|
|
|
|
পুজোয় ছাড় বাংলা চ্যানেলকে |
সেট টপ বক্সের জন্য চাপ দিতে হঠাৎ বন্ধ সম্প্রচার |
প্রভাত ঘোষ • কলকাতা |
‘ব্ল্যাকআউট’ শুরু হয়ে গিয়েছে। অ্যানালগ কেবল টিভিতে মাঝেমধ্যেই সম্প্রচার বন্ধ করে দিচ্ছে টিভি চ্যানেলগুলি। তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই সেট-টপ বক্স লাগিয়ে নিয়েছেন, তাঁদের এই ‘ব্ল্যাকআউটের’ কোপে পড়তে হচ্ছে না।
সেট-টপ বক্স লাগানোর সময়সীমা শেষ হতে এখনও দিন পনের বাকি। তার আগেই, গত সপ্তাহের বুধবার থেকে চার মেট্রো শহর কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি ও চেন্নাইতে রাত ১১টা থেকে সব ইংরেজি সিনেমার চ্যানেল অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ করা শুরু করে দিয়েছে। তার পর দিন থেকে হিন্দি বিনোদন চ্যানেলগুলির অধিকাংশই দুপুর ২টা থেকে ২ ঘণ্টা করে সম্প্রচার বন্ধ করে দিচ্ছে।
ডিজিটাল সেট-টপ বক্স না-লাগালে ১ নভেম্বর থেকে চার শহরে টিভি দেখা বন্ধ হয়ে যাবে বলে ঘন ঘন বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক। তার আগে চ্যানেলগুলির সংগঠন ইন্ডিয়া ব্রডকাস্টিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি মনজিত সিংহ দেশের সব মাল্টিপল সিস্টেম অপারেটরকে (এমএসও) চিঠি পাঠিয়ে দেশের চার মেট্রো শহরে কবে, কখন, কোন ধরনের চ্যানেলের অ্যানালগ সম্প্রচার কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হবে, তা জানিয়ে দিয়েছেন। সেই সময়সূচি মোতাবেক গত ১৫ তারিখ রাত এগারোটা থেকে হিন্দি সিনেমার সব ক’টি চ্যানেলের সম্প্রচার কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। ১৮ তারিখ রাত ১১টায় ইংরেজি, হিন্দি খবর ও ব্যবসার চ্যানেলগুলির সম্প্রচার বন্ধ হবে। একই ভাবে ২২ তারিখ বন্ধ করা হবে হিন্দি বিনোদন চ্যানেলগুলি।
কিন্তু প্রশ্ন হল, নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই চ্যানেলগুলি মাঝে মাঝে অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ করে দিচ্ছে কেন? ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অ্যানালগ সম্প্রচার দেখার অধিকার তো গ্রাহকদের আছে!
জি টিভি নেটওয়ার্কের সিইও জহর গোয়েলের দাবি, “অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল সম্প্রচারে কী ভাবে যাওয়া হবে, তা ঠিক করার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। তাদের পরামর্শ মতো অল্প সময়ের জন্য অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ থাকছে।” সংশ্লিষ্ট মহলের একটি অংশের মতে, কয়েকটি এমএসও এখনও চ্যানেলগুলির সঙ্গে ডিজিটাল সম্প্রচার সংক্রান্ত চুক্তি করেনি। তাদের চাপ দিতেই এ ভাবে সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
১ নভেম্বর থেকে যাতে অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ না হয়, সে জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। গোড়ায় চিঠি পাঠান নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার পর চিঠি দিয়ে সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন নতুন মুখ্যসচিব। ক’দিন আগে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অম্বিকা সোনিও বলেছেন, অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল সম্প্রচারে যাওয়ার ব্যাপারে কোনও রাজ্য আপত্তি জানালে, কেন্দ্র তা বিবেচনা করবে। তা হলে এই চাপ কেন?
মন্ত্রকের ব্রডকাস্টিং বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব সুপ্রিয়া সাহু বলেন, “বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ার অর্থ সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া নয়।” মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। সেটা বড়জোর ডিসেম্বর হতে পারে। ফিরহাদও বলেছেন, “আমরা কিছু বাড়তি সময় চেয়েছি। সেটা ডিসেম্বর অবধি হলেও এমএসও-রা অনেকটা গুছিয়ে নিতে পারবে।”
আপাতত রাজ্যের আর্জি বিবেচনা করে কেন্দ্র যে ছাড় দিয়েছে তা হল, উৎসবের মরসুমে বাংলায় বিনোদন ও খবরের পে-চ্যানেলগুলির অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ করা হবে না। এমএসও সিটি কেবলের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা সুরেশ শেঠিয়া বলেন, “এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার অনুরোধ জানিয়েছিল। আমরা সেই অনুরোধের কথা চ্যানেলগুলির সংগঠনকে জানাই। তারা সেই অনুরোধ রাখতে রাজি হয়েছে।” এই অনুরোধ রক্ষার মেয়াদ কত দিন? শেঠিয়া জানিয়েছেন, পুজো পার করে বড়দিনের ছুটির সময়েও এই ছাড় চালু থাকবে। ফলে নতুন বছর না পড়া পর্যন্ত রাজ্যে বাছাই করা চ্যানেলের অ্যানালগ সম্প্রচার চালু থাকবে। |
|
|
|
|
|