এক বছরেরও বেশি বন্ধ থাকা সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা খুলতে ফের আগ্রহ দেখালেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
দিন কয়েক আগে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলিকে দেওয়া এক চিঠিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে কারখানার বিভিন্ন বিভাগ খোলা হবে। ধাপে ধাপে শ্রমিকদের নিয়োগ করা হবে। তবে, শ্রমিকেরা চাইলে তাঁদের পুরো বকেয়া নিয়ে চলে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নতুন শ্রমিক নিয়োগ করা হবে। কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশন) ধ্রুবজ্যোতি নন্দী বলেন, “কর্তৃপক্ষ কারখানা চালু করতে চান বলেই রাজ্য সরকার এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যেই অন্য তরফ থেকে উত্তর পেয়ে যাব।” চিঠির কথা মেনে নিয়ে শ্রমমন্ত্রী বলেন, “ডানলপ কর্তৃপক্ষ যদি আইন মাফিক শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে কারখানা চালু করতে চায়, রাজ্য সরকারের তাতে কোনও আপত্তি নেই।”
কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বলেন, “কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি, যে ২৫ জন শ্রমিক ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন, প্রথমে তাঁদের বকেয়া, তার পরে অবসরপ্রাপ্ত সাড়ে ৪০০ শ্রমিকের অবসরকালীন পাওনা মেটানো হোক। বাকি শ্রমিকদের বকেয়া কর্তৃপক্ষ মিটিয়ে দিলে তাঁরা স্বেচ্ছায় চলে যাবেন।” একই মত অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলিরও।
গত মে মাসে ডানলপ কর্তৃপক্ষ এবং সরকারি প্রতিনিধির সঙ্গে এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছিল, বকেয়া মিটিয়ে দিলে শ্রমিকেরা কাজ ছেড়ে চলে যেতে প্রস্তুত। রাজ্য সরকার এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে সম্প্রতি দেওয়া ওই চিঠিতে সেই বৈঠকে তোলা শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবিকেই মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন কারখানার এক কর্তা। শ্রমিক সংগঠনগুলিও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় অনাগ্রহ দেখায়নি।
বর্তমানে ডানলপে প্রায় ১৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। গত কয়েক মাসে শ্রমিক সংগঠন, রাজ্য সরকার এবং ডানলপ কর্তৃপক্ষের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হলেও কারখানা খোলা নিয়ে সমাধানসূত্র মেলেনি। সরকার নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও সদর্থক পদক্ষেপ করেনি বলে ক্ষোভ রয়েছে শ্রমিকদের। পুজোর ঠিক আগে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের এক মাসের বকেয়া বেতন মেটান। অধিকাংশ শ্রমিকই চান, প্রথমে তাঁদের যাবতীয় বকেয়া দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হোক। গত বছর ৮ অক্টোবর কারখানা বন্ধ হওয়া থেকে এ নিয়ে তাঁরা আন্দোলনও চালাচ্ছেন। |