হোটেলের নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সেবক রোডে মেয়র হোটেল নিয়ে নানা বিতর্ক দানা বাঁধায় আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে যাবতীয় নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেন মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব। মঙ্গলবার ওই হোটেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে শুনানির পর তিনি ওই নির্দেশ দেন। ৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে। তার আগে ওই হোটেলে সমস্ত রকম নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত হোটেল মালিক কাজল সরকার বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনও নোটিশ পাইনি। ওই নোটিশ পেলেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেব।”
মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব জানিয়ে দেন, হোটেলের নির্মাণ কাজ নিয়ে ১৩৩, ১৪৪ ধারায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ভাড়াটেদের ভাড়া দেওয়া নিয়েও বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়েছে। নির্মাণ কাজ চলায় সংলগ্ন ফুটপাতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সমস্যার কথাও অভিযোগে রয়েছে। এ দিন শুনানির পর ৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওই হোটেলে সমস্ত রকম নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
অন্য দিকে ফুটপাতের একাংশে বাঁশের মাচা বেঁধে গত কয়েক মাস ধরেই অবৈধ ভাবে নির্মাণ কাজ চালানোর অভিযোগ রয়েছে ওই হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বারবার বলার পরেও এখনও তা না খোলায় পুরসভার তরফেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, ‘‘হোটেল মালিক ফুটপাতের অংশে করা বাঁশের মাচা খুলে দিচ্ছেন বলেই জানিয়েছিলেন। |
মঙ্গলবার পর্যন্ত খোলা হয়নি বাঁশের ভারা। ফুটপাতের উপরে ঝুলছে বিদ্যুতের
তার।
শিলিগুড়ির সেবক রোডের সেই হোটেলের সামনে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
কেন এখনও পুরোটা খোলেননি দেখা হচ্ছে।” ওই হোটেল ভবনের বাড়াটের একাংশের অভিযোগ, নির্মাণ কাজ চালানোর সময়ে ঝুরঝুর করে বালি-পাথর খসে পড়ছে। একাধিক জায়গায় ফাটল ধরেছে বলে ভাড়াটের অভিযোগ।
এ দিকে হাকিমপাড়ায় আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোডে একটি নতুন নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে অবৈধ ভাবে পার্কিংয়ের জায়গায় দোকান, অফিস তৈরির অভিযোগ উঠেছে। রাজা রামমোহন রায় রোড বাই লেনে ঢোকার মুখে একটি ভবনের ওপরের অংশে অবৈধ ভাবে নির্মাণ কাজ চালানোর হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
সেবক রোড, বর্ধমান রোড, বিধান মার্কেট এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠায় আজ, বুধবার থেকে তাদের কাছে পুরসভা নোটিশ পাঠাতে শুরু করছে। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “সেবক রোড, চানাপট্টি, বর্ধমান রোড-সহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ নির্মাণের বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে পুরসভার কাছে। সেগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বুধবার থেকেই তাদের কাছে অবৈধ অংশ ভেঙে দিতে বলে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। তাতে কাজ না হলে পুরসভার তরফে পুজোর পরেই অভিযান চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।”
সম্প্রতি সেবক রোডে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি শপিং মলের কাছে অবৈধ ভাবে নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। রবিবার ছুটির দিনে রাতের অন্ধকারে ছাদ ঢালাই করে অবৈধ নির্মাণ কাজ চালানো হচ্ছিল জানতে পেরে পুরসভার বাস্তুকাররা গিয়ে কাজ বন্ধ করান। মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের নকশা নিয়ে পুরসভায় দেখা করতে বলা হয়েছিল। পুরসভারই একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১০ সালের জুন মাস থেকে ওই নির্মাণ সংস্থাকে অন্তত ৩ বার অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে নোটিশ পাঠিয়ে নকশা নিয়ে পুরসভায় দেখা করতে বলা হয়েছিল। অভিযোগ, কোনও বারই তারা নকশা দেখাননি। পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধ ভাবে নির্মাণ কাজ করেছেন। আরও বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে।
বর্ধমান রোডে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠায় মালিকপক্ষকে এ দিন নকশা নিয়ে পুরসভায় দেখা করতে বলা হয়েছিল। তবে তারা এ দিন দেখা না করায় অবৈধ নির্মাণের অংশ ভেঙে দিতে বলে বুধবার তাদেরও নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। বর্ধমান রোডে অপর একটি নতুন নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রেও পার্কিং ব্যবস্থা রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। |