কন্যাভ্রূণ হত্যা কেন, প্রশ্ন তুলল সিউড়ির পুজো |
অরুণ মুখোপাধ্যায় • সিউড়ি |
স্টেশন মোড় সর্বজনীন: মহাকাশের আদলে কালো-সাদা ফ্লেক্সের ৩০ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ। মণ্ডপের বাইরে লেখা থাকবে ‘কন্যাভ্রূণ হত্যা কেন?’। এটাই থিম ৫৩ বছরে পড়া সিউড়ির স্টেশন মোড় সর্বজনীন পুজোর।
ওই থিমকে কেন্দ্র করে মণ্ডপের ভেতরের রূপ দেওয়া হয়েছে ‘আঁতুর ঘরে’র। সেখানে মাঝখানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকছে বড় বড় করে আঁকা ভ্রূণের ছ’টি অবস্থা। তার নীচে গ্লোবের মতো ভারতের মানচিত্রের মধ্যে মাটির তৈরি প্রতিমা ‘ভারত মাতা’। যাঁর কাছে অস্ত্র সংবরণ করে তুলে দিচ্ছে অসুর। মণ্ডপের ভিতরে ছ’টি বিষয়কে কেন্দ্র করে থাকছে নানা ছবি। যার অন্যতম বিষয় ‘রাজনীতির দিকপাল’। তাতে যেমন আছেন ইন্দিরা গাঁধী, প্রতিভা পাটিল, তেমনই হাজির মমতা বন্দোপাধ্যায় ও শেখ হাসিনারও ছবি। প্রশ্ন তোলা হয়েছে ‘কন্যাভ্রূণ হত্যা হলে কি এঁদের পাওয়া যেত?’ এ সব ছাড়াও মণ্ডপে সচেতনতা মূলক ছড়াও লেখা হয়েছে। মণ্ডপের বাইরেও থাকছে ফ্লেক্সের উপর লেখা কিছু স্লোগান।
পুজো কমিটি চাইছেন ভাবাতে। আজকের সদা ব্যস্ত জীবনে এই কমিটি কিন্তু আপনাদের একটি জরুরি প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাবেই ‘কন্যাভ্রূণের কান্না শুনতে কি কেউ পান না!’ |
|
চৌরঙ্গি ক্লাব: কলকাতার থিম পুজোর জ্বর পৌঁছে গিয়েছে মফস্সলেও। তবে তুলনায় ছোট বাজেটের ওই সব পুজোর মান নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন ছিল। যেমন সিউড়িতে চৌরঙ্গি ক্লাবই গত তিন বছর ধরে থিম পুজো শুরু করেছে। কিন্তু তা দর্শকদের তেমন মন কাড়তে পারেনি। তাই শিক্ষা নিয়ে এ বারে ওই পুজো কমিটি আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছে।
৩৪ বছরে পা ফেলা এই পুজোর এ বারের থিম ‘দাও ফিরে সে অরণ্য’। থিম চেনা হলেও, তার উপস্থাপনায় অভিনবত্ব আনছে এই পুজো কমিটি। প্রতিমা হয়েছে গাছের অবয়বে। অসুরের হাতে কুড়ুল আর মণ্ডপ থাকছে উন্মুক্ত আকাশের নীচে। খড়ের কাঠামোর উপর প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে বানানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় গাছ। তাতে গাছের রঙ করা হয়েছে। থাকছে প্রচুর বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টার অব প্যারিসের পাখিও। একেবারে ঘন অরণ্য বলেই মনে হবে। সঙ্গে কৃত্রিম ঘাসের শিল্পকর্ম। মণ্ডপে ঢোকার মুখেই বানানো হয়েছে উঁচু টিলা। সেখানে দু’হাত বের করা ঘাসে ঢাকা যেন প্রাচীন যুগের কোনও মানব। তার তলাতেই লেখা থাকছে ‘দাও ফিরে সে অরণ্য’।
|
|