উৎসবের মেজাজে মেতে উঠেছে শহর
লো, সানাই আর ঢাকের শব্দে উৎসবের মেজাজ শুরু চতুর্থীতেই।
লম্বা ছুটির আগে কাজ মিটিয়ে নিতে সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। সঙ্গে ছিল পুজোর কেনাকাটার শেষ ল্যাপের দৌড়। নিউ মার্কেট, হাতিবাগান বা গড়িয়াহাটের দোকান-বাজারে উপচে পড়েছিল ক্রেতা। ভিড় হয় ব্রেবোর্ন রোড, মহাত্মা গাঁধী রোড, ক্যানিং স্ট্রিটের মতো ব্যবসা প্রধান এলাকাতেও। পুজোর ভিড় সামলাতে কলেজ স্ট্রিট, কাইজার স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, আমহার্স্ট স্ট্রিট-সহ একাধিক ব্যস্ত রাস্তার দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেড, লোহার গার্ডরেল লাগিয়েছে পুলিশ। সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের ডিভাইডার রেলিং উঠিয়ে বুলেভার্ড বানানোর ফলে রাস্তার মাপ আগের থেকে কমেছে। তার সঙ্গে ব্যারিকেড লাগানোয় যানবাহনের গতি থমকেছে। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা গড়ানোর আগেই শহর জুড়ে হাঁসফাঁস অবস্থা।
এ দিনও যথারীতি বিকেলের পর একাধিক পুজোর উদ্বোধনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যান রাজ্যপালও। এ ছাড়া, বেশ কয়েক জন তারকাকেও দেখা গিয়েছে শহরের অনেক মণ্ডপে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন অভিনেত্রী বিদ্যা বালন, দিয়া মির্জা এবং ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ। এঁরা কলকাতা, সল্টলেক ও লাগোয়া একাধিক মণ্ডপে ঘোরেন। আসছেন ভিন্ রাজ্যের ভিআইপি-রাও। যেমন, এন্টালি উদয়ন সঙ্ঘের পুজো উদ্বোধন করতে আসছেন অরুণাচলের রাজ্যপাল জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জে জে সিংহ। ওই পুজোর উদ্যোক্তা তথা মিজোরামের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘‘উত্তর-পূর্বের রাজ্যপালদের দিয়ে উদ্বোধন করানোটা দুই দিকে সেতুবন্ধনের ক্ষেত্রে আমাদের সীমিত প্রয়াস।”
দক্ষিণ কলকাতার অনেক পুজোমণ্ডপের সামনের রাস্তাতেও ব্যারিকেড বসিয়ে দেওয়ার কারণে যানবাহনের গতি কমে যায়। আশুতোষ মুখার্জি রোড, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ-সহ অনেক রাস্তাতেই এ দিন অতিরিক্ত ভিড় ছিল।
এ দিনও কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার বিরাম ছিল না। তার জেরে রবীন্দ্র সরণি, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ, ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ে যানজটও হয়। যানজট হয়েছে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, নাকতলা ও টালিগঞ্জ এলাকাতেও। কুমোরটুলি প্রগতিশীল মৃৎশিল্প ও সাজশিল্প সমিতির সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, “৭০ শতাংশ প্রতিমা বেরিয়ে গিয়েছে।” এ দিন রাতভর কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা গিয়েছে শহর ও শহরতলির বিভিন্ন মণ্ডপে।
সন্ধ্যা নামতেই বদলে গেল শহরের চেহারা। রাস্তায় রাস্তায় জ্বলে উঠল উৎসবের আলো। মাইকে ঢিমেতালে সানাই, ঢাকের বাদ্যি। কোথাও কোথাও অবশ্য শেষ মুহূর্তের ‘ছোঁয়া’ দিচ্ছেন শিল্পীরা। আবার অনেক পুজো কমিটিই দর্শনার্থীদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। এ দিন থেকেই মণ্ডপের সামনে নানা ধরনের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ-গড়িয়াহাট এলাকার কয়েকটি পুজোয় এ দিন থেকেই মেলা বসে গিয়েছে।
এ দিন সন্ধ্যা থেকেই অনেকেই ফাঁকায় ফাঁকায় প্রতিমা দেখা সেরে ফেলছেন। এ দিন যাঁদের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে দেখা গিয়েছে, তাঁরা হয় বাজার ফেরত ক্রেতা নয়তো স্কুল-কলেজের পড়ুয়া। বিকেলে ভবানীপুর এলাকায় এক দল কলেজ পড়ুয়াকে দেখা গেল বিভিন্ন মণ্ডপে উঁকি দিচ্ছেন। পিকনিক গার্ডেন এলাকার সুনীলনগরের মণ্ডপেও দুই স্কুল ছাত্রী ঘুরে-ঘুরে দেখছিলেন।
গত ক’বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, পুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে চতুর্থী থেকেই। সেই কথা মাথায় রেখে আজ, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই রাস্তায় নামছে কলকাতা পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা ও যান-নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ভিড়ের মধ্যে অপরাধ ঠেকাতে সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন করা হচ্ছে।
উত্তেজনার শেষ প্রহর। দেবীর বোধনের বাকি মাত্র এক দিন। শহরের রাস্তায় অবশ্য তার আগেই শুরু বাঙালির সেরা উৎসব।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.