সমবায় সমিতি আইনের সংশোধনী খারিজ কোর্টে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিঙ্গুর আইনের পরে সমবায় সমিতি আইন। হাইকোর্টে ফের ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের আনা সিঙ্গুর আইন অসাংবিধানিক বলে কয়েক মাস আগেই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার তারা জানায়, রাজ্য যে-ভাবে কো-অপারেটিভ সোসাইটি বা সমবায় সমিতি আইন সংশোধন করেছে, সেটাও অসাংবিধানিক। ওই সংশোধনী খারিজ করে দিয়েছেন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। সরকার তাঁর এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করবে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
রাজ্যের সমবায় সমিতি আইনে বলা আছে, বিভিন্ন নির্বাচিত সমবায় সমিতির মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন হবে। তৈরি হবে নতুন নির্বাচিত কমিটি। নতুন সরকার পাঁচ বছরের মেয়াদ কমিয়ে ৩৬ মাস করতে চেয়ে সমবায় সমিতি আইন সংশোধন করে। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি বেরোয় ৬ ফেব্রুয়ারি। তার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন নির্বাচিত সমবায় সংস্থার পরিচালন কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিভিন্ন সমবায় সংস্থা হাইকোর্টে মামলা করে। তাদের বক্তব্য ছিল, এই সংশোধনী সংবিধান ও গণতন্ত্রের বিরোধী। আদালতে রাজ্যের তরফে বলা হয়, সমবায়ে দুর্নীতি বন্ধ করা এবং সমবায়গুলিকে লাভজনক করে তোলার জন্যই কমিটির মেয়াদ তিন বছর করা হয়েছে। সংশোধনী পাশ হয়েছে বিধানসভায়। কয়েকটি সমবায় সংস্থার পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় চার হাজার সমবায়ের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যে-কোনও উপায়ে সমবায়গুলির নিয়ন্ত্রণ হাতে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই রাজ্য সরকার এই সংশোধনী এনেছে।
বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি বলেন, সংশোধনীটি অসাংবিধানিক। সংশোধনীটি খারিজ হয়ে যায়। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সমবায় গণতন্ত্র ধ্বংস হতে বসেছিল। এই রায়ে তা রক্ষা পেল।”
পুনরুজ্জীবনের পথে: হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর সমবায় ব্যাঙ্কে লিকুইডেটর নিয়োগ করেছিলেন। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান কিছু আমানতকারী। হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত ও বিচারপতি অসীম মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন লিকুইডেটর প্রত্যাহার করে এক জন স্পেশ্যাল অফিসারকে ওই ব্যাঙ্কের পুনরুজ্জীবনের দায়িত্ব দিয়েছে। |