কুমোরটুলিতে বাড়ছে সিসাহীন রঙের ব্যবহার |
সিসাহীন রং ব্যবহারে এ বারের পুজোয় অনেকটাই এগিয়ে গেল কুমোরটুলি। কুমোরটুলির শিল্পীরা জানাচ্ছেন, গত বারের তুলনায় এই বছর প্রায় দ্বিগুণ সিসাহীন রং ব্যবহার করা হয়েছে। এ বছর রংয়ের গুণগত মানও অনেকটাই ভাল, তবে দাম অপেক্ষাকৃত বেশি। ক্রেতারা কিছুটা বেশি দাম দিয়ে প্রতিমা কিনতে আগ্রহী হলে আরও সিসাহীন রংয়ের ব্যবহার আরও বাড়বে। এ বারও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শিল্পীদের নিয়ে কর্মশালা ও তাঁদের বিনামুল্যে রং দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
কুমোরটুলির শিল্পী নারায়ণচন্দ্র পাল এ বার পাঁচ লিটার সিসাহীন রং ব্যবহার করছেন। নারয়ণবাবু বলেন, “হলুদ, লাল, নীল ও সাদার জন্য এই রং সুবিধাজনক। তবে দুধে-আলতার মিশ্রণ এই রঙে হচ্ছে না।” কুমোরটুলির আর এক শিল্পী তরুণ পালের মতে, এই রং পুরনো রঙের তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল। তিনি বলেন, “এ বছর অধিকাংশ প্রতিমার ক্ষেত্রেই আমি সিসাহীন রং ব্যবহার করেছি। বিশেষ করে এক চালার প্রতিমার ক্ষেত্রে এই দূষণহীন রং ব্যবহার বেশি করছি।”
কুমোরটুলির অধিকাংশ শিল্পীর মতে এই রং ব্যবহার করা অনেক সুবিধাজনক। সাধারণ রঙের ক্ষেত্রে রং লাগিয়েই বার্নিশ করা যায় না। তবে সিসাহীন রঙে এই সমস্যা নেই। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃত সমিতির পক্ষে বাবু পাল বলেন, “এক একটি প্রতিমার জন্য এই রং ব্যবহার করলে ১২০০ টাকার মতো বেশি খরচ হয়।”
কুমোরটুলি প্রগতিশীল মৃৎশিল্প সাজশিল্প সমিতির সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, “আমি এই বছর ১০ থেকে ১২ লিটার দূষণহীন রং ব্যবহার করেছি। এর মধ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে আমাদের চার লিটার রং দেওয়া হয়েছে। বাকিটা কিনতে হয়েছে। দাম বেশি হলেও এই রঙের সুবিধা হল খুব দ্রুত শুকোয়।”
সিসাহীন রঙের ব্যবহার বাড়াতে গত পাঁচ বছর ধরে কাজ করছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। শুরুর কয়েক বছর কুমোরটুলিতে গিয়ে কর্মশালা সংগঠিত করে শিল্পীদের মধ্যে রং বিলি করার ব্যবস্থা করত পর্ষদ। এই বছরও মৃৎশিল্পী এবং রং কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে দুটি কর্মশালা করেছে তারা। পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কান্তি দত্ত বলেন, “কর্মশালায় কুমোরটুলি, কালীঘাট, পাটুলি, গড়িয়া এবং ব্যারাকপুর থেকে একশোরও বেশি শিল্পী যোগ দেন। রং কোম্পানির প্রতিনিধি ও পুজো কর্তৃপক্ষের লোকেরাও কর্মশালায় যোগ দেন।” |