পড়াশোনা...
বইবোধন

জোসেফ অ্যান্টন
লেখক: সলমন রুশদি

কেন পড়ব:
এটি রুশদির স্মৃতিকথা। ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট খোমেইনি তাঁকে খুন করার ফতোয়া দেন। লেখককে অজ্ঞাতবাসে থাকতে হয়। সেই সময়েই তাঁর দুই প্রিয় লেখক জোসেফ কনরাড ও আন্তন চেখভের নাম মিলিয়ে ওই ছদ্মনাম। নয় বছর কী ভাবে অজ্ঞাতবাসে কাটালেন তিনি? তারই মধ্যে কী ভাবে বিয়ে ভাঙল? তৈরি হল নতুন দাম্পত্য? এবং ভারতই প্রথম দেশ, যে ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করেছিল। ফলে, এখানে এই বই পড়ার আগ্রহ তুঙ্গে।

বইতে কী আছে:
প্রায় স্পাই থ্রিলার। ফতোয়ার প্রথম তিন বছর ব্রিটেনেই লুকিয়ে ছিলেন রুশদি। তার পর এক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতার অনুমতি দেওয়া হল তাঁকে। একটি ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান রুশদিকে নিয়ে অতলান্তিক মহাসাগর পেরল। হিথরো থেকে ডালাস! সেখান থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়। বক্তৃতা শেষের পর আর অপেক্ষা নয়। ফের ওই ভাবে ফিরে আসা। চেনা অনেক চরিত্র ভিড় করেছে এই স্মৃতিকথায়। নোবেলজয়ী গুন্টার গ্রাস, মারিও ভার্গাস হোসা থেকে ফিলিপ রথ অনেকেই। মুম্বইয়ে রুশদির জন্ম, সেখান থেকে বিলেতের রাগবি স্কুলে পড়তে যাওয়া, তারপর কেম্ব্রিজ, ওগিলভি অ্যান্ড মাথারে কপিরাইটারের চাকরি, পকেটে সামান্য টাকা নিয়ে জন্মভূমি ভারতে আসা...সব অভিজ্ঞতার বিশদ বিবরণ। সে বার ভারত ঘোরার অভিজ্ঞতা থেকেই তো রুশদির ‘বুকার অব বুকার’জয়ী উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিল্ড্রেন’। ভারতীয় ইংরেজি সাহিত্যের উল্লেখ্য যতিচিহ্ন। দীপা মেটার পরিচালনায় এই বছরের শেষেই রিলিজ করছে ‘মিডনাইটস চিল্ড্রেন’। তার আগে লেখকের জীবনের এই প্রেশার কুকারের খবর মন্দ কি?

পাঠকেরা কী বলছেন:
‘নিষ্ঠুর রকম সৎ জবানবন্দি’, বলছেন অনেকে। কারও কারও মতে, রুশদি যে কাজটি ভাল পারেন, এই বই তার উদাহরণ। নিজের ঢাক নিজে পেটানো! দ্বিতীয়া স্ত্রী মারিয়ান উইগিন্সকে প্রায় চৌর্যবৃত্তির অপবাদ দিয়েছেন। ঘুরিয়ে মিথ্যেবাদী বলেছেন খুশবন্ত সিংহকে। আবার র্যান্ডম হাউস প্রকাশনার অন্যতম সম্পাদক সোনি মেটার সঙ্গে ঝগড়ার কথাও গোপন করেননি।

ফিফটি শেড্স অব গ্রে
লেখক: ই এল জেম্স

কেন পড়ব:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাইম পত্রিকার যে সংখ্যায় ‘বিশ্বের ১০০ জন ক্ষমতাশালী’র তালিকায় ছিলেন, সেই তালিকাতেই ছিলেন ৪৯ বছরের ব্রিটিশ লেখিকা এরিকা লিওনার্ড জেম্স। প্রকাশনা জগতের বাঁধা ছক ভেঙে দিয়েছে এই বই। জেম্স এই উপন্যাস লিখেছিলেন fiftyshades.com নামে একটি ওয়েবসাইটে। ওয়েব এবং ‘আমাজন কিন্ডলে’তে সেই ই-বই এত সাড়া জাগায় যে, ছেপে বের করতে হয়। আমাজন কিন্ডলে জানিয়েছিল, তাদের সাইটে হ্যারি পটারের চেয়েও এই বইয়ের বিক্রি বেশি। চাহিদার দাপটে ই-বই থেকে ছাপা বই। বইবাজারে জনপ্রিয়তার নতুন রেকর্ড।

