অন্ধকার ফুঁড়ে তুলে আনে পদ্ম
ঘুটঘুটে অন্ধকার। জলাশয়ের মাঝখান থেকে চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েকটা টর্চের আলো। ঘণ্টাখানেক পরে ভেলা পাড়ে আসতেই দেখা গেল, পদ্মফুলে ভরে গিয়েছে। আর মুখে তৃপ্তির হাসি রঞ্জিত, সুভাষদের।
কাশীপুর, হুড়া, জয়পুর-সহ পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন জলাশয় থেকে এখন পদ্মফুল তোলায় ব্যস্ত ওঁরা। রাত জেগে তাঁদের তোলা পদ্ম ফুল ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলার ফুল বাজারে। দুর্গাপুজোর সময় পুজো কমিটির কর্মকতারাও সরাসরি ফুল কিনতে তাঁদের কাছে আসেন। তাই এখন কার্যত দম ফেলার ফুরসত নেই ওঁদের। কারণ পদ্ম বিনা যে দেবীর আরাধনা হবে না। পদ্মের এই উত্তুঙ্গ চাহিদার জন্য বছরের মধ্যে শুধু এই সময়েই তাঁদের কিছু রোজগার হয়। রঞ্জিত, সুভাষবাবুদের কথায়, “আমাদের অধিকাংশেরই চাষের জমি নেই। যে সময় পদ্মফুল হয় না, তখন খালে-বিলে মাছ ধরে সংসার চালাতে হয়।” তবে এ কাজেও ঝুঁকিও কম নেই। পদ্মফুলের ডাঁটা জড়িয়ে অনেক সময় বিষধর সাপও থাকে। সে সবের সঙ্গেই লড়াই করে ওঁরা বংশানুক্রমে এই পেশায় জড়িয়ে রয়েছেন। কিন্তু পুজোর আগেই শীত উঁকি মারায় চিন্তায় পড়েছেন ওঁরা। কারণ শিশির পড়া শুরু হওয়ায় কমে যাচ্ছে পদ্ম।

ওপার বাংলার পুজো এপারেও
৩০০ বছর আগে ওপার বাংলার ফরিদপুরে শুরু হওয়া দুর্গাপুজো এখন ধরে রেখেছেন এ পারের বাঁকুড়ার সেন্দড়ার উত্তসূরীরা। পুজো এখন তিন শরিকে ভাগ হয়ে গিয়েছে। তবুও এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সেই অতীত ঐতিহ্য।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বর্গি হানার ভয়ে পৈতৃক ভিটে ছেড়ে সেন্দড়ায় চলে আসেন ফরিদপুরের বিখ্যাত কবিরাজ রঘুনাথ গুপ্ত। তিনি অবশ্য মূর্তির বদলে ঘটে পুজো শুরু করেন। তাঁর নাতি লক্ষ্মণ গুপ্ত কবিরাজের সঙ্গে ভাইদের বিরোধে তাঁরা আলাদা হয়ে যান। ভাগ হয়ে যায় পুজোও। সেই থেকে তিন শরিকের ঘট রূপে দেবীর আরাধনা শুরু হয়। আদি পুজোটি হয় সেই পুরনো মন্দিরে। লক্ষ্মণ গুপ্তের শরিকদের পুজোটি হয় খানিক দূরে অন্য একটি মন্দিরে। আরও একটি পুজো হয় ওই গ্রামের বৈদ্যপাড়ার পুরনো বাড়ির ভিতরে দালান মন্দিরে। গুপ্ত বংশের প্রবীণ সদস্য সত্যনারায়ণ গুপ্ত জানান, তিন শরিকের তিনটি পুজোয় ঘটে জল ভরা থেকে নব পত্রিকা স্নান, দেবীর বিসর্জন পর্যন্ত হয় একই ঘাটে, একই সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমাদের পুজোয় রান্না করা ভোগের বদলে নদীর জলে ধোয়া আতপ চাল ও ফলমূল দেবীকে দেওয়া হয়। সন্ধি পুজোর পরে দেবীকে লুচির ভোগ দেওয়ার রীতি চালু রয়েছে।” তিনি বলেন, “পূর্ববঙ্গের প্রথা অনুযায়ী এই রীতি আজও মেনে চলি আমরা।” তিন শরিক একই নিয়ম মেনে চলে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.