দলীপের বাইশ গজ যদি এক দিকে ক্যানসারজয়ী যুবরাজ সিংহের টেস্ট প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হয়ে থাকে, তা হলে অন্য দিকে আর এক জনের টেস্ট অভিষেকের মঞ্চে ওঠার সিঁড়িও ছিল। তিনিঅশোক দিন্দা।
দলীপ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ জেতানো সাত উইকেট (১৫-৭-২৬-৭) নিয়ে বাংলার পেসার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরালো করে তুললেন।
বুধবার বিশাখাপত্তনমের মাঠে দিন্দার আগুন-ঝরানো বোলিং যখন চলছে। যখন তাঁর ইয়র্কার-বাউন্সার সামলাতে না পেরে একে একে ফিরতে হচ্ছে অভিনব মুকুন্দ, রবিন উথাপ্পাদের, হাতে নোটবুক সমেত তখন হাজির ছিলেন দুই জাতীয় নির্বাচক সাবা করিম এবং রজার বিনি। যাঁরা ঘনিষ্টমহলে এ দিন বলেই ফেলেছেন, এর পরেও টেস্ট টিমে দিন্দা না থাকলে অন্যায় হবে। বিনি তো এ-ও বলেন, বাংলার কোচ থাকার সময় এই মেজাজে দিন্দাকে কখনও দেখেননি। নৈছনপুরের যুবকের লাইন-লেংথ মুগ্ধ করেছে দক্ষিণাঞ্চলের জাতীয় নির্বাচককে।
|
দিন্দা নিজে কী বলছেন? টেস্ট দলের দরজা এ বার খুলবে? “এখনই বলতে পারছি না। আমি এ সব নিয়ে ভাবিও না। আমার কাজ শুধু পারফর্ম করে যাওয়া। বাকিটা তো আর আমার হাতে নেই,” বিশাখাপত্তনম থেকে ফোনে বললেন গত মরসুম থেকে বাংলার সফলতম পেসার। দিন্দা নিজে না বললে কী হবে, ‘টেস্ট বার্থ’ পাওয়ার দাবি অনেকটাই জোরালো করে দিয়েছে গত এক বছরে তাঁর পরিসংখ্যান। ঘরোয়া মরসুমে ৫৯ উইকেট। এশিয়া কাপ দলে থাকা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা। টেস্ট ক্যাপটাই যা অধরা।
আইপিএলে পুণে ওয়ারিয়র্সের বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের সঙ্গে সেশন যে তাঁকে অনেক সাহায্য করেছে, আগেও বলেছেন দিন্দা। এই পারফরম্যান্স কি ডোনাল্ডকে গুরুদক্ষিণা? “না, না। এখনও সেটা বলার সময় আসেনি। তবে ডোনাল্ড স্যর আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। তখনই আমাকে বলেছিলেন, তুমি যা ফর্মে আছ, তাতে তিন ফর্ম্যাটেই জাতীয় দলে থাকা উচিত। সত্যিই খুব মোটিভেট করেছিল কথাগুলো,” বলছেন দিন্দা। যিনি এ নিয়ে পরপর দু’বার দলীপ ফাইনালে তুললেন পূর্বাঞ্চলকে।
ইংল্যান্ড নয়, দিন্দার মাথায় এই মুহূর্তে চিপকের দলীপ ফাইনালই ঘুরছে। যেখানে প্রতিপক্ষ যুবরাজের উত্তরাঞ্চলকে হারিয়ে ওঠা মধ্যাঞ্চল। “আমরা গত বারের চ্যাম্পিয়ন। এ বারের ফাইনালে এর চেয়ে বড় মোটিভেশন আর কী হতে পারে?” কিন্তু পেস-অ্যাটাকের পুরো দায়িত্বটাই তো আপনার একার কাঁধে? চাপে থাকবেন? “চাপ তো থাকবেই। তবে চাপ থাকলেই আমার সেরাটা বেরিয়ে আসে,” আত্মবিশ্বাসী দিন্দা।
মহাসপ্তমীর সকালে মধ্যাঞ্চলের বিরুদ্ধে ট্রফি ধরে রাখার লড়াইয়ে নামছে পূর্বাঞ্চল। পুজোয় শহরে থাকতে না পারার দুঃখ থাকলেও সংকল্প থেকে নড়ছেন না দিন্দা। “পুজো মিস করব। কিন্তু পুজোর পরে ট্রফিটা নিয়েই ঘরে ফিরব।” |