ছুটির দিনে অবৈধ নির্মাণ রুখবে বিশেষ পুর-দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রবিবারের মতো পুরসভার ছুটির দিনগুলিকে কাজে লাগিয়ে প্রোমোটারদের একাংশ অবৈধ নির্মাণে সক্রিয় হওয়ায় উদ্বিগ্ন পুর কর্তৃপক্ষ। পুজোর ছুটির দিনগুলিতে সেই চেষ্টা রুখতে এ বার বিশেষ দল তৈরি করছে শিলিগুড়ি পুরসভা। ছুটির দিনগুলিতে এমনকী পুজোর মধ্যেই কোথাও কোনও অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেলে ওই দলের কর্মীরা গিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “ছুটি দিনে পুরসভা বন্ধ থাকায় কর্মী আধিকারিকদেরও পাওয়া যায় না। সেই সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছুটির দিনেই অবৈধ ভাবে নির্মাণ চালানোর বেশ কিছু অভিযোগ নজরে এসেছে। এ বার তাই বিশেষ দল তৈরি করা হচ্ছে। ছুটির দিনগুলিতে কোথাও কোনও অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেলে ওই দল গিয়ে ব্যবস্থা নেবে।” পরিস্থিতির জেরেই যে এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে তা জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ।
পুরসভার একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, পুরসভার প্রধান অফিস থেকে ২ জন বাস্তুকার থাকবেন দলে। তা ছাড়া ৫ টি বরোর প্রতিটি থেকে অন্তত ১ জন করে বাস্তুকার এবং ১ জন কর্মী থাকবেন। যে এলাকায় অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া যাবে সেই বরোর বাস্তুকার, কর্মী এবং প্রধান অফিসের কর্মী-আধিকারিকদের দল গিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন।
বুধবার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহ পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে একটি অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর ওয়ার্ডে বরফ ফ্যাক্টরি রোডে ওই অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি। সেবক রোডে ‘মেয়র’ হোটেল কর্তৃপক্ষ ফুটপাথ আটকে রাখা বাঁশের মাচা খুলে নিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছেন, ভাড়াটেদের একাংশ জবরদস্তি সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন। হোটেলের তরফে পুরসভাকে জানানো হলেও ওই সাইনবোর্ড খোলা হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন কর্তৃপক্ষ। পুরসভার তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ভাড়াটেদের তরফে বলা হয়েছে, তারা মহকুমাশাসকের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেবক রোডে একটি শপিংমলের কাছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ৩ দিন সময় দিয়ে বুধবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে অবৈধ নির্মাণের অংশ ভেঙে দিতে বলা হয়েছে। এ দিন পুরসভার মেয়র পারিষদের সঙ্গে দেখা করতেও আসেন ওই ভবনের মালিক বিষ্ণু কুমার মিন্দা। তিনি স্বীকার করেন, “ভবনের পিছনের অংশে কংক্রিটের যে সিঁড়ি নির্মাণ করা হচ্ছিল তার কোনও নকশা নেই।” রবিবার রাতে ঢালাই করে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে অভিযোগ পেয়ে পুরসভার কর্মীরা গিয়ে কাজ বন্ধ করান। তা ছাড়া পার্কিংয়ের জায়গায় দোকান করা-সহ আর কিছু অনিয়ম রয়েছে। তা ছাড়া ২০১০ সাল থেকে তাদের এ নিয়ে চার বার তাদের নোটিশ পাঠিয়ে ভবনের নকশা দেখাতে বলা হয়। কোনও বারই তাঁরা তা দেখাননি। এ দিনও নকশা দেখাতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষকে।
বর্ধমান রোডের ধারে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে যে ভবনের ক্ষেত্রে তার মালিকরাও এ দিন পুরসভায় একটি পুরনো নকশা, দমকলের তরফে তাদের কাছে পাঠানো কিছু নথিপত্র জমা দিয়েছেন। এ দিন আবেদন পত্রে তারা দাবি করেছেন, তারা ভবনের সংস্কার কাজ করছেন। অবৈধ কিছু করা হচ্ছে না। ভবনের মালিক সত্যনারায়ণ অগ্রবাল বলেন, “পুরনো বাড়ির নকশা পুর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। ভবনের সংস্কার কাজ করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।” রাজা রামমোহন রায় রোড বাইলেন, সেবক রোড, বর্ধমান রোডে অন্য যে সমস্ত অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে শীঘ্রই তাদেরও নোটিশ পাঠানো হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। |