টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন পর্যন্ত যে দলের অস্তিত্বের কথাই জানতেন না বেশির ভাগ ক্রিকেটভক্তরা, টুর্নামেন্ট শুরুর দুটো ম্যাচের মধ্যে তাদের রূপকথার উত্থানবাইশ গজে এর চেয়ে রোমাঞ্চকর ঘটনা বোধহয় আর হয় না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে ঠিক এই ভাবেই রূপকথা রচনা করছে দক্ষিণ আফ্রিকার এক দল। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যাদের নিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে কোনও আগ্রহ তো ছিলই না। কতজন তাদের নাম জানত, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ থাকছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী সংস্করণে এই কাজটা করে দেখিয়েছিল ত্রিনিদাদ ও টোবাগো। আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন টিমগুলোকে পিছনে ফেলে তারা উঠে গিয়েছিল ফাইনাল পর্যন্ত। টোবাগো টিমের সেই স্পিরিটই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আবার ফিরে এল লায়ন্সের হাত ধরে। ঘরের মাঠে, চেনা পরিবেশে খেলার বাড়তি সুযোগ তারা পাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু পরপর দুটো ম্যাচে আইপিএল বক্স অফিসে সুপারহিট দুটো টিমকে হারাতে গেলে দরকার আরও বেশি কিছু। বিশেষ করে সেই দুটো টিমের একটা যদি হয় তিন বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন, ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। তার আগে টুর্নামেন্টে তাদের প্রথম ম্যাচে লায়ন্স হারিয়েছিল গত বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে।
দুটো ম্যাচেই টিম যখন জয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছে, বাউন্ডারির ধারে ভিড় করেছেন লায়ন্স ক্রিকেটাররা। অপেক্ষাকখন জয়ের মুহূর্তটা আসবে, আর তাঁরা জড়িয়ে ধরবেন জয়ের নায়কদের। এই টিম স্পিরিটই হয়তো সিংহের ডেরায় সিংহ-গর্জনের মূলমন্ত্র। লায়ন্সের সাফল্যে বাকি ক্রিকেটবিশ্ব কিছুটা অবাক হলেও আত্মবিশ্বাসে টগবগে লায়ন্সের কাছে তাদের জয়ের দৌড় অপ্রত্যাশিত নয়। “আমরা সব সময় জানতাম যে এই জায়গায় পৌঁছনোর ক্ষমতা টিমের আছে,” বলছেন লায়ন্স নেতা অ্যালভিরো পিটারসেন। তাঁর টিমের সাফল্যের রেখচিত্র উঠে আসে তাঁর পরের কথাগুলোয়। “মুম্বই ম্যাচে টিমের প্রত্যেকে খুব ঠান্ডা মাথায়, পুরো ফোকাস রেখে খেলেছে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধেও রান তাড়া করতে নেমে আমরা যথেষ্ট চাপে ছিলাম। কিন্তু সবাই মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছিল। ম্যাচটাকে শেষ দু’ওভার পর্যন্ত টানতে পারলে আমাদের জেতার ক্ষমতা আছে, সেই বিশ্বাসটা দলের সবার মধ্যে ছিল।”
তবে মাত্র দুটো ম্যাচ জিতেই খুব বেশি মাতামাতি করতে নারাজ তাঁরা। পিটারসেন যেমন জানাচ্ছেন, পরপর দুটো জয় তাঁরা উপভোগ করছেন ঠিকই। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সিডনি সিক্সার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়েও চিন্তা চালিয়ে যাচ্ছে টিম। “মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে জেতার পর মন থেকে আত্মতুষ্টি ঝেড়ে ফেলে চেন্নাই ম্যাচের উপর ফোকাস করা খুব জরুরি ছিল। এ বারও ঠিক তাই করব,” বলছেন পিটারসেন। দেশের মাঠে সিংহ-গর্জনের হ্যাটট্রিক হয় কি না, এখন সেটাই দেখার। |