এ যেন অন্য-পুজোর প্রতিযোগিতা। নাকি বলা ভাল ‘পেট-পুজো’র লড়াই! কারও হাতিয়ার ধোঁয়া ওঠা ‘পমফ্রেট ফ্রাই’। কেউ ভেটকি-চিংড়ি রকমারি রসনায় মাত করতে চান ভোজনরসিকদের। কেউ আবার লাল মুর্গির ঝোলের সঙ্গে রাখছেন লইট্যা শুঁটকির পদ। কারও হাতিয়ার নিরামিষ। হিলকার্ট রোড, বিধান রোড, সেবক রোড, সর্বত্রই শেষ মুহূর্তে নয়া রেসিপি নিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। হিলকার্ট রোডে সেবক মোড় পেরিয়ে বাঁ হাতে দোতলায় আদ্যোপান্ত বাঙালিয়ানার ভরপুর রেস্তোরাঁটির কথা ধরা যাক। সেখানে ডাব-চিংড়ি থেকে শুক্তো, বাঙালির হেঁসেলের চিরাচরিত যাবতীয় পদ নতুন রেসিপিতে হাজির করানোর প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। রেস্তোরাঁর অন্যতম কর্ণধার সংহিতা মৌলিক পুজোর জন্য খেটেখুটে কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছেন মেনুতে। যেমন, কাঁচালঙ্কা-ধনেপাতা-মুরগির পদ কিংবা দই-সর্ষে-পমফ্রেট। রয়েছে চিরাচরিত ভেটকি পাতুড়ি। আরও আছে কাঁকড়ার ঝাল। একসময়ে ওই রেস্তোরাঁ ছিল সেবক রোডে। বেশ কিছুদিন আগে হিলকার্ট রোডে তা স্থানান্তরিত হয়। সংহিতা মৌলিকের কথায়, “আমাদের মেনুর নামটাই হল ‘পেট পুজো’। পুজোর কটা দিনের কথা মাথায় রেখেই নয়া রেসিপি রাখা হয়েছে। ইলিশ, পমফ্রেট-চিতলের নানা পদ যেমন রয়েছে। তেমনই কাঁকড়া, লইট্যা শুঁটকির পদও রাখা হয়েছে।” এর বাইরেও ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত একেক দিন থাকবে অভিনব কিছু আমিষ-নিরামিষ পদ। হিলকার্ট রোডের হাসমি চকের অদূরে কলকাতার এক ফুড চেনের তরফে এলাহি আয়োজন। একনজরে মেনুটা জানালেন ফুড চেনের শিলিগুড়ি শাখার ম্যানেজার চিত্তরঞ্জন পাল। তা হল, কড়াইশুটি-নারকেল দিয়ে মুগ ডাল, পোস্ত বড়া, মোচা ঘণ্ট, ইলিশ, চিংড়ি, ভেটকি, পাঁঠার ঝোল। মেনু শুক্তো, দই পটল, ভেটকি পাতুড়ি, দই দিয়ে তৈরি পাঠার ঝাল. পাবদা, চিংড়ির মালাইকারি, বাসন্তী পোলাও, পুরোনো আমলের বনবাংলো বা সরকারি অথিতিশালায় যে ভাবে তেলে-ঝালে মাংস রান্না হতো তেমন রেসিপিতে তৈরি মটন ডাকবাংলো, আর বরিশালের ঘরানায় তৈরি ইলিশ বরিশালি। জলপাইগুড়ির কদমতলার একটি অভিজাত হোটেলে বোরোলির ঝোল আর ভাজা। এ বারের আকর্ষণ হায়দরাবাদী মেনুর সঙ্গে বাঙালি মেনুর ককটেল। পাঁঠার মাংসের হায়দরাবাদি ভুনা গোস্ত, হায়দরাবাদি বিরিয়ানি, আড়মাছ, চিংড়ি, ডিম আর চিকেন দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ বিরিয়ানি পাওয়া যাবে। গাজর কা হালুয়া. কাশ্মিরী পোলাও, কাজুর পোলাওকে সঙ্গ দিতে থাকবে হরেক রকম তন্দুরি মেনু। রয়েছে সেই পরিচিত সর্ষে ইলিশ, আড়ের ঝাল, চিঙড়ির কয়েকটি পদ। ওই হোটেলের ম্যানেজার অরূপ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “এবারের পুজোয় আমাদের থিম হল হায়দরাবাদ আর বাংলার মেলবন্ধন। হায়দরাবাদ থেকে শেফদের একটি দল পুজোর আগেই চলে এসেছে জলপাইগুড়িতে। আর বাঙালি রান্নার জন্য কলকাতা থেকে আসছেন নামী রাঁধুনি। জলপাইগুড়ির থানা মোড়ের একটি হোটেলে মাছের নানা পদ পাওয়া যাবে, ক্লাব রোডের হোটেলে চাইনিজ সহ নানা মেনু, শহর লাগোয়া ধাবায় তন্দুরির এলাহি আয়োজন। ষষ্ঠী থেকে দশমী। শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির হোটেলেও পুজোর কদিন স্পেশাল মেনু। আড়াই মাইলের হোটেলে নিরামিষের ‘বুফে’। |