হাসি-রহস্য বাতলাল ৪০ কোটির বুড়ো মাছ |
এক হাসিতেই ঘায়েল। হৃদয় একেবারে এ ফোঁড়-ও ফোঁড়। আরও অনেক রাশিরাশি হাসি আছে। বাঁকা হাসি, ন্যাকা হাসি, ফোকলা দাদুর বাঁধানো দাঁতের হাসি। তবে এই হাসির পিছনে লুকিয়ে আছে প্রায় ৪০ কোটি বছরের ইতিহাস। হ্যাঁ, এতটাই বয়স হল ‘হাসি-রাশির’, বলছেন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। ‘নেচার’ পত্রিকায় তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
হাসছি মোরা, হাসছি দেখো, হাসছি মোরা আহ্লাদি...। আহ্লাদিত বিজ্ঞানীরাও। এত দিনের ধারণা ভেঙে বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাঁদর কিংবা শিম্পাঞ্জি নয়, মানুষের হাসির ‘জনক’ কম্পাগোপিসিস মাছ। ৩৮ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে রাজত্ব করত এই মাছ। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় কম্পাগোসিসের জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর তা দেখেই বিজ্ঞানীদের সিদ্ধান্ত, লক্ষ কোটি বছর আগেও চোয়ালওয়ালা মেরুদণ্ডীদের দাঁতকপাটি বিরাজমান। সুতরাং যা নিয়ে এত গর্ব, সেই হাসির জন্মও ওই সময়ের আগেপিছেই।
এত দিন মনে করা হতো, প্রাগৈতিহাসিক মেরুদণ্ডীদের শুধুমাত্র চোয়াল ছিল। আর সেই চোয়াল দিয়েই তারা শিকার করতো। এত দিনে সে ভুল ধারণা ভাঙল।
সুইৎজারল্যান্ডের পল শেরার ইনস্টিটিউট-এ উচ্চ শক্তিসম্পন্ন এক্স-রের মাধ্যমে গবেষকেরা কম্পাগোসিসের দেহের গঠন এবং দাঁত ও চোয়ালের গড়ন বোঝার চেষ্টা করেন। মুখ্য গবেষক মার্টিন রুয়েকলিন বলেন, “চোয়ালের মধ্যে প্রত্যেকটা কলাকোষের গঠন, বৃদ্ধি, সবটাই বেশ স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। এর থেকে আমরা দাঁত কিংবা চোয়ালের উৎপত্তিটা ঠিক কী ভাবে হয়েছিল, সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারব। এখনকার মেরুদণ্ডীদের সঙ্গে ব্যাপারটা তুলনা করেও দেখা যেতে পারে।”
এত দিনে যে দাঁতের জন্ম জানা গেল, ব্রিস্টলের আর এক বিজ্ঞানী ফিলিপ ডোনোঘুয়ে তা নিয়েই বেশি উচ্ছ্বসিত। তাঁর কথায়, “বেশ জোরদার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এত দিনের বিতর্কে এ বার বোধ হয় দাড়ি পড়ল।” |