খেলা শুরুর আগে শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্মারক হিসেবে যখন তাঁর মাথায় বিশেষ টুপি পরিয়ে দেওয়া হল, তখন যে রকম মেজাজে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, খেলা শেষে একেবারে উল্টো মেজাজে সি আর সেভেন।
হবে না কেন? ঘরের মাঠে এমন স্মরণীয় ম্যাচেই তাঁর এমন সাদামাঠা পারফরম্যান্স, যা পর্তুগিজ মহাতারকা হয়তো কোনও দিনই মনে রাখতে চাইবেন না। খেলা শেষ হওয়ার ১১ মিনিট আগে হেল্ডার পস্তিগা গোল শোধ না করলে বিশ্বের ১১৭ নম্বর দল উত্তর আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে মাঠ ছাড়তে হত রোনাল্ডোর পর্তুগালকে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি ঠিকই, তবে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে তিন নম্বরে থাকা দলের বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইংয়ে ১-১ ড্র করাটাই কি কম লজ্জার? স্বভাবতই মন খারাপ রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এ মরসুমে দুরন্ত ফর্মে থাকা রোনাল্ডোর। |
সান্তিয়াগোয় অবশ্য অন্য ছবি। বরাবরের মতোই হাসি মুখ ও উঁচু মাথা নিয়ে মাঠ ছাড়লেন লিওনেল মেসি। কিন্তু প্রাক বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকান পর্বে আর্জেন্তিনার আরও একটা জয়ের পরেও মেসি কম অসন্তুষ্ট নন। কারণ, চিলির বিরুদ্ধে ২-১ জয়টা বেশ কষ্টার্জিতই। মেসি পরিষ্কার বলেই দিয়েছেন, “মোটেই সহজে জিততে পারিনি আমরা। অবশ্য এমন আশঙ্কাই করেছিলাম।”
তবে বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ারে রোনাল্ডোর পর্তুগাল যতটা বিপন্ন, মেসির আর্জেন্তিনা কিন্তু ততটা নয়। পর্তুগাল গত শুক্রবার মস্কোয় ফাবিও কাপেলোর রাশিয়ার কাছে হারার পর গতকাল ড্র করায় রাশিয়ার চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট কম পেয়ে নিজেদের গ্রুপে বেশ পিছিয়ে। অন্য দিকে ন’টি ম্যাচে ২০ পয়েন্ট পেয়ে লাতিন কোয়ালিফাইং রাউন্ডে সবার উপরে আর্জেন্তিনা। |
তবু খুশি নন মেসি। তাঁর নিজের ও ইগুয়াইনের দেওয়া গোলে দল জেতার পর মেসি বলেছেন, “এই ম্যাচটায় চিলিকে জিততেই হত। তাই আমাদের পক্ষে জেতাটা যে বেশ কঠিন হবে, তা আগে থেকেই জানতাম। আমাদের গোলের পরে কিন্তু আর খেলার রাশ আমাদের হাতে পুরোপুরি ছিল না। সে জন্যই ভুগতে হয় আমাদের। বেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পুরো তিন পয়েন্ট পেলাম।”
রোনাল্ডোর পতুর্গাল আবার ইউরোপিয়ান কোয়ালিফাইংয়ে উত্তর আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও শেষ মুহূর্তের একেবারে আগে পর্যন্ত সফল হয়নি বিপক্ষের গোলকিপার রয় ক্যারলের অসাধারণ দক্ষতার জন্য। রোনাল্ডোর দলের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করে ব্যাপক খুশি আইরিশ নিয়াল ম্যাকগিন বলেন, “আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে পর্তুগালের মতো দলের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম গোলটা পেলাম।” কার স্মরণীয় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল আর শেষ পর্যন্ত কার হল! |