পুজো ও ঈদের মুখে জঙ্গিপুরের অকাল নির্বাচন কয়েক হাজার মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। উৎসবের আগে নির্বাচনের দৌলতে বাড়তি রোজগার তাঁদের সংসারে এনেছে খুশির হাওয়া। হোটেলওয়ালা থেকে দিনমজুর, ছুতোর মিস্ত্রি থেকে প্রেস ও ফ্লেক্সের কারিগর, মণ্ডপ নির্মাতা থেকে রিকশাওয়ালানির্বাচনের কল্যাণে তাঁদের কাছে এসেছে বাড়তি পয়সা। এবারের উপনির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন মোট ১১ জন। এর মধ্যে অন্তত ৫ জনের প্রচার ছিল বেশ জোরদার। নির্বাচনে সরকারি খরচা ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তরফেও খরচের অঙ্ক বিপুল।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের ফ্লেক্স তৈরির একটা বড় অঙ্কের বরাত পেয়েছিলেন অমর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দু’টি রাজনৈতিক দলের তরফে অনেক ফ্লেক্স ছাপানো হয়েছে আমার কাছে। সরকারি তরফেও অর্ডার পেয়েছি কিছু। পুজোর মুখে আয়টা এবার ভালই হয়েছে। ৪-৫ জন কর্মী বাড়তি কাজও পেয়েছে আমার স্টুডিওতে।”
প্রচারে ব্যবহৃত ফ্লেক্সের চারিদিকে কাঠের ফ্রেম গড়েছেন এবারে একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রায় ৬ জন কর্মী। ৩ হাজার ফ্রেম গড়েছেন ১০০ টাকা করে মজুরিতে। প্রায় ৩ লক্ষ টাকা রোজগার হয়েছে এর থেকে। সমীর রাজমল্ল বলেন, “এ বারে পুজোটা ভালই কাটবে।” এ বারে সরকারি তরফে স্কুল ভবন-সহ নির্বাচনের জন্য সর্বত্র প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকায় প্যান্ডেল গড়ার ভার পেয়েছিলেন মৃণালকান্তি চৌধুরি। ৫৫ জন মজুর রাত দিন পরিশ্রম করেছেন সেখানে। ৩০০ টাকা করে দৈনিক মজুরি মেটাতে হয়েছে তাঁদের। মৃণালবাবুর কথায়, “উৎসবের আগে শ্রমিকেরাও দু’পয়সা হাতে পেয়ে খুশি।” শ্রমিক প্রভাত শেখের কথায়, “পুজোর কটা দিন ভালই কাজ হয়। এবারে পুজোর প্যান্ডেল তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তার আগে নির্বাচনের দৌলতে কিছু বাড়তি পয়সার মুখ দেখা গেল।”
ভোটের সময় হোটেলগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সাধারণ সময়ে যা থাকে ২০ টাকা সে দিন তা বিকিয়েছে ৩০ টাকায়। আনন্দ দাসের কথায়, “নির্বাচনে দু’টো পয়সা পেয়েছেন সকলেই।” ম্যাকেঞ্জি ময়দান লাগোয়া বলে ভোটের দিন প্রচুর গাড়ি ও লোকজন ঢুকেছিল এখানে। উদয় মণ্ডলের চায়ের দোকানে উপচে পড়ছিল ভিড়। খাবারের দোকানের মালিক কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচনের ক’দিনে দোকানে বিক্রি দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। তা পুজোয় কাজে লাগবে।” |