কোথাও সাপুড়ে খেলা দেখাচ্ছে। গাছের তলায় ধ্যানস্থ সাধু। কোথাও রয়েছে প্রজাপতির জীবনচক্র। আবার কোথাও উষ্ণায়ন বিরোধী সচেতনতা। কোথাও আবার বহুরূপীদের রোজনামচা। আসলে পুজোর ক’টা দিন হুগলি-চুঁচুড়া-ব্যাণ্ডেল যেন সব পেয়েছির দেশ।
মতিবাগান সর্বজনীনের থিম ‘উৎসব এ বার অরণ্যে’। পৃথিবী জুড়ে উষ্ণায়নের ফলে কী ক্ষতি হয়েছে, সেই চিত্রই থিমের উপজীব্য। খড়, তালপাতা এবং শালপাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পশুপাখি এবং অরণ্য। সেই অরণ্য কী ভাবে ধ্বংস হচ্ছে মানুষের ভুলে, তাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। দুর্গা বনদেবীর বেশে। পিপুলপাতির কাছে মিত্রবাগান আবাসিক সংহতি খবরের কাগজ দিয়ে মডেল তৈরি করে রামায়নের কাহিনী ফুটেয়ে তুলেছে। চুঁচুড়ার কামারপাড়ার পঞ্চাননতলার রাস্তায় গেলেই দেখা যাবে বিচিত্র রঙের হরেক রকম প্রজাপতি। শুককীট থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতির অবয়ব থাকছে মণ্ডপসজ্জায়। ১৬০০ প্রজাতির চোদ্দ হাজার ‘নকল’ প্রজাপতি থাকছে এখানে। কিছুটা এগিয়ে ঠাকুরগলি সুকান্ত সঙ্ঘ। এখানে চোখ টানবে বিভিন্ন রঙের নানা আকারের কাঠের পুতুল। আখনবাজার সার্বজনীনের পুজো ৬৪ বছরে পা দিল। এখানকার মণ্ডপ তৈরি হয়েছে বৌদ্ধদের প্রার্থনা সভাগৃহের আদলে। হুগলির পালপুকুর ধার অধিবাসীবৃন্দের মণ্ডপে দেখা যাবে সাপ, বাঁদরের খেলা। থাকছে মাদারির খেলা। নানা প্রজাতির পাখি নিয়ে সাজিয়ে থাকছেন পাখিওয়ালা। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞার জালে আটকে বানজারা সম্প্রদায়ের জীবন বিপন্নের পথে। সেই চিত্র তুলে ধরতেই এ বারের পুজো ভাবনা। এখানে দেবী আদিবাসী মহিলার বেশে। বড়বাগান রথতলা সর্বজনীনের পুজোয় সর্বধর্ম সমন্বয়ের চিত্র। বহুরূপীদের রোজনামচা ঐক্যতান সঙ্ঘের পুজোর থিম। মণ্ডপে ঢোকার মুখেই চোখে পড়বে, গাছের নীচে মুনি বসে ধ্যান করছেন। পেয়ারাবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপে পাট কাঠি ও কয়েক হাজার দইয়ের চামচ দিয়ে নকশার মণ্ডপ নজড় কাড়বে। এখানে থাকছে দেবতা এবং অসুরদের স্বর্গ অভিযানের দৃশ্য। গাঁজার কলকে এবং তুবড়ির খোল দিয়ে তৈরি নাটমন্দিরে পুজিতা হবেন রথতলা সর্বজনীনের দুর্গা। |