কোচ-রঙ্গে ডেভিড বুথের সঙ্গে মোহনবাগানে ফের ভেসে উঠল করিম বেঞ্চারিফার নাম। তবে নামই ভাসছে। বুধবারও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি সবুজ-মেরুন কর্তারা। মুখে কুলুপ সবার। পরিস্থিতি যা, তাতে বৃহস্পতিবার নতুন কোচের নাম ঘোষণা হলেও হতে পারে। করিম রাজি হলে তিনিই ওডাফা-টোলগেদের দায়িত্ব নেবেন। অন্তত বুধবার রাত পর্যন্ত যা খবর, তাতে বাগান কোচের দৌড়ে এগিয়ে আছেন করিমই।
যদিও ডেভিড বুথ মোহনবাগানের কোচ হওয়ার জন্য কিট গুছিয়ে বসে আছেন। তাঁর সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে মঙ্গলবার ক্লাবকর্তাদের কথাবার্তাও শেষ হয়ে গিয়েছিল। ক্লাব সূত্রের খবর, যত কোচের সঙ্গে কথা বলেছেন কর্তারা, তাঁদের মধ্যে বুথ-ই সবচেয়ে কম টাকা চেয়েছেন। কিন্তু সব কিছু ঠিক হয়ে গেলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্রিটিশ কোচের মেজাজ। মহীন্দ্রায় কোচ থাকার সময় তিনি টিমের দায়িত্বে থাকা কর্তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন বলে খবর পেয়েছেন মোহন-কর্তারা। ফুটবলারদের সঙ্গেও নানা সময় ঝামেলা বেঁধেছে তাঁর। |
বুথ |
o ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে ধারণা।
o মহীন্দ্রা ইউনাইটেডকে ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন করানোর অভিজ্ঞতা।
মাইনাস
o বদমেজাজি।
o ফুটবলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ানোর অতীত রেকর্ড। |
করিম |
o মোহনবাগানে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা।
o ওডাফা-সহ বাকি ফুটবলারদের সমর্থন পাওয়া।
o আই লিগে কোচিংয়ের মধ্যেই থাকা।
মাইনাস
o সালগাওকরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। |
|
মোহনবাগানে আপাতত যা ডামাডোল তাতে বুথকে এনে সেটাকে আরও বাড়তে দিতে চান না কর্তারা। এই অবস্থায় কথাবার্তা শেষ করেও নতুন করে তাই ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন তাঁরা। আর এর ফলশ্রুতিতেই বুধবার বিকেলে করিমকে মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো প্রস্তাব দিল বাগান। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির পাশাপাশি বড় অঙ্কের টাকার টোপ-সহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা। গোয়ার খবর, প্রথমে পিছিয়ে এলেও সালগাওকর কোচ নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। বেশি রাতে গোয়ায় করিমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, “বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।” বুধবার রাতে চাউর হয়ে যায় করিম নাকি ইস্তফা পত্র দিয়ে দিয়েছেন। যদিও এই নিয়ে কেউ সরকারিভাবে কিছু জানাননি। তবে সালগাওকর সচিব রাজ গোমসকে দিল্লিতে ফোনে ধরা হলে তিনি বললেন, “কাল কী হবে জানি না। আজ রাত পর্যন্ত করিম ইস্তফা দেননি। কলকাতার মিডিয়ার কাছ থেকেই খবর পাচ্ছি। আমাদের কোচ কিন্তু কিছু বলেননি। উনি কোচ হওয়ার সময় যা যা চেয়েছেন সব দিয়েছে সালগাওকর। তা হলে উনি ছেড়ে যাবেন কেন? উনি চলে যাবেন আমি মনে করি না।”
জানা গিয়েছে, সালগাওকরের সঙ্গে করিমের যা চুক্তি তাতে গোয়ার অফিস ক্লাব ছাড়াটা তাঁর পক্ষে সমস্যা হবে না। ক্লাব ছাড়তে হলে কোনও আর্থিক জরিমানা দেওয়ার কথা চুক্তিতে লেখা নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, করিম কি আই লিগের এই সময় সালগাওকর ছেড়ে দেবেন? যদি তিনি রাজি না হন তা হলে কী হবে। এক বাগান কর্তা বললেন, “বিদেশি কোচই নেব আমরা। তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে চাই না। দু’-এক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।”
কোচ নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মাঝে ওডাফারা অবশ্য অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের মনেও আশা এবং আশঙ্কা, কে কোচ হবেন তা নিয়ে। করিমকে নিয়ে ওডাফার মত ইতিমধ্যেই নিয়ে নিয়েছেন কর্তারা। টোলগে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছেন ভিসা সমস্যা মেটাতে। তবে তাঁরও ভোট করিমের দিকে। রহিম নবি-জুয়েল রাজারা দেশের হয়ে ম্যাচ খেলে ফিরে এসেছেন শহরে।
আই লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ শুরু হতে আর সাত দিন বাকি। এখনও কোচ ঠিক হল না বাগানে। সদস্য-সমর্থকরা আশঙ্কায়, এত কম সময়ে নতুন কোচ এসে সব কি সামলাতে পারবেন! |