আনন্দ লুঠতে তৈরি অযোধ্যা
চার বছরের জমানো খুশি যেন এ বার অযোধ্যা পাহাড়ের হিলটপে বাঁধ ভাঙতে চলেছে। পুজোর চার দিন তা ছড়িয়ে পড়বে উসুলডুংরি, ছতরাজেরা, ছাতনি, পুনিয়াশাসনের মতো ৬৫টি গ্রামে। গত কয়েক বছর ধরে ওই গ্রামগুলির আনন্দ, উচ্ছ্বাস চাপ পড়ে গিয়েছিল মাওবাদী হানা ও যৌথবাহিনীর তল্লাশিতে।
এ বার তাই হিলটপের পুজো মণ্ডপে চার দিন ধরে নেচে-গেয়ে আমোদ করে সে সব উসুল করে নিতে চান পাহাড়বাসীরা। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অখিল সিংহসর্দারের কথায়, “অশান্তির জন্য গত কয়েক বছর ধরে পুজোটাই কেমন ফিকে হয়ে গিয়েছিল। এ বার তাই ভরপুর আনন্দের আয়োজন করেছি।” কী থাকছে? ফুটবল টুর্নামেন্ট। ২৪টা দল নাম লেখানোর পরে আরও অনেকে খেলতে চেয়েছিল। তাঁদের না বলে দেওয়া হয়েছে। নবমীর রাতে ঝুমুর ও স্থানীয় লোক-সংস্কৃতির অনুষ্ঠান ওস্তাদি গানের আসর নিয়ে এখন থেকেই মাতামাতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া মোরগ লড়াই ও সাঁওতালি নাটকের প্রতিযোগিতাও থাকছে। নাটকে বাইরে দল তো আসছেই, স্থানীয় ছেলেরাও মহড়ায় ব্যস্ত। সপ্তমীর সকালে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামের মহিলারা দলবেঁধে মাঝিবাঁধ থেকে কলাবৌ স্নান করিয়ে কলসি মাথায় মণ্ডপে আসবেন। অশান্তির কালো মেঘটাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পাহাড়ের সবাই যেন তেঁড়েফুড়ে আসরে নেমে পড়েছেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের উৎসাহে অযোধ্যা পাহাড়ের বাসিন্দারা ধান বেচে ৩৩ বছর আগে এই পুজোর শুরু করেছিলেন। অ্যাসবেসটসের ছাউনির নীচে নিরাড়ম্বর পুজো হত। কিন্তু ২০০৭-০৮ সাল থেকে পড়ে পাওয়া সেই চৌদ্দ আনা খুশিও উবে গিয়েছিল। বাসিন্দারাই জানান, আগে অনেক রাত পর্যন্ত মণ্ডপ চত্বরে ভিড় থাকত। কিন্ত ওই অশান্ত সময়ে সূর্য ডুবলেই মণ্ডপ প্রায় ফাঁকা হয়ে যেত। “সর্বক্ষণ আতঙ্কের সঙ্গে ঘর করলে কি মনে শান্তি থাকে?”প্রশ্ন ছুঁড়লেন পুজোর অন্য এক উদ্যোক্তা হিরালাল লায়া। তাঁর কথায়, “তাই ওই ক’বছর নমঃ নমঃ করে পুজো সেরেছি।” গত এক বছরে ছবিটা বদলেছে। এখন সন্ধ্যার পরেও হিলটপ মোড়ে দোকানগুলোর সামনে জটলা থাকে। পাহাড় থেকে বাস চলছে। যেন অনেক দিন ধরে বন্ধ থাকা ঘরের জানলাটা খুলে গিয়েছে। বাইরের আলো, হাওয়া এসে ঘরের ভিতর লুটোপুটি খাচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.