বইতে কী আছে:
দুরন্ত গতির এক সফ্ট পর্নো। ২২ বছরের কলেজ-কন্যা আনা স্টিল দেখা করতে গিয়েছে ২৭ বছরের শিল্পপতি ক্রিস্টিয়ান গ্রে-র সঙ্গে। ক্রিস্টিয়ান সুপুরুষ এবং স্পষ্টভাষী, হৃদয়-ফুল-পাখি মার্কা ছেঁদো কথায় বিশ্বাস করে না। গ্রে হেলিকপ্টারে উড়িয়ে আনাকে তার বাড়ি নিয়ে যায়। একটা ঘরে বোঝাই সেক্স-টয়। BDSM-এ বিশ্বাসী ক্রিস্টিয়ান। Bondage (বাঁধন), Discipline (নিয়মানুবর্তিতা), Sadism (ধর্ষকাম) আর Masochism (মর্ষকাম)-এর যৌনতাতেই তার আনন্দ। ‘I want to f*** your mouth,’ আনাকে নির্দেশ দেয় গ্রে। বারংবার রতিক্রীড়ায় মাতে তারা। কিন্তু গ্রে-র শর্ত, আনাকে চুক্তিপত্রে সই করতে হবে। গ্রে-র প্রভুত্ব মেনে নেওয়ার চুক্তিপত্র। আনা দেহমিলনে আনন্দ পায়, কিন্তু চুক্তির সব শর্ত মানতে পারে না। সে ব্রেকফাস্টে কী খাবে, সেটিও চুক্তিপত্রে লিখেছে গ্রে। BDSM সম্পর্ক কত দূর যেতে পারে, পরখ করতে গ্রে-কে তার ওপর শরীরী অত্যাচার চালাতে বলে আনা। গ্রে চাবুক নিয়ে ফটাফট পেটায় তাকে। বিধ্বস্ত আনা বুঝতে পারে, ক্রিস্টিয়ান গ্রে ছাড়া তার জীবন অসম্পূর্ণ।

পাঠকেরা কী বলছেন:
কিশোরী কন্যাদের পাশাপাশি তিরিশোর্দ্ধ মহিলারাই নাকি এই বইয়ের প্রধান পাঠক। ফলে একে বলা হচ্ছে ‘মমি’জ পর্নো।’ নারীবাদীরা স্বভাবতই বিরক্ত। মেয়েরাই কেন অত্যাচার সহ্য করবে গোছের প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। কিছু তাত্ত্বিক আবার এই বইয়ের জনপ্রিয়তায় নারী স্বাধীনতার জয়ধ্বনি শুনেছেন। সেক্স টয়ের যুগে ফিফটি শেডস-এর জনপ্রিয়তা বুঝিয়েছে, চলতি কাঠামোর বাইরে ই-বইয়ে কী ভাবে পর্নোগ্রাফি পড়ার আনন্দ খুঁজে নিচ্ছেন মেয়েরা।

দ্য ক্যাজুয়াল ভ্যাকেন্সি
লেখক: জে কে রোওলিং

কেন পড়ব:
হ্যারি পটার সিরিজের পর রোওলিং-এর বই। ফলে সারা দুনিয়া জুড়ে আগ্রহ।

বইতে কী আছে:
কোনও উইজার্ড, হগওয়ার্টস স্কুল বা ঝাঁটায় চড়ে কুইডিচ খেলা নেই। বরং মাদকাসক্তি, টিন-এজ সেক্স, যৌন হতাশা, ধর্ষণ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ইত্যাদি নিয়ে অন্ধকার এক দুনিয়া। F দিয়ে চার অক্ষরের শব্দ, ‘the miraculously unguarded vagina’ ইত্যাদি শব্দবন্ধ সারা বইয়ে ছড়িয়ে। পাগফোর্ড এক ছোট্ট শহর। বইয়ের শুরুতেই সেখানকার স্থানীয় কাউন্সিলার ব্যারি ফেয়ারওয়েদার আচমকা হৃদরোগে মারা যান। ফলে কাউন্সিলে পুননির্বাচন, তৈরি হয়েছে এক ‘ক্যাজুয়াল ভেকেন্সি’। কে জিতবে? ছোট শহরে সকলে সকলকে জানে, তবু অনেকেই পিছন থেকে একে অন্যকে ছুরি মারায় ব্যস্ত। আর রোওলিং-এর চরিত্র তৈরি! ফেয়ারওয়েদার গল্ফ ক্লাবে আচমকা সেরিব্রাল অ্যাটাকে মারা যান। সামান্থা আর তার স্বামী মাইল্স ছুটে আসে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সব শেষ। পরদিন মাইল্স ফোনে অন্যদের সেই মৃত্যুর ঘটনা জানায়। সামান্থা ভাবে, ঘটনাটা সে আগে জেনেছে। ফলে মৃত্যু নিয়ে রসালো গল্প করার অধিকার তার আছে। সব মিলিয়ে অন্ধকার এক দুনিয়া।

পাঠকেরা কী বলছেন:
কারও কারও ভাল লেগেছে। তবে অনেকেই বলছেন, হ্যারি পটারের মতো নয়। গল্পে একটি শিখ পরিবার আছে। ফলে শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি জানিয়েছিল, আপত্তিকর কিছু থাকলে বইটি তারা ভারতে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করবে। কিন্তু রোওলিং জানিয়েছেন, তিনি শিখ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। শিখ পাঠকেরাও জানিয়েছেন, রোওলিং তাঁদের নিয়ে আপত্তিকর কিছু লেখেননি। বরং ব্রিটেনে শিখদের যে চোরাগোপ্তা জাতিদ্বেষ সহ্য করতে হয়, তাকেই তুলে ধরেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.