দিল্লি ডেয়ারডেভিলসও সেমিফাইনালে হেরে গেল। তার মানে চারটে আইপিএল টিমের একটাও এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে উঠতে পারল না। ব্যাপারটা নিয়ে এর আগেও আলোচনা হচ্ছিল। প্রথম সেমিফাইনালের পরে সমালোচকেরা আইপিএল টিমদের এবং আইপিএল টুর্নামেন্টটাকেই ক্রুশবিদ্ধ করার আরও একটা কারণ পেয়ে গেলেন। কিন্তু আমার মনে হয় শুকনো নম্বরের হিসেবে আইপিএলের বিচার করাটা অন্যায় হবে।
আমি কোনও দিনই অজুহাতে বিশ্বাস করি না। যাঁরা আমাকে চেনেন তাঁরা জানেন, আমার টিম ভাল না খেললে সবার আগে আমিই দোষটা মাথা পেতে নিতে এগিয়ে আসি। আমি শুধু এটুকুই বলব যে, আইপিএলের কোনও দলের অন্দরমহলের সঙ্গে কোনও রাজ্য বা এলাকার টিমের অন্দরমহলের অনেক তফাত থাকে। এই দলগুলোর ক্রিকেটাররা বছরের অনেকটা সময় ধরে একসঙ্গে থাকে, একসঙ্গে খেলে, একসঙ্গে ট্র্যাভেল করে। সেখানে আইপিএলের টিমের ক্রিকেটারদের দেখা হয় বছরে এক বার, বড়জোর মাসদুয়েকের জন্য। আমি বলছি না যে, এটাই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। কিন্তু মাঝেমধ্যে এই ব্যাপারটা টিমের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে।
আমি কখনওই বলব না দক্ষিণ আফ্রিকার পিচ খুব কঠিন, ওখানে বল খুব বেশি লাফায়। তবে হ্যাঁ, এটা সত্যি যে আইপিএল টিমগুলোর সাফল্য নির্ভর করে ভারতীয়দের প্রতিভার উপর। যাদের মধ্যে অনেকের ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র রঞ্জি ট্রফিতেই সীমাবদ্ধ। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরিবেশে সাফল্য পেতে গেলে এই ক্রিকেটারদের আর একটু বেশি অভিজ্ঞতা দরকার।
কেকেআরের ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমাদের ভারতীয় দুই প্রতিভা দেবব্রত দাস বা প্রদীপ সাঙ্গওয়ান যথেষ্ট ভাল খেলেছে। এদের কারওরই টেকনিকের দিক থেকে কোনও খামতি ছিল না। আমাদের সমস্যা ছিল, কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা ভাল খেলতে পারিনি। এ সবের জন্য টুর্নামেন্ট হিসেবে আইপিএলকে দোষ দেওয়াটা সত্যিই অন্যায়। আইপিএল একটা ঘরোয়া ভারতীয় টুর্নামেন্ট, যেখানে কিছু বিদেশি ক্রিকেটারও খেলে। তো সেই টুর্নামেন্টে কি প্রচণ্ড গতিসম্পন্ন, বাউন্সি উইকেট থাকবে? আইপিএল যে বিভিন্ন রকমের উইকেটে খেলা হয় ভারতীয় ক্রিকেটের চরিত্র বোঝাতে সেই উইকেটগুলো আদর্শ। আপনারাই বলুন, কোনও ভারতীয় রেস্তোরাঁর খাবারে কি কোনও দিন মেক্সিকান মশলা খুঁজে পাবেন?
একটা কথা না বলে পারছি না। বিদেশি টিমগুলো যে জার্সি পরে, তার কয়েকটা আমার খুব পছন্দ। সিডনি সিক্সার্সের গোলাপি জার্সিটাকে হয়তো দশের মধ্যে নয় দেব না। কিন্তু টাইটান্সের নীল জার্সিটা আমার দারুণ লাগছে। ওদের ট্রাউজারের পিছনে যে ডিজাইনটা আছে, সেটা তো অসাধারণ। এ রকম জিনিস ওদের জার্সিতেই প্রথম দেখলাম। একটা গোপন কথা বলি। এত বছর চুপিচুপি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নীল-সোনালি জার্সিটা দারুণ পছন্দ করতাম। টিভিতে বা সামনাসামনি সচিনদের জার্সিটা নজরকাড়া।
তবে আমার মনে হয় কেকেআরের সোনালি-বেগুনি জার্সিটাই সেরা। ভাববেন না আমি পক্ষপাতিত্ব করছি। কারণটা শুনুন। আমি ফ্যাশন ডিজাইনার নই, তবু আমার মনে হয় এই জার্সিতে আমাদের সবার চেয়ে আলাদা লাগে। কারণ আইপিএলের বেশির ভাগ টিমের জার্সির রংই তো নীলের হেরফের। জার্সির পিছনে যে সোনালি দিয়ে আমাদের নাম আর জার্সি নম্বর লেখা থাকে, সেটাও আমার খুব ভাল লাগে।
যাই হোক, এখন খেতে বেরোচ্ছি। কিন্তু শুক্রবার রাতে সিডনির গোলাপি জেতে না টাইটান্সের নীল, সে দিকেও নজর রাখব। আবার দেখা হবে। |