নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শরতে থিমের পরশ।
শহরের নানা পুজোয় নানা থিমকে হাতিয়ার করেই কোমর বাঁধছেন উদ্যোক্তারা।
পরিবেশকে থিম করে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে শিলিগুড়ির সুভাষপল্লির সঙ্ঘশ্রীতে। পুজো কমিটির সম্পাদক সৌরাশিস রায় জানান, মণ্ডপ তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। এবারে তাদের ৪৭ বছরের পুজো। তিনি বলেন, “উষ্ণায়নে পৃথিবী জুড়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তা রুখতে গাছই প্রধান সহায়। সেটাই আমরা মণ্ডপের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তুলব।” এলাকার বাসিন্দা চন্দ্রচূড় দত্ত, অভিষেক মালাকার’রা জানান, প্রতিবছর নবমী পুজোর দিন মণ্ডপে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তাঁর। বলেন, “এবারেও প্রসাদ বিতরণ করলে ভাল হয়।”
শিলিগুড়ির লেকটাউনের উইনার্স ক্লাবের পুজো এবারে ৩৬ বছরে পা দিল। পুজোর থিম বারুদস্তূপে অঙ্কুরোদগম। ক্লাবের সম্পাদক কার্তিক মজুমদার জানান, কলকাতার শিল্পী স্বপন পাল ৯০ ফুট চওড়া, ১২ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ তৈরি করছেন। মণ্ডপে ৪০টি ফাইবারের মডেল তৈরি করা হচ্ছে। দুর্গার হাতে অস্ত্রের বদলে ফুল থাকবে। দেবী অহিংসার মন্ত্রে বধ করবেন অসুরকে। ওই পুজো কমিটিতে মহিলারা সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, “মণ্ডপ তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। আমাদের পুজো দর্শনার্থীদের মন কাড়বে।” তিনি জানান, ক্লাবের তরফে একটি ফুটবল কোচিং ক্যাম্প চালানো হয়। সেখানকার ছেলেমেয়েদের এ বার পুজোর জামাকাপড় দেওয়া হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা নিকিতা মজুমদার, সুতপা সরকাররা বলেন, “একসময় খুব ছোট আকারে আমাদের এখানে পুজো হত। গত বারো বছর ধরে ক্লাবের সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বড় আকারের পুজো করে সবার মন কেড়েছে। পুজোতে পাড়ার সবাই মিলে মণ্ডপে গিয়ে খুব আনন্দ করি।”
৫০ বছরের পুজোয় এবারে শিলিগুড়ির অরবিন্দ যুবক সঙ্ঘের থিম ‘গ্রাম-বাংলার ষোল আনাই সাবেকিয়ানা, সোনার বাংলায় মহামায়া’। খড়, চট, দিয়ে সে চিত্র ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। পুকুর, কুঁয়ো থাকবে মণ্ডপে। সেখানে ঘুরে বেড়াবে হাঁস, গরু। ধান খেতও তৈরি করা হচ্ছে মণ্ডপে। পুজো কমিটিরসম্পাদক ধীমান বসু বলেন, “পঞ্চাশ বছরের পুজোয় এবারে একটু অন্যরকম ভাবে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। এলাকার সমস্ত মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।” এলাকার বাসিন্দা ঐশ্বর্য বসু, শর্মিষ্ঠা ঘোষ বলেন, “পুজোয় সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠান হবে। তাতে আমরা খুব খুশি। প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান হলে আমরা অংশগ্রহণ করব।”
অরবিন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের ৫১ বছরের পুজোয় অমরনাথের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। পুজো কমিটির সম্পাদক কাঞ্চন পাল জানান, ৯ টি মায়ের মূর্তি মণ্ডপের ভিতরে থাকবে। এ ছাড়া আলাদা একটি মণ্ডপে পুজোর ব্যবস্থা করা হবে। এলাকার বাসিন্দা স্নিগ্ধা কর্মকার, সীমা সরকার’রা বলেন, “আমাদের পুজো মণ্ডপ থেকে প্রতিবছর গরিবদের জামাকাপড় বিলি করা হয়।”
পরিবেশ সচেতনতায় পুরস্কার। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে যে পুজো কমিটিগুলি মণ্ডপ তৈরি করবে তাদের মধ্যে ১০ টিকে পুরষ্কৃত করবে শিলিগুড়ি হর্টিকালচার সোসাইটি। বুধবার তা জানান সংস্থার কার্যকারী সভাপতি নান্টু পাল। তিনি বলেন, “চারজন বিচারক মণ্ডপ ও পরিবেশ দেখে ১০ টি পুজো কমিটিকে চিহ্নিত করবে। সপ্তমীর দিন ওই মণ্ডপগুলিতে গিয়ে পুরষ্কার দেওয়া হবে।” |