গ্রামের মধ্যে এক টুকরো গ্রাম। এই ছোট গ্রাম তৈরি করতে সাড়ে তিন মাস ধরে পরিশ্রম করতে হয়েছে দিনরাত। পূর্বস্থলীর দক্ষিণ শ্রীরামপুর এলাকায় আমরা সবাইয়ের মণ্ডপে এ বার নকল জিনিসের ঠাঁই নেই। দেখা মিলবে আসল ধানখেত, আসল বাগান, আস গরুর গাড়ি, মড়াই, ঢেঁকির।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের এই ক্লাবটি বরাবরই ধুমধাম করে পুজো করে। উৎসব উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান ও বাজির প্রদর্শনী হয়। পুজো কমিটির সদস্যেরা এ বার তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, মণ্ডপে বৈচিত্র্য আনা হবে। থিম ভেবে বের করে নিজেরাই তা গড়ে তুলবেন বলে ঠিক করা হয়। কমিটির সদস্যেরা জানান, ১৯৪৬ সাল নাগাদ তৎকালীন পূর্ববঙ্গ থেকে কিছু মানুষজন এসে এই এলাকায় বসবাস গড়ে তুলেছিলেন। এলাকার প্রবীণেরা এখনও ও পার বাংলার দুর্গাপুজোর স্মৃতিচারণ করেন। আর তা শুনেই মণ্ডপে এক টুকরো গ্রাম বাংলা গড়ে তোলার কথা মাথায় আসে, জানালেন পুজো কমিটির লোকজন। |
মণ্ডপের মধ্যে বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে সবুজ ধানখেত। খেত পেরিয়ে বাঁশের সেতু। তার নীচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে নদী। সেতুর কাছেই খড় ও পাটকাঠি দিয়ে তৈরি মণ্ডপ। বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। রয়েছে ৪০টি হ্যারিকেন। আশপাশে কিছু বাড়ির চালে কুমড়োর মাচা। রয়েছে কাশের বন। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে কুলো, পাখা, খড়, রুদ্রাক্ষ, বাঁশের টুপি-সহ নানা সামগ্রী। প্রধান শিল্পী সঞ্জয় মজুমদার বলেন, “সাড়ে তিন মাস আগে থেকে ধানচাষ শুরু করা হয়। তখন থেকে প্রস্তুতি চলছে।” ক্লাবের সদস্য বিকাশ সরকার, তুষার দাসেরা বলেন, “এই সব সামগ্রী আসল না নকল, তা নিয়েই ধন্দে পড়ে যাবেন দর্শনার্থীরা।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দিলীপ মল্লিকের কথায়, “এলাকার ছেলেদের নিজের হাতে গড়া মণ্ডপ দেখে এরই মধ্যে গ্রামের লোকজন অভিভূত।” |