বৃদ্ধির গতি ফেরাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে ডাক প্রধানমন্ত্রীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এক দিকে জোরদার সংস্কারের দৌড়। অন্য দিকে, অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে উৎপাদন শিল্পকে চাঙ্গা করার মাধ্যমে নতুন রক্ত সঞ্চার। ঝিমিয়ে পড়া বৃদ্ধির গতিকে ফের ৮-৮.৫ শতাংশে নিয়ে যেতে এই জোড়া কৌশলেই ভর করছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বিলক্ষণ বুঝছেন, শুধু সংস্কারে বৃদ্ধির চিঁড়ে ভিজবে না। এর জন্য উৎপাদন শিল্পে প্রাণ ফেরানোও জরুরি। এবং সেই কারণেই এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে আহ্বান জানালেন তিনি।
বর্তমানে বাজারের যা হাল, তাতে সংস্কারের এক গুচ্ছ ঘোষণার পরও টাকা ঢালতে ভরসা পাচ্ছেন না শিল্পপতিরা। বিদেশি লগ্নিরও যে লম্বা লাইন চোখে পড়ছে, এমনটা নয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কিছুটা হলেও একটা জায়গা তৈরি করে দিতে পারে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
এ নিয়ে কৌশল নির্ধারণের লক্ষ্যে এ বার উৎসবের মরসুমের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ডেকে নিয়েছিলেন ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের। ছিলেন অর্থমন্ত্রী, ভারী শিল্পমন্ত্রী ও যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যানও।
প্রধানমন্ত্রীর মতে, আর্থিক বৃদ্ধি ফের ৮-৮.৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার জন্য লগ্নির হার ৩৬-৩৭% হওয়া উচিত। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্যই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন তিনি।
মনমোহনের যুক্তি, বিশ্ব বাজারে চাহিদার ঘাটতি পূরণ করতে পারে চাঙ্গা দেশীয় বাজার। যা টেনে আনবে বিদেশি লগ্নিকে। আর ঠিক সেখানেই প্রাসঙ্গিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ভূমিকা।
বস্তুত, দ্বিতীয় দফার সংস্কার পর্বকে স্বাগত জানালেও শিল্পের আস্থা তেমন বাড়তে দেখা যায়নি এখনও। লগ্নির পারদ এখনও নিম্নমুখী। রফতানি বাজারও পড়তির দিকে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যত্র যা-ই ঘটুক, ভারতকে অন্তত নিজের বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে সক্রিয় এবং প্রসাঙ্গিক ভূমিকা নিতে হবে বলে তাঁর অভিমত। কারণ, মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৬% আসে তাদের হাত ধরে। সম্মিলিত লাভের অঙ্ক প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা। গুরুত্ব রয়েছে কর্মসংস্থানের নিরিখে। বাজারের শেয়ারের মোট মূল্যের সিংহভাগও তাদেরই দখলে। তাই প্রধানমন্ত্রী চান, যে বিপুল উদ্বৃত্ত নগদ সংস্থাগুলির হাতে রয়েছে, চাহিদা ও কর্মসংস্থান বাড়াতে তা লগ্নি করুক তারা। একই আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজনও।
তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে সতর্কও করেছেন মনমোহন। বলেছেন, প্রতিযোগিতায় টিকতে দক্ষতা বাড়াতে হবে। টক্কর দিতে হবে বেসরকারি ও বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে। |