|
|
|
|
‘বাধা’ সরিয়ে বোর্ড-মিটিং হলদিয়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
তৃণমূল কাউন্সিলর ছাড়াই ফের বোর্ড-মিটিং করতে হল বামফ্রন্ট পরিচালিত হলদিয়া পুরবোর্ডকে।
মঙ্গলবার হলদিয়া পুরসভার দ্বিতীয় উন্নয়নমূলক বোর্ড-মিটিং ছিল। বৈঠকে এলেও তৃণমূলের ১১ জন কাউন্সিলর প্রথম বোর্ড-মিটিংকে ‘অবৈধ’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে বেরিয়ে আসেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে নিজেদের ডাকা ওই বৈঠক ‘বৈধ’ দাবি করে (১৫ জন বাম কাউন্সিলর ছিলেন) বোর্ড-মিটিং সেরে নেন সিপিএমের পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডা শেঠ।
পুরবোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মূলত ওয়ার্ডগুলির উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই পথঘাটের উন্নয়নে ১০ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘স্কিম’ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই খাতে মোট ৩ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা খরচ করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। আবার যে সমস্ত ওয়ার্ডে প্রয়োজনের তুলনায় কম টিউবয়েল, সেখানে টিউবওয়েল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোট ১৬টি নতুন টিউবয়েল বসানো হবে। এ ছাড়াও পুরকর্মচারীদের জন্য উৎসব উপলক্ষে ১ হাজার টাকা বোনাস ও ১০ হাজার টাকা অগ্রিমের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উপপুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, “বিরোধীরা বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর থাকায় বোর্ড-মিটিং অবশ্য হয়েছে।”
গত ৩ জুন পুরভোটের পরে ২৬ জুন শপথ গ্রহণ করে হলদিয়ার বাম পরিচালিত নতুন পুরবোর্ড। ২৩ জুলাই প্রথম উন্নয়নমূলক বৈঠকের ডাক দেওয়া হলেও পুরসভার বিরোধী তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিক্ষোভের জেরে তা ‘ভেস্তে’ যায়। ৫ সেপ্টেম্বর ফের বোর্ড-মিটিং করার ডাক দেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুরসভার গেটের বাইরে ‘বেহাল’ নিকাশির সমস্যা নিয়ে তৃণমূল সমর্থিত পুর-নাগরিকদের একাংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ওই দিন। আন্দোলনের জেরেই পুরভবনে ঢুকতে পারেননি বলে দাবি করেন তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রথমে পিছু হঠলেও শেষ মুহূর্তে অবশ্য বাম কাউন্সিলররা পুরভবনে ঢুকে বোর্ড-মিটিং করেন। এ দিকে, ওই মিটিংয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধী তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। রাজ্য পুর দফতরেও বিষয়টি জানান তাঁরা। যদিও এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা এখনও এসে পৌঁছয়নি পুরসভায়।
এর মধ্যেই ডাকা দ্বিতীয় বোর্ড মিটিং যে খুব একটা নির্বিঘ্ন হবে না, তা আঁচ করা গিয়েছিল আগেই। এ দিন দুপুর ১টায় শুরু হয় বৈঠক। বিরোধী তৃণমূলের ১১ জন কাউন্সিলর আসেন বৈঠকে। শুরুতেই ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দন মাজি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেখারানি দেব ৫ সেপ্টেম্বরের বোর্ড মিটিংকে অবৈধ ঘোষণার দাবি তোলেন। তাতে সম্মতি জানান বিরোধী দলনেতা দেবপ্রসাদ মণ্ডল। বিকেল ৪টে পর্যন্ত এই নিয়ে চাপানউতোর চলতে থাকে। বাম কাউন্সিলররা ওই মিটিংয়ের বৈধতা নিয়ে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি জানিয়ে এ দিনের বৈঠক শুরু করার আর্জি জানান। তখন দেবপ্রসাদবাবু সরকারি নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত এ দিনের বোর্ড মিটিং স্থগিত রাখার পাল্টা আর্জি জানিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে সভাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “আমাদের কথা শোনা হয়নি। তাই আমরা এই বোর্ড মিটিং মানছি না।” পুরপ্রধান তমালিকাদেবী অবশ্য বলেন, “আমরা উন্নয়নের প্রশ্নে মানুষের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের বোর্ড-মিটিং সফল হয়েছে। আশা করি ওঁরা আগামী দিনে সহনশীল হবেন।” |
|
|
|
|
|