...উৎসবের আলো
বাড়ি-ধারা
ধাড়সার দে বাড়ি
পূর্বপুরুষ গোবিন্দমোহন দে ঢাকায় এই পুজোর প্রচলন করেন। শতাধিক বছরের প্রাচীন এই পুজো। পরে ঢাকা থেকে তাঁর পুত্র গোষ্ঠবিহারী দে প্রথমে কলকাতার বৈঠকখানা রোডে এবং পরে হাওড়ার ধাড়সায় চলে আসেন, পুজোও আরম্ভ করেন। গোষ্ঠবিহারী কয়লা ও কাঠ ব্যবসায়ী ছিলেন। দে বাড়ির পুজোয় নবমীর দিন কুমারী পুজো হয়। মহিলারা ধুনো পোড়ান।

রামরাজাতলার চক্রবর্তী বাড়ি
রামরাজাতলার চক্রবর্তী বাড়ি
রামরাজাতলার ষষ্ঠীতলার পণ্ডিত মুরারিমোহন চক্রবর্তীর বাড়িতে দেবী দুর্গা কাত্যায়নী নামে পূজিতা হন। বাড়ির লাগোয়া মন্দিরে আছে দেবী কাত্যায়নীর অষ্টধাতুর মূর্তি। কাত্যায়নী দেবী আসলে বাংলাদেশের বিক্রমপুরের জমিদার রামপ্রসাদ দাম সরকারের কুলদেবী ছিলেন। বৃন্দাবনে বেড়াতে গিয়ে একটি মন্দিরে কাত্যায়নী দুর্গার মূর্তি দেখে সেটি পছন্দ হয়ে যায় রামপ্রসাদ দাম সরকারের। সেখানেই একই রকম অষ্টধাতুর মূর্তি গড়িয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করেন। পরিবারের সদস্য বিভাস চক্রবর্তী জানালেন, তার আগেও ৩৫০ বছর ধরে চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। আগে মাটির চতর্ভুজা
প্রতিমা হত।

শিবপুরের সাহা বাড়ি
শিবপুরের গোপাল সাহা লেনের সাহা বাড়ির পুজো এ বার ১০৫ বছরে পদার্পণ করল। ব্যবসায়ী নেপালচন্দ্র সাহা এই পুজোর সূচনা করেন। একচালা বাংলারীতির প্রতিমা। প্রতিমার ডাকের সাজ। মহালয়ার পরে প্রতিপদে ঘটস্থাপন হয়। সেই দিন থেকে চণ্ডীপাঠ হয়। আগে দেবীকে ২২ মণ চলের নৈবেদ্য দেওয়া হলেও এখন দেওয়া হয় ৫ মণ।

দাশনগরের চক্রবর্তী বাড়ি
দাশনগরের চক্রবর্তী বাড়ি
১৭৬ বছরের পুজো। পণ্ডিত দীননাথ চক্রবর্তী আমতার জয়পুরে পুজোর সূচনা করেন। তাঁর পুত্র শঙ্কর চক্রবর্তী বর্তমানে দাশনগরে এই পুজো করছেন। আগে অতসী পুষ্পবর্ণ টানা চোখের দশভুজা মূর্তি ছিল। স্বপ্নাদেশ পেয়ে গত দু’ বছর ধরে দ্বিভুজা মূর্তি হচ্ছে বলে জানালেন পরিবারের এক সদস্য। মহিষাসুর নেই। দুর্গা সিংহের পিঠে অধিষ্ঠাত্রী বরাভয়া অভয়া রূপে বিরাজমান। দু’বছর আগে দেবীকে অস্ত্র পরাতে গিয়ে হাত ভেঙে যায়। তার পরে দেবীকে অস্ত্র পরানো হয় না। এখানে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। শুক্লা প্রতিপদ থেকে দশমী পর্যন্ত চণ্ডীপাঠ ও পুজো হয়। সকালে আখের দাঁতন দিয়ে ও কর্পূর মেশানো গরম জল দিয়ে দেবীকে মুখ ধোয়ানো হয়। তার পরে ছোলা, বাদাম, মিছরি ও মাখন দিয়ে বাল্যভোগ হয়। তার পরে স্নান করানো হয়।

জগাছার ঘোষবাড়ি
বাড়ির লাগোয়া মন্দিরে অষ্টধাতুর হরপার্বতীর মূর্তি আছে। জমিদার নিবারণচন্দ্র ঘোষ এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা। শতবর্ষের অধিক প্রাচীন এই দুর্গাপুজো। মূল মন্দিরের সামনে নাটমন্দির। আগে খুব ধুমধাম করে পুজো হত। যাত্রাগান হত। প্রচুর লোক খাওয়ানো হত, হরগৌরীর মূর্তি প্রথমে সোনার ছিল। ১৯৬০ সালে সেই মূর্তি চুরি হয়ে যাওয়ায় অষ্টধাতুর মূর্তির প্রতিষ্ঠা হয়।

শিবপুরের দেবনাথ বাড়ি
চ্যাটার্জিহাটের দেবনাথ বাড়ির দুর্গাপুজো ৮০ বছরের বেশি প্রাচীন। মুক্তারাম দেবনাথ এই পুজোর সূচনা করেন। পুজোর চার দিনই দেবীকে অন্নভোগ দেওয়া হয়। নবমীতে ভাত, শুক্তো, সাত আট রকমের ভাজা, পায়েস, পলতার ডালনা ও জলপাইয়ের চাটনি ভোগ দেওয়া হয়। এখানে ঘট বিসর্জন হয় না। বলিদান হয় না।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.