|
|
|
|
|
|
পুজোয় বাড়তি খরচ |
|
হাঁটুন কিস্তির পথে
তিন মাথার মোড়ে রোল রোজই খাই। আজ কিন্তু তিন তারা হোটেল।
পুজোর ক’দিন এমন বেমক্কা খরচ কেন করি আমরা? কী করলে পস্তাতে
হবে না এর জন্য? দেবপ্রিয় সেনগুপ্তকে জানিয়ে দিলেন অনুভব চন্দ |
|
পুজোয় তো খরচ করতেই হবে। নতুন কাপড়, জুতো। বাড়ির জন্যও তো রয়েছে হরেক কেনাকাটার চাপ। উৎসবের দিনে বাড়িটাকেও একটু রঙিন, একটু অন্য রকম লাগতে হবে। তাই হয়তো পর্দা বদলানোর চাপ। সোফার ঢাকনার রঙটাও কেমন একটু ম্যাড়ম্যাড়ে লাগছে। কিন্তু দু’মাস আগেও মনে হয়নি এ কথা। আসলে সমস্যাটা এখানেই। আকাশে ওই সাদা মেঘের পাহাড়, শহরের আনাচ কানাচ থেকে কাশফুলের উঁকিও মনটাকে রঙিন করে তোলে। হঠাৎ বেশ তো চলছে এই বোধ ডিগবাজি খায়। মনের সঙ্গের ঘরের রংও বদলে ফেলার ইচ্ছা তাড়া করে ফেরে। বাড়ে খরচের বহর। তাই না? তা হলে? |
|
উপায় একটাই। সাদা মেঘের উঁকি-ঝুঁকির অনেক আগেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আগমনীর সুর বাজানো। কী ভাবে?
মাসের খরচ মিটিয়েও ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য তহবিল গড়তে আয়ের ২৫-৪০% সঞ্চয় করা উচিত। এটা দীর্ঘমেয়াদি খরচের প্রেক্ষিতে সঞ্চয়। পুজোর মতো স্বল্পমেয়াদি খরচ মেটাতে হলে কিন্তু ওই দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ের তহবিলে হাত দিলে চলবে না। এ জন্য আলাদা ভাবে টাকা জমাতে হবে। এবং ধাপে ধাপে। কারণ আগেই বলেছি, পুজোর খরচটা বাড়তি। সে জন্যই পুজোয় কী চাই, তার আগাম পরিকল্পনা যেমন জরুরি, তেমনই উচিত সে জন্য আলাদা ভাবে সঞ্চয় করার অভ্যাসও।
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পুজোর চাহিদা ও খরচের আগাম একটা প্ল্যান ছকে ফেলুন। যা চাই, সবই তো একসঙ্গে কিনতে পারব না। তাই কোনটাকে আপনি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, তার ভিত্তিতেই তৈরি করুন চাহিদার তালিকা। কবে পুজো, তা তো জানাই আছে। এটাও জানেন গত কয়েক বছর ধরে আপনার খরচ কী রকম। যেমন, বাড়ির মানুষের জন্য তো কিনতেই হয়। জানেন তাঁরা ক’জন। এটাও জানেন আত্মীয়-স্বজনের কার জন্য কী দিতে হয়। এর বাইরেও তৈরি থাকুন হঠাৎ একটা দামি রেস্তোরাঁয় হই হই করে ঢুকে পড়ে বাসনা মেটানোর রেস্তর জন্য। পুজো শেষ করার পরেই জেনে নিন পরের পুজো কোন মাসে পড়েছে। সেই সময়ের কমপক্ষে ৬-৯ মাস আগে থেকেই শুরু করতে হবে চাহিদার ভিত্তিতে এই বিশেষ তহবিল গড়ার কাজটা। প্রতি মাসে একটু একটু করে সঞ্চয় করতে হবে। যেহেতু এটি স্বল্পমেয়াদি সঞ্চয়, তাই ঝুঁকিপূর্ণ নয় এমন তহবিলেই টাকা জমানো নিরাপদ। যেমন ব্যাঙ্কের নানা আমানত বা ঋণপত্র ভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখতে পারেন। এ ছাড়া হাতে কিছু টাকা হঠাৎ এসে গেলে সেটাও পুজোর কোনও বড় খরচ (যেমন গাড়ি কেনা) মেটাতে আলাদা ভাবে রাখা যাতে পারে।
এ ভাবে একটু একটু করে টাকা জমাতে পারলে নিজের উপর আস্থা বাড়ে। পুজোর মুখে হঠাৎ করে তা হলে আর নিজের উপর চাপ তৈরি হবে না। যেমন পরীক্ষার আগে সারা বছর পড়লে নিজেকে ভাল প্রস্তুত করে তোলা যায়। পরীক্ষার কিছু দিন আগে পড়তে শুরু করলে সেই প্রস্তুতি ততটা শক্তপোক্ত হবে কি? ফলে প্রস্তুতি নিন আগে থেকেই। আর প্রশ্নপত্র তো জানাই। নিজেই তো চাহিদা ও অগ্রাধিকারের তালিকাটা তৈরি করেছেন। ব্যস লেগে পড়ুন। পারলে এই নভেম্বর থেকেই। |
লেখক ক্লায়েন্ট অ্যাসোসিয়েটস-এর প্র্যাকটিস হেড |
|
|
|
|
|