তৎপর দু’পারের প্রশাসন
টাকিতে দেখা গেল না মিলনের ছবি
নৌকা চড়ে টাকিতে ইছামতী নদীতে ঠাকুর দেখার বায়না করেছিল বছর দশেকের দুর্গা। মেয়ের বায়না ফেলতে পারেননি নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণ মাইতি। দশমীর বিকেলে স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন টাকিতে ইছামতীর ধারে।
কিন্তু কোথায় সেই এত বছরের চেনা ছবি? প্রশাসনিক কড়াকড়িতে এ বার বিধিবাম। গত বছর এই ইছামতীতেই বিসজর্ন দেখতে এসে প্রাণ হারান একজন। প্রশাসনিক শিথিলতার সুযোগে উঠেছিল অনুপ্রবেশ, চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ। দুই বাংলার মিলনের মেলায় ছিটে লেগেছিল কলঙ্কের। এ বার সেই কলঙ্ক ঘোচাতে তৎপর ছিল দুই দেশের প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের এই সতর্কতা বিসজর্নকে সুষ্ঠু করলেও হারিয়ে গিয়েছিল দুই বাংলার মিলনের আবেগ। তাই টাকিতে এ বার বিসর্জনে দুই বাংলার মিলন দেখতে আসা দু’পারের মানুষকে হতাশ হতে হয়েছে।
—নিজস্ব চিত্র।
গত বছরের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে এ বার তৎপর ছিল বসিরহাট মহকুমা প্রশাসন এবং বিএসএফ। পুজোর আগে আগেই শুরু হয়েছিল ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী এবং পুলিশের যৌথ মহড়া। বিসর্জনকে সুষ্ঠু করতে ছড়ানো হয়েছিল লিফলেট, হয়েছিল মাইক-প্রচার। লাইসেন্সপ্রাপ্ত নৌকা ছাড়া কোনও নৌকা নদীতে নামতে দেওয়া হয়নি। নদীর মাঝে টহল দিয়েছে বিএসএফের স্পিডবোট। ওপারেও ছিল সতর্কতা। ফলে অন্যবার বিসর্জনের সময় দুই বাংলার মিলন এ বার ছিল অনুপস্থিত। দুই পারেই কড়া নিরাপত্তায় বিসর্জন হয়। প্রশাসনের এ হেন তৎপরতায় দুই বাংলার মিলনের দৃশ্য থেকে বঞ্চিত দূরদুরান্ত থেকে আসা মানুষের রোষানলে পড়ে প্রশাসন। কলকাতার টালিগঞ্জের বাসিন্দা অর্ণব আইচ ক্ষোভের সঙ্গেই বলেন, “বিজয়ার দিন ইছামতীতে প্রতিবেশী দেশের মানুষের সঙ্গে মিলে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলাম।’’ টাকির বাসিন্দা দীপক বসু, অধীর পালের কথায়, “শান্তি-শৃঙ্খলার প্রশ্নে এবং অনুপ্রবেশ বন্ধে কড়া পদক্ষেপ নিক প্রশাসন এটা চেয়েছিলাম সত্যি। কিন্তু তা যে এ ভাবে টাকির বিসজর্নকে জৌলুসহীন করবে তা ভাবতে পারিনি!” অবশ্য বিপরীত ভাবনাও ছিল। বিসর্জনকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ বার প্রশাসনের ভূমিকা ঠিক ছিল। তবে আগামী বছর থেকে যাতে সাধারণ মানূুষ নৌকা করে ইছামতীর বুকে বিসর্জন দেখতে পারেন তার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।” নাগরিক কমিটির সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ভাল কিছু করতে গেলে প্রশাসনের কড়া হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।” বসিরহাটের মহকুমাশাসক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “গত বছর অনুপ্রবেশের অনেক অভিযোগ উঠেছিল। ঘটেছিল প্রাণহানিও। তাই বিসর্জন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে দু’দেশের প্রশাসন যৌথ সিদ্ধান্ত নেয়।”
অন্যদিকে, এ দিন বসিরহাটে ইছামতীতে বিসর্জন দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। টাকিতে ইছামতীতে বিসর্জন দেখতে গিয়ে হতাশ হওয়া অনেকেই বসিরহাটে এসে বিজয়া দেখে দুধের স্বাদ মিটিয়েছেন সরবতে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.