পথের দাবি মানতে রাজ্য বিকল্প পথে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বারাসত থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের (চার লেন) কাজ বন্ধ থাকলেও জোর করে জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছে না রাজ্য সরকার। তারা ‘বিকল্প পথে’ রাস্তা সম্প্রসারণের কথা ভাবছে।
রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার বুধবার মহাকরণে বলেন, “রাজ্য সরকারের নীতি, জোর করে জমি নেওয়া হবে না। তাই রাস্তা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আমরা বিকল্প পথে এগোনোর চেষ্টা করছি।” বিকল্প পথটা কী? সেটা অবশ্য পরিষ্কার ভাবে বলতে চাননি সুদর্শনবাবু।
কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার জাতীয় সড়কের (৩৪ নম্বর) হাল খুবই খারাপ। ওই রাস্তার অনেক জায়গায় ইট বেরিয়ে গিয়েছে। যানবাহন চলাচলের পক্ষে সড়কটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যে-কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে নিত্যযাত্রীদের আশঙ্কা। রাজ্য সরকার দফায় দফায় চিঠি দিয়ে কেন্দ্রকে সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের চিঠির কোনও জবাব কেন্দ্র দেয়নি বলে পূর্তমন্ত্রী সুদর্শনবাবু এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের অভিযোগ। দুই মন্ত্রীই এ দিন মহাকরণে অভিযোগ করেন, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের হাল খারাপ হয়ে পড়ায় শিল্প ও পর্যটন দুই-ই মার খাচ্ছে। উত্তরবঙ্গে রাস্তা অবিলম্বে না-সারালে সেখানকার বাসিন্দারা আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী।
পূর্তমন্ত্রী জানান, এ রাজ্যে মোট ২৫৫৬ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক রয়েছে। তার মধ্যে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা এনএইচএআই-এর অধীন রাস্তার দৈর্ঘ্য ১০২৭ কিলোমিটার। উত্তরবঙ্গে ২৯৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১২১ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশ যান চলাচলের যোগ্য। বাকি ১৭৪ কিলোমিটার রাস্তা যান চলাচলের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ। পূর্তমন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের রাস্তা মেরামতির উপরে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে ৭৩২ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। মন্ত্রী বলেন, “দক্ষিণবঙ্গের রাস্তা মেরামতির জন্য কেন্দ্রের কাছে ১০৯ কোটি টাকা চেয়েছিলাম। কেন্দ্র একটি টাকাও দেয়নি।”
তৃণমূল কংগ্রেস ইউপিএ জোটে থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় সড়কের দুর্দশা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও চিঠি দিয়েছিলেন। কেন্দ্র রাস্তা মেরামতির বিষয়টিকে গুরুত্ব না-দেওয়ায় বহু বার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজ বিশেষ কিছু হয়নি। তবে পূর্তমন্ত্রী এ দিন দাবি করেছেন, পূর্ত সড়কের হাল ফেরাতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। |