দলকে লাটে তুলছেন মন্ত্রী, সুলতানের চিঠি নেতৃত্বকে
তৃণমূল কংগ্রেসের হাওড়া জেলার সভাপতি ও রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মারাত্মক অভিযোগ এনে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছেন বালির তৃণমূল বিধায়ক সুলতান সিংহ।
অরূপবাবুর বিরুদ্ধে সুলতান সিংহের প্রধান অভিযোগগুলি হল
ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দলের সংগঠনকে পঙ্গু (প্যারালাইজ্ড) করে দিচ্ছেন মন্ত্রী।
অনুগত লোক দিয়ে দাগি দুষ্কৃতীদের একত্র করছেন।
তোষামোদ না-করা দলীয় কর্মীদের পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করাচ্ছেন।
বেসরকারি প্রমোটারকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বালির পুরনো বাজারটি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী।
সুলতান সিংহের বিধানসভায় এলাকার বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।
একদা ডাকসাইটে আইপিএস অফিসার সুলতান সিংহ অবসরের পরে তৃণমূলে যোগ দেন। গত নির্বাচনে প্রথম ভোটে দাঁড়িয়ে সিপিএমের ‘লালদুর্গ’ বালিতে জয়ীও হন তিনি। তার পর বছর দেড়েক ধরে তাঁর বিধানসভা এলাকায় কী ভাবে ‘ছড়ি ঘোরাচ্ছেন’ কৃষি বিপণন মন্ত্রী, সেই বৃত্তান্ত চিঠির আকারে গত ৮ অক্টোবর দলের দুই র্শীষনেতা মুকুল রায় ও সুব্রত বক্সীর হাতে তুলে দিয়েছেন সুলতান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুলতান সিংহ।
এক মঞ্চে অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত। সুলতান সিংহ (দাঁড়িয়ে) এবং
অরূপ রায় (ডানদিকে)। বুধবার হাওড়ায় একটি অনুষ্ঠানে। ছবি:দীপঙ্কর মজুমদার
চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে অবশ্য অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত দু’পক্ষই একবগ্গা। বুধবার সুলতানকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি দল আর মমতাকে মন দিয়ে ভালবাসি। দলের চরম ক্ষতি করছেন ওই মন্ত্রী। জনমানসে খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে দলকে সব জানিয়েছি। আমার হারানোর কিছু নেই।” দলের বিধায়কের এই চিঠিকে আবার বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিতে রাজি নন অরূপবাবু। সামান্য কিছু সময় বাদ দিলে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি হাওড়া জেলার সভাপতি। এ দিন চিঠির কথা শুনে বললেন, “কী এসে গেল এতে! আমি কোনও গুরুত্বই দিচ্ছি না। আমি সোজা পথে চলি। সভাপতি হিসেবে জেলায় দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাই। যাঁরা বাজে লোকেদের মদত দেন, কারখানায় ঢুকে গণ্ডগোল করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন, তাঁদের তো রাশ টানতেই হবে।”
কিন্তু চিঠি পাওয়ার পরে নেতারা কিছু বলেছেন? সুলতান ও অরূপ দু’জনেই জানান, এখনও নয়। অরূপবাবু মন্তব্য করেন, “মনে হয় নেতারাও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাই আমায় কিছু বলেননি।” কিন্তু প্রাপক দুই নেতা কী বলছেন? চিঠির কথা শুনে মুকুল রায় বলেন, “আমার কাছে এমন কোনও খবর নেই।” আর সুব্রত বক্সীর কথায়, “এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাইরে বললে তো দলটাই উঠে যাবে।”
দলীয় নেতৃত্বের কাছে দীর্ঘ চিঠিতে বালির বিধায়ক লিখেছেন, তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে বছর খানেক ধরে দলের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিভাজন তৈরি হয়েছে। অরূপ রায় নাক গলানোর জন্যই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুলতানের অভিযোগ, এলাকার দুষ্কৃতীদের একত্র হতে উৎসাহ জোগাচ্ছেন অরূপবাবু। দলের এক প্রভাবশালী ও সক্রিয় নেত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের ব্লক-সভাপতি ও যুব শাখার সভাপতিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা তাঁকে তোষামোদ করতে রাজি নন, তাঁদের পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করাচ্ছেন। এই তালিকায় রয়েছেন তাঁর নিজের আপ্ত সহায়কও। এমনকী, লোক মারফৎ পুরসভার এক আধিকারিকের স্বামীকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সুলতানের আরও অভিযোগ, একটি আবাসন প্রকল্পের জন্য প্রমোটারের স্বার্থে বালির গিরিশ ঘোষ রোড থেকে পুরনো বাজারের সব্জি বিক্রেতা ও দোকানদারদের উচ্ছেদ করতে চাইছেন অরূপবাবু। সুলতান মন্তব্য করেছেন, ‘‘অরূপ রায়ের অতীত কার্যকলাপ পর্যালোচনা করলেই এ সব বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.