মণ্ডপে দর্শনার্থীর ঢল দেখা গেল একাদশীর সন্ধ্যাতেও, যা শুরু হয়েছিল পঞ্চমী থেকেই। বৃহস্পতিবারও সন্ধ্যা থেকেই বড় পুজোমণ্ডপগুলোর সামনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতন।
এ বার বনগাঁ শহরে বড় পুজোর প্রতিমা বিসর্জনের প্রশাসনিক দিন রবিবার। সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ। পুলিশের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে। ফলে বাড়তি আরও কয়েকটা দিন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরার সুযোগ পেয়েছেন এলাকার মানুষ। পুজোর অন্যান্য দিনগুলির মতন বৃহস্পতিবারও ভ্যান, রিকশায় যেমন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরেছেন কচিকাঁচা থেকে তরুণ-তরুণীরা। তেমনই দেখা গিয়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। সায়ন্তনী ভট্টাচার্য নামে এক মহিলা জানালেন, “বিয়ের পর মুম্বইয়ে থাকি। প্রতিবছর পুজোয় বাপের বাড়িতে আসি। এ বার আসতে দেরি হয়েছে। অন্য বছর হলে এ বার হয়তো ঠাকুরই দেখা হত না। সবই ঠাকুরের ইচ্ছা।”
কয়েকটি বড় পুজোর উদ্যোক্তারাও প্রতিমা নিরঞ্জনের দিন পিছিয়ে যাওয়ায় খুশি। তাঁদের কথায়, “ইচ্ছাই করছিল না দ্রুত প্রতিমা বিসর্জন দিতে। দিন পিছিয়ে যাওয়ায় আমরা খুশি।” স্থানীয় প্রতাপগড় স্পোর্টিং সঙ্ঘ এ বার কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ রকের আদলে মণ্ডপ গড়েছে। সঙ্ঘের সামনের মাঠে কার্যত মেলা বসে গেছে পুজোর কটা দিন ধরে। পুজোর দিনগুলিতে পুলিশের পক্ষ থেকে শহরে গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয় না ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য। |
বৃহস্পতিবার সেই নিষেধাজ্ঞা না থাকায় অনেকেই গাড়ি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতিমা দেখতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এ বার মহকুমায় সেভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরাও লাভের মুখ দেখেছেন। ফলে প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও মানুষ শহরের ঠাকুর দেখতে ভিড় জমিয়েছেন। গরু পাচারের মতন চোরকারবারের রমরমাও এবার পুজোতে প্রভাব ফেলেছে অনেক ক্ষেত্রে। পুজোর বাজেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে জৌলুস।
ভিড় মূলত ছিল শহরের চারটি থিমপুজোয়। পূর্বপাড়া প্রগতি সঙ্ঘ, সুভাষনগর সেবা সমিতি, বৈজয়ন্ত সঙ্ঘ এবং এগিয়ে চলো সঙ্ঘের পুজো এবার দর্শক টেনেছে। প্রগতি সঙ্ঘ করেছে পৃথিবীর উপর উষ্ণায়নের প্রভাব, সুভাষনগরের থিম বৃদ্ধাশ্রম। কেন এই থিম? উদ্যোক্তারা জানালেন, একান্নবর্তী পরিবার ক্রমশ ভাঙছে। ছেলেমেয়েরাও বাবা-মাকে আর দেখে না। তাদের মধ্যে সচেতনতা আনতেই এই উদ্যোগ। বৈজয়ন্ত সঙ্ঘের এবারের থিম হীরক রাজার দেশে। এগিয়ে চল সঙ্ঘের থিম দার্জিলিং। এছাড়াও দর্শক টেনেছে ঐক্য সম্মিলনী, অভিযান সঙ্ঘ, রেটপাড়া স্পোর্টিং সঙ্ঘ ইত্যাদি। মহকুমার মধ্যে গাইঘাটার দেশের বাড়ি সঙ্ঘ, আঙুলকাটা নেতাজী সঙ্ঘ, বাগদার চুয়াটিয়া সুকান্ত সঙ্ঘ, কলমবাগানের অক্ষয় সঙ্ঘেও ছিল অসংখ্য মানুষের ভিড়। |