‘মাঙ্কিগেট’-এর বদলা নেওয়ার সুযোগ পেয়েই গিয়েছেন যখন, তখন আর ছাড়েন? সচিন তেন্ডুলকরকে অস্ট্রেলিয়ার সরকারি সম্মান দেওয়ার প্রশ্নে রীতিমতো টি-টোয়েন্টি স্টাইলে শুরু থেকেই ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করে দিলেন ম্যাথু হেডেন। সচিনের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, “ওকে প্রধানমন্ত্রী করে দিলেও কিছু বলার ছিল না।”
যে ভাবে ব্যাট করতেন, সে ভাবেই একটার পর একটা ছক্কা হাঁকিয়েছেন এক অস্ট্রেলীয় রেডিও ইন্টারভিউয়ে। যা বলেছেন, তার মোদ্দা বক্তব্য হল, সচিন যেহেতু অস্ট্রেলীয় নন এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে তাঁর বিন্দুমাত্র অবদান নেই, বরং যত বার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নেমেছেন তত বারই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নেমেছেন, তাই তাঁকে ‘অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’ সম্মান দেওয়ার কোনও যুক্তিই নেই। সচিনবিরোধী এমন মত কয়েক দিন ধরে সমানে ভেসে বেড়াচ্ছে সারা বিশ্বের বহু সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে। বেশির ভাগই আসছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। কিন্তু এ বার যেহেতু বক্তার নাম ম্যাথু হেডেন, তাই হেডেনের মন্তব্য ফলাও করে ছাপা হয়েছে প্রায় সব কাগজেই। এই ইস্যুতে সরকারকে তুলোধোনা করার একটা ছুতোও পেয়ে গিয়েছে তারা।
মাঠে হেডেনের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সম্পর্ক যে ভাল, এমন কথা কখনওই বলা যায় না। বিশেষ করে ‘মাঙ্কিগেট’ কেলেঙ্কারির পর থেকে সম্পর্কটা যে আরও ‘বিষাক্ত’ হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ২০০৮-এ ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরের পর হরভজন সিংহকে ‘পরগাছা’ বলেও সারা ক্রিকেট দুনিয়ায় ঝড় তুলে দিয়েছিলেন তিনি। এ বার সচিনকে ‘অর্ডার অফ অস্ট্রেলিয়া’ সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্তের সরাসরি বিরোধিতা করে প্রাক্তন তারকা ফের আর এক ঝড় তোলার চেষ্টায়। তাঁর মতে, এই সম্মান শুধু অস্ট্রেলীয়দেরই দেওয়া উচিত, বিদেশি কাউকে নয়। হেডেন নিজেও এই সম্মান পেয়েছেন ২০১০-এ। রেডিও শো-এ তিনি মন্তব্য করেন, “আমাদের দেশে কিছু কিছু ব্যাপার আছে, যেগুলো সত্যিই অদ্ভুত। জানি সচিন আমাদের দেশের মানুষের কাছেও বেশ জনপ্রিয় ও আদর্শ এবং অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী ভারতীয়ের সংখ্যাও প্রচুর। এটা আমাদের দেশের মানুষের সংস্কৃতি যে, আমরা সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পছন্দ করি। সচিন যদি আমাদের দেশে থাকত, তা হলে ওকে প্রধানমন্ত্রী করা হলেও আমার কিছু বলার ছিল না। কিন্তু ও তো আমাদের দেশে থাকে না। অস্ট্রেলীয়ও নয়।” তবে যখন ব্রায়ান লারাকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছিল, তখন কিন্তু হেডেনরা এমন প্রশ্ন তোলেননি। ভারতের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরাবজিকে এই সম্মান জানানোর সময়ও কেউ কোনও প্রশ্ন তোলেননি। সচিন তেন্ডুলকর বলেই কি এই প্রতিক্রিয়া অস্ট্রেলিয়ার? |