পারিবারিক বিবাদের জেরে বাইরে থেকে শেকল তুলে ঘরে কেরোসিন ঢেলে ৯ মাসের শিশুকন্যা-সহ এক বধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯ টা নাগাদ ইংরেজবাজার থানার কোতুয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের চকবন্দিপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। বধূর স্বামীও অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গৃহবধূর ভাসুর, দেওর সহ ৩ জনকে গ্রেফতার পুলিশ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম সাবিত্রী পাহাড়ি (৩০), পূর্ণিমা পাহাড়ি (৯ মাস)। জখম ব্যক্তির নাম বিজয় পাহাড়ি। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “রাতের বেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, ওই পরিবারের সকলে ঘুমন্ত ছিল। সেই সময়ে আগুন ধরানো হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বধূর মায়ের অভিযোগ পেয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” |
মৃত গৃহবধূ সাবিত্রীর মা কৌশল্যাদেবীর সন্দেহ, তাঁর মেয়ে ও নাতনিকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পুড়িয়ে মেরেছেন। তাঁর অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকেই মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ওর উপরে অত্যাচার করত। ওই রাতে ওদের ঘরের দরজার শেকল বাইরে থেকে তুলে দিয়ে মেয়ের ভাসুর ও দেওররা ঘরে ভিতরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আমার মেয়ে ও নাতনিকে পুড়িয়ে মেরেছে।” একই বাড়িতে বিজয় পাহাড়িরা তিনভাই আলাদা আলাদা থাকেন। সকলেই পেশায় দিনমজুর। একটি চাটাইয়ের ঘরে থাকতেন বিজয়রা। পাশেই তৈরি হচ্ছে ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকায় বিজয়ের ঘর। সেখানে দরজা-জানলা লাগানোর কাজ শেষ হলেই স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে গৃহপ্রবেশ করতেন বিজয়। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হল না। প্রতিবেশী গীতা পাহাড়ি, সুমনা পাহাড়িরা জানান, রাতে চিৎকার শুনে বাইরে বার হয়ে দেখেন বিজয় পাহাড়ির ঘর থেকে ধোঁয়া বার হচ্ছে। বাসিন্দারা জল ঢালতে শুরু করেন। দরজা ভেঙে অগ্নিদগ্ধ তিনজনকে বার করা হয়। এর পরে ৩ জনকে ভ্যান রিকশা করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মা ও শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তবে ধৃত দুই ছেলে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন তাঁদের মা নত দেবী। তাঁর দাবি, “আগুন লাগার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। বাড়ির পাশেই এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলাম। চিৎকার শুনে আমিও ছুটে এসেছিলাম। আমার ছেলেরা কেউ আগুন লাগায়নি ঘরের ভিতরে কূপির আগুন থেকেই ছোট ছেলের ঘরে আগুন লেগেছে।” |