তৃণমূলের কোন্দল, যুবক খুন ফুলিয়ায়
মেলার মধ্যে গুলি করে কুপিয়ে খুন করা হল এক যুবককে। আর সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফুলিয়া পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের রঘুনাথ চট্ট্যোপাধ্যায়। পুলিশ ঘটনাটি ‘ব্যবসায়িক বিবাদ’ বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও তা ধোপে টেঁকেনি। সিপিএম-কংগ্রেসের পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও এ ঘটনার পিছনে দলীয় কোন্দলকে দায়ি করেছেন। নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি পুন্ডরীকাক্ষ সাহা বৃহস্পতিবার স্বীকার করে নিয়েছেন, “নিহত যুবক আমাদের সক্রিয় কর্মী। দুঃখজনক হলেও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তারাও দলীয় সমর্থক। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ফুলিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দলীয় স্তরে আলোচনায় বসব। আইন আইনের পথে চলবে।’’

নিজস্ব চিত্র
পুলিশ নিরপেক্ষতা হারিয়ে ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করছে কেন? জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্রের কথায়, “ওই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে টাকার লেনদেন নিয়েই ঝামেলা। তা থেকেই খুন।’’ কিন্তু দলের জেলা সভাপতির কথাতেই তো দলীয় কোন্দল স্পষ্ট? পুলিশ সুপারের কাছে সদুত্তর মেলেনি।
কী হয়েছিল সে দিন?
ফুলিয়ার পরেশনাথপুরে দশমীর সন্ধ্যায় মেলা বসে প্রতি বারই। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ওই দিন সন্ধেয় সরগরম মেলায় আচমকাই গুলির আওয়াজ। দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীপক সরকার (৩৬) নামে স্থানীয় কাঠের কারবারি এক যুবক। খানিক দূরেই পড়ে তার জেঠতুতো ভাই রমেনবাবু। মেলায় ছোটাছুটের মধ্যে থেকে দুই বাইকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, দীপকবাবু মারা গিয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে রমেনবাবুকে। সে রাতেই থানায় পঞ্চায়েত প্রধান রঘুনাথবাবুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দীপকবাবুর পরিবার।
পুলিশ অবশ্য রঘুনাথকে গ্রেফতার করেনি। তাদের সাফাই, ঘটনার সময়ে ফুলিয়ার টাউনশিপ পঞ্চায়েত প্রধান রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন না। পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, রঘুনাথবাবু সেইসময় ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। তবে খুনের ঘটনায় যারা যুক্ত তারা রঘুনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ হলেও হতে পারেন।’’ ওই ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা মেলার পাশেই তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেলও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই খুনের পিছনে রয়েছে রঘুনাথবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন। এ দিন ওই কার্যালয়টিতে তারাই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে নরোত্তম ঘোষ নামে রঘুনাথবাবুর এক ঘনিষ্ঠের বাড়ি। সেখানেও ভাঙচুর চালানো হয় বৃহস্পতিবার সকালে। পুলিশ পরে নরোত্তমকে গ্রেফতার করে।
সিপিএমের শান্তিপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে ফুলিয়া আগুনের উপরে দাঁড়িয়ে আছে।’’ শান্তিপুরের বিধায়ক কংগ্রেসের অজয় দে-ও প্রায় একই সুরে অভিযোগ করেছেন। নিহতের দাদা শিশির সরকার বলেন, ‘‘পুরনো কোন গন্ডগোলের জেরেই ভাইকে খুন করা হয়েছে।’’ কী সেই গন্ডগোল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি জমির দখল নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিবাদ চলছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.