বিদায় নিল বর্ষা, শরৎ হটিয়েই হাজির হেমন্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এক রকম ঝপ করেই বদলে গেল আবহাওয়া। ছিল বর্ষা। তার পরে হঠাৎই চলে এল হেমন্ত। মাঝখান থেকে গোটা শরৎকালটাই বেমালুম উধাও!
মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় শনিবার পর্যন্ত অস্বস্তিকর গুমোট আবহাওয়া চলছিল। সেটা বদলে গিয়ে গত দু’দিন ধরে ত্বকে টান পড়ছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় বেশি রাতে এবং ভোরের দিকে পাখা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তিন দিন আগেও ভোরের সূর্য ঢাকা ছিল ঘন কালো মেঘে। সেই মেঘ আর নেই। তার বদলে জলাশয়ের উপরে তৈরি হচ্ছে কুয়াশার আস্তরণ।
দু’-দু’টি নিম্নচাপ এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখা সরে যাওয়ার পরে আকাশ হঠাৎই ভারমুক্ত হয়ে গিয়েছে। শরতের স্তরমেঘ এ বার আর দেখা যায়নি আকাশে। দেরিতে হলেও হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে একটু একটু করে, তবে আশ্বিনের বিদায় বেলায়। অর্থাৎ কাগজে-কলমেও হেমন্ত এসে যাচ্ছে দু’-এক দিনের মধ্যে। বায়ুপ্রবাহের ঘনঘন পরিবর্তনের জাঁতাকলে পড়ে হারিয়েই গেল শরৎ।
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে যে-নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি ছিল, সোমবার সে বিদায় নিয়েছে। সঙ্গে নিয়েছে মৌসুমি বায়ুকেও। মঙ্গলবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, এ দিন কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য থেকেই বর্ষা বিদায় নিয়েছে। বর্ষা বিদায় নিয়েছে গোটা পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারত থেকেও। বৃষ্টি তাই পুজোর উদ্যোক্তা এবং দর্শকদের তেমন বিপদে ফেলতে পারবে না বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা।
রবিবার সকালে সূর্য চাপা পড়ে গিয়েছিল ঘন মেঘে। মঙ্গলবার কিন্তু আকাশ ছিল পরিষ্কার। সকালে কোথাও কোথাও হাল্কা কুয়াশা হয়েছে। তবে আবহবিদেরা এটাকে কুয়াশা বলতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, বাতাসে এখনও যথেষ্ট জলীয় বাষ্প রয়েছে। তাপমাত্রা (এ দিন ভোরে যা ছিল ২২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হঠাৎ কমে যাওয়ায় সেই জলীয় বাষ্প জলাশয়ের উপরে ঘনীভূত হয়ে কুয়াশার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, স্তরমেঘ যখন মাটির কাছাকাছি নেমে আসে, তখনই কুয়াশা হয়। সেই স্তরমেঘ তৈরি হওয়ার পরিস্থিতি এখনও দেখা যাচ্ছে না। এখন যা হচ্ছে, তা বাতাসের অতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের জন্য। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, রাতের তাপমাত্রা এখন একটু একটু করে কমবে। তাই হঠাৎ ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। সেই জন্য হাতের কাছে মাফলার কিংবা হাল্কা গরম পোশাক রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহবিদেরা। |