|
|
|
|
|
খুদেদের মন কাড়তে আসরে অ্যানিমেশন
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
|
থিম পুজো তো বাজার দখল করেই নিয়েছে, এ বার সেই বাজারের সবচেয়ে ছোটদের মন জয় করার পালা। মেদিনীপুর শহরের অনেক মণ্ডপই তাই এ বার মণ্ডপসজ্জা বা প্রতিমা তৈরিতে জোর দিয়েছে ‘অ্যানিমেশনের’ উপরে। কোথাও পুজোর থিম ছোটা ভিম, আবার কোথাও বা মণ্ডপ যেন মেঘের রাজ্য। প্রত্যেকেরই লক্ষ্য ছোটরা যেন মণ্ডপ থেকে বেরোনোর সময় খিলখিলিয়ে বেরোয়। সঙ্গে ‘আবার আসব’ বায়না থাকলে কেয়া বাত।
কিন্তু থিমের ভাবনায় এই রদবদল কেন? পুজোর এক উদ্যোক্তা বলেন, “মানুষ যেন হাসতেই ভুলে যাচ্ছে। ছোটদের অবস্থা তো আরও খারাপ। বইয়ের বোঝা সামলাতেই হিমশিম তারা। তাই কচিকাঁচাদের হাসির জন্য যদি একটু অন্য রকম ভাবা যায়, মন্দ কী। ছোটদের মুখে হাসি দেখলেই তো বড়রা হাসবেন।” |
কৌশল্যায় দেবী ছোটা ভীমের আদলে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
খড়্গপুর শহরের কৌশল্যার শারদ সম্মিলনী দুর্গোৎসব পুজো কমিটির এ বারের থিম ছোটা ভীম। ঢোলকপুরের আদলে তৈরি হওয়া মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষের মুখে। প্রতিমাও তৈরি হয়েছে ছোট ভীমের অনুকরণেই। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা মনোজ বিশাল বলেন, “ছোটদের কথা ভেবেই এমন পরিকল্পনা। পুজো দেখে যদি ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা আনন্দ পায়, মজা করে, সেটাই তো প্রাপ্তি।” মেদিনীপুর শহরের কোতয়ালি বাজারে আবার এক অ্যানিমেশন চরিত্রের অনুকরণে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। দেবী দুর্গার দুই হাত। নেই মহিষাসুর। মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ইজিপ্টের আবু সিম্বল মন্দিরের অনুকরণে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কৌশিক পাল বলেন, “এখনকার ছেলেমেয়েদের অ্যানিমেশনের প্রতি একটা আলাদা আকর্ষন আছে। কচিকাঁচাদের কথা ভেবেই এ বার আমরা একটু অন্যরকম প্রতিমা তৈরি করেছি। খুদেরা মজা পাবে বলেই আমাদের ধারনা।” এই ধারনা যে ঠিক, শহরের এক পুজোয় গত বছরই তার প্রমাণ মিলেছে। অশোকনগর সর্বজনীনে ডাইনোসরের অনুকরণে মণ্ডপ তৈরি হয়েছিল। আরহ তাতে উপচে পড়েছিন কচিকাঁচাদের ভিড়। বিশাল চেহারার ডাইনোসর দেখে শুরুতে ভয়ে পেলেও মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে আসার সময় খিলখিলিয়ে হেসেছে সকলেই। এ বারও সেই হাসির দেখা মিলবে বলেই মনে করছেন এই পুজোর উদ্যোক্তারা। মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে পৃথিবীর গোলকের আদলে। তুলো দিয়ে হচ্ছে মেঘ। মণ্ডপে ঢুকতে গেলে এই মেঘের মধ্যে দিয়েই ঢুকবে ছোট পরীরা। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুব্রত রায় বলেন, “তুলোর মেঘ দেখে ছোটরা বেশ মজা পাবে।” শহরের ছোটবাজারেও এ বার পুজোর থিম ছোটা ভীম। বাড়ির বড়দের কাছে, এপাড়া-ওপাড়ার লোকের কাছে এমন সব কথা শুনে পুজো দেখতে মুখিয়ে আছে অনেকেই। যেমন কেজি ২-এর ছাত্রী সম্প্রীতি খাঁড়ার কথায়, “ছোটা ভীম খুব ভালো। বাবাকে বলেই দিয়েছি, ওকে দেখতে যাব।”
তবে ছোটা ভীমে মজেন কিন্তু অনেক বড়রাও। কাজেই খুদেদের সঙ্গে তাদের তুলনায় ধেড়ে দাদা-দিদি এমনকী বাবা-মারাও সাগ্রহেই ভিড় জমাবেন মণ্ডপে। অন্তত উদ্যোক্তাদের আশা তো তেমনই। |
|
|
|
|
|