মহাপুজোর মধ্যে ইউরোপিয়ান লিগে মহাঅঘটন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবলে পরপর দু’রাতে হেরে গেল পাঁচ মেগা টিম। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রিয়াল মাদ্রিদ থেকে শুরু করে আগুয়েরোর ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। অস্কারের চেলসি থেকে শুরু করে আর্সেনাল, এসি মিলান। আবার কুড়ি মিনিটের মধ্যে দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও নাটকীয় ৩-২ জিতেছে ওয়েন রুনির ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। আঠারো মিনিটে ০-১ পিছিয়ে পড়ার পরে ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে (৯৪) অভাবনীয় ভাবে ২-১ করে জয় লিও মেসির বার্সেলোনার। আরও তাৎপর্যের, তাঁদের দল জিতুক বা হারুক, মেসি-রোনাল্ডো-রুনি, তিন মহারথীই এই দু’দিনের খেলায় ক্লাব-সমর্থকদের ভোটে ‘ফ্লপ অব দ্য ম্যাচ’! |
আরও একটি গোল হজম। আমস্টারডামে হতাশায় ডুবে ম্যান সিটি। মালাগায় বিধ্বস্ত এসি মিলান। ছবি: এএফপি |
এ বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবলের ‘গ্রুপ অব ডেথ’-এ ম্যাঞ্চেস্টার সিটি (৩ ম্যাচে ১ পয়েন্ট) এই মুহূর্তে খাদের কিনারায়। মানচিনির দল গত রাতে সমীর নাসরির ২২ মিনিটের গোলে ১-০ এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে আয়াখসের কাছে তিন গোল হজম করে ১-৩ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের মুখে। ঘরের মাঠে ডাচ টিমের হয়ে গোল করেন জং, নিকলাস ও এরিকসেন। এই গ্রুপেই রিয়াল অ্যাওয়ে ম্যাচে বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ১-২ গোলে হারলেও মোরিনহোর দল ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্টে মোটামুটি স্বস্তির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে ন’বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের জার্মানির মাটিতে দুঃস্বপ্ন অব্যাহত। জার্মানিতে গিয়ে শেষ ২৪ ম্যাচে রিয়ালের জয় মাত্র একটি। বোরুসিয়াও তাদের ক্লাবের ইতিহাসে এই প্রথম রিয়ালকে হারিয়ে আপাতত গ্রুপে শীর্ষে (৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট)। গত রাতে রোনাল্ডো গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরালেও দ্বিতীয়ার্ধে স্কেমল্জার বোরুসিয়ার পক্ষে ২-১ করেন। প্রথম গোল লেওয়ানডস্কি-র।
আর এক জার্মান টিম শালকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে আর্সেনালকে। ঘরের মাঠে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বিখ্যাত দল আর্সেনাল ম্যাচের শেষ ১৪ মিনিটে দু’গোল খায়। হান্টেলার এবং ইব্রাহিমের কাছে। টমাস মুলারের গোলে বায়ার্ন মিউনিখ ১-০ লিলি-কে হারিয়ে আবার জয়ের সরণিতে ফিরেছে। তবে সাত বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন এসি মিলানের এ বারের জঘন্য ফর্ম গত রাতেও অব্যাহত ছিল। |
হতাশার তিন মুখ: মানচিনি। ওয়েঙ্গার। অ্যানসেলোত্তি। |
স্প্যানিশ টিম মালাগার কাছে মিলান হেরেছে ০-১। গোল করেন জোয়াকুইন। মালাগার ৩ ম্যাচে পুরো ৯ পয়েন্টের দাপটে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পাওয়া এসি মিলান প্রাথমিক পর্ব থেকেই বিদায়ের মুখে। গত বারের ইউরোপ সেরা চেলসিকে ২-১ হারায় শাখতার ডনেস্ক। টেইস্কেরা এবং ফার্নানডিনহো রুশ দলটিকে এগিয়ে দেওয়ার পরে চেলসির হয়ে ৮৮ মিনিটে একমাত্র সান্ত্বনার গোলটি করেন অস্কার। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চেলসি খুব একটা স্বস্তিতে নেই। তাদের গ্রুপে জুভেন্তাসও কোনওক্রমে ভুচিনিচের গোলে ১-১ করেছে ড্যানিশ টিম নর্দসজিল্যান্ডের সঙ্গে।
ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ড কিংবা ন্যু কাম্প কোথাওই গোল পাননি রুনি অথবা মেসি। বরং ব্রাগা-র অ্যালানের জোড়া গোলে ০-২ পিছিয়ে পড়ার পরে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে অভাবনীয় ভাবে জেতান চিচারিতো। ফার্গুসনের দলের প্রথম এবং তৃতীয় গোল মেক্সিকান স্ট্রাইকারের। ২-২ করেছিলেন জনি ইভান্স। আর সেলটিক-এর সামারাসের গোলে ০-১ পিছিয়ে পড়ার পরে বার্সার পক্ষে হাফটাইমের ঠিক আগে সমতা ফেরান ইনিয়েস্তা। চমৎকার ডিফেন্সিভ ট্যাকটিক্সে মেসিকে আটকে দিয়ে সেলটিক যখন ম্যাচ প্রায় ড্র করে ফেলেছে, তখন খেলার ৯৪ মিনিটে খোর্দি আলবা বার্সার পক্ষে ২-১ করে তিতো ভিলানোভার মুখে হাসি ফোটান। বার্সা কোচের মুখে আলো থাকলেও রিয়াল কোচ মোরিনহো আর ম্যান সিটি বস মানচিনি মুখে কালো মেঘ নিয়ে বলছেন, “খুব কঠিন ম্যাচের জন্য খুব খারাপ ভাবে ছেলেদের তৈরি করেছিলাম।” |