সিনেমা দেখে কষা হয়েছিল দুষ্কর্মের ছক। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
দুর্গাপুরে এক ব্যবসায়ীর ছ’বছরের মেয়েকে অপহরণের হুমকি দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা তোলা আদায়ের অভিযোগে পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেল তিন যুবক। বৃহস্পতিবার আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানিয়েছেন, যে দু’টি মোবাইল থেকে ফোন করা হয়েছিল সেগুলির ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখেই তিন জনকে ধরা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পুজোর মুখে প্রায় সব বস্ত্র প্রতিষ্ঠানেই সাময়িক ভাবে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়। অভিযোগ, সেই সুযোগেই দুর্গাপুর বাজারের একটি বড় বস্ত্র প্রতিষ্ঠানে কাজ নিয়েছিল বাঁকুড়া শহরের লালবাজারের বাসিন্দা শুভ্রমুকুট চক্রবর্তী। এক মাস ধরে সে দোকান ও মালিকের পরিবারের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করে তা পাচার করে সিটি সেন্টারে পূর্ব পরিচিত এক বিমা সংস্থার দুই এজেন্টের কাছে। জিতেন্দ্রকুমার ঠাকুর ও সোমনাথ দত্ত নামে ওই দুই এজেন্টই ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূম জেলার চাইবাসার লোক। এ মাসের গোড়াতেই তিন জনে মিলে পরিকল্পনা সেরে ফেলে।
বস্ত্র ব্যবসায়ী বাবলু সারকারিয়া জানান, গত ১২ অক্টোবর তিনি প্রথম হুমকি ফোন পান। তাঁকে বলা হয়, অবিলম্বে তিনি যদি ১০ লক্ষ টাকা দিতে রাজি না থাকেন তাহলে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হবে। তিনি প্রথমে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দেননি। পরের দিন ফের তাঁর মোবাইলে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। তিনি কোকওভেন থানায় বিষয়টি জানান। ১৪ অক্টোবর আবার অন্য নম্বর থেকে ফোন আসে। পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখে, দু’টি নম্বর দুই আলাদা ‘সার্ভিস প্রভাইডার’-এর। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। টাওয়ার লোকেশন দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়, একটি ফোন আসছে বাঁকুড়ার লালবাজার এলাকার আশপাশ থেকে। অন্য নম্বরটি রয়েছে দোকান সংলগ্ন এলাকায়। সন্দেহ হওয়ায় দোকানের নতুন কর্মী শুভ্রমুকুটকে আটক করে পুলিশ। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে জিতেন্দ্র ও সোমনাথের কথা। দোকান থেকে সামান্য দূরে একটি বাড়ি তারা ভাড়া নিয়েছিল। সেখান থেকে তাদের ধরা হয়।
এডিসিপি (পূর্ব) সুনীলবাবুর দাবি, “জেরায় তিন জন জানিয়েছে, একটি হিন্দি সিনেমা দেখে তাদের এই ছক মাথায় আসে।” জিতেন্দ্র ও সোমনাথের কাছে পুলিশ জেনেছে, তাদের কাজকর্ম বিশেষ ভাল চলছিল না। রোজগার দিন-দিন কমছিল। তাই এককালীন মোটা টাকা আদায়ের ছক কষে তারা। সুনীলবাবু বলেন, “শুভ্রমুকুটের বিরুদ্ধে অতীত কোনও অভিযোগ মেলেনি। জিতেন্দ্র ও সোমনাথের ব্যাপারে জানতে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।” |