দাকেও রাখা যেত। তুমি যখন ওকে দেশের সেরা পেসারদের এক জন ধরছ, তখন ওকে সেই আত্মবিশ্বাসটা জোগাও। ইশান্ত-ইরফানদের মতো টেস্ট খেলুক কী না খেলুক। মনোজ-ঋদ্ধিদের চুক্তিবদ্ধ হওয়া নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। ওরা আগেও ছিল। এ বারও আছে। কিন্তু বালাজি কী করছে ওই তালিকায়?
আমার দেখে যা মনে হল, যারা তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেটই জাতীয় দলে খেলে, তারা গ্রেড ‘এ’-তে ঢুকেছে। যেমন সহবাগ, গম্ভীর, জাহির। ওই গ্রেডে ন’জনের মধ্যে একমাত্র সচিন শুধু টি-টোয়েন্টি খেলে না। যারা ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত, তারা আছে গ্রেড ‘বি’-তে। বাকিরা গ্রেড সি-তে। কিন্তু শুধু ক্রিকেটীয় বিচারে ধরলে, বালাজির কোথাও থাকার কথা নয়। একটা আইপিএলে ভাল খেলেই এ ভাবে বোর্ডের চুক্তি তালিকায় ঢুকে পড়া যায় নাকি?
অনেকে আবার প্রশ্ন তুলবেন, হরভজন কেন ‘বি’-তে নেমে এল? যুবরাজও তো ক্যানসারের আগে টেস্টে কিছু করেনি। কিন্তু ও থাকল। আর হরভজনকে গত এক বছর বাইরে রেখেই ওকে নামিয়ে দেওয়া হল। যুক্তিটা দিই। টেস্টে ছ’নম্বর জায়গাটা এখনও খালি। আমার মনে হয়, নির্বাচকরা সেখানে যুবরাজকে চাইছে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে। উল্টো দিকে, হরভজনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হল তোমার টেস্টে চারশো উইকেট আছে। অভিজ্ঞতা প্রচুর। কিন্তু টেস্টে এই মুহূর্তে তোমার চেয়ে অনেক এগিয়ে অশ্বিন। তুমি সেকেন্ড চয়েস। আসলে নির্বাচকদের ধ্যানধারণা নিয়ে স্পষ্ট একটা ছবি পাওয়া যায় এই তালিকাটা দেখলে। |