মোহনবাগানে মরসুমের শুরু থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত টোলগে ওজবে। ইস্টবেঙ্গলের ছাড়পত্র পাওয়া থেকে শুরু করে ওডাফার সঙ্গে মনোমালিন্য নিয়ে বিতর্ক। নিজের ফিটনেস সমস্যা, গোলের খরা সব মিলিয়ে তাই ভরা শরতেও কালো মেঘের আনাগোনা টোলগের এক টুকরো আকাশে। বোধহয় সে কারণেই এ বার মা দুর্গার দ্বারস্থ বাগানের অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার। তবে শুধু একার জন্য নয়। পুরো মোহনবাগান দলের জন্যই তিনি মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করবেন।
তবে হয়তো শহরের প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরা তাঁর হয়ে উঠবে না। কারণ, ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার গভীর রাতে তড়িঘড়ি অস্ট্রেলিয়া উড়ে যেতে হল টোলগেকে। যা খবর, তিনি হয়তো পুজোর আগে ফিরতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে পুজোর পর এয়ার ইন্ডিয়া ম্যাচেও পাওয়া যাবে না তাঁকে।
কিন্তু কলকাতায় থাকতে না পারলেও মঙ্গলবার সকালে মোহনবাগানের এই স্ট্রাইকার পরিষ্কার করে দেন, তিনি মা দূর্গার কাছে পুজোয় কী প্রার্থনা করবেন। প্র্যাক্টিস সেরে বাড়ি ফেরার গাড়িতে ওঠার সময় টোলগে বলেছিলেন, “একটা জয় ভীষণ দরকার আমাদের। তা হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি তো ঠিক করেছি এ বার ঠাকুরের কাছে মোহনবাগানের সাফ্যলের জন্য প্রার্থনা করব। মোহনবাগানকে এ বার ট্রফি দিতেই হবে।”
গোল না পাওয়ার যন্ত্রণাটাও টোলগের ষোলো আনা। সবুজ-মেরুন জার্সিতে চার ম্যাচে গোল করেছেন ৩টি। আই লিগের দু’টো ম্যাচে একটাও নয়। হতাশ গলায় বলছিলেন, “দল হারছে। আমি গোল পাচ্ছি না। আমাকে গোল করতে হবে। দলকেও জেতাতে হবে। মা দুর্গা নিশ্চয়ই আমার প্রার্থনা শুনবেন।” কিন্তু কলকাতায় বসে সেই প্রার্থনা আর করা হল না তাঁর। তবে কম্পিউটার যাঁর দিন-রাতের সঙ্গী, সেই টোলগে হয়তো ইন্টারনেটের মাধ্যমে কলকাতার পুজোয় মজে যাবেন, প্রার্থনাও করবেন। অস্ট্রেলিয়াতে বসেই। |
আড়াই বছর কলকাতায় খেলছেন টোলগে। বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসব সম্পর্কে অনেকটাই জেনে ফেলেছেন। শারদীয়াকে ঘিরে বাংলার আবেগের জোয়ারের সঙ্গে নিজেকেও তাই ভাসিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল অস্ট্রেলীয় ফুটবলারের। শনিবার থেকে পুজোর পাঁচ দিন নিজের পরিকল্পনাও সেরে রেখেছিলেন। বলছিলেন, “এ বার পুজোটা আমার বান্ধবী সেরাপের সঙ্গে কাটাব। দুর্গাপুজোর সময় কলকাতা উন্মাদনায় ভাসে। সেরাপের সঙ্গে আমি সেই উন্মাদনাটা ভাগ করে নিতে চাই। আমার বাঙালি বন্ধু যারা আছে, তাদের সঙ্গেও জমিয়ে আড্ডা দেব। মন্ডপে গিয়ে ঢাক বাজাতে আমার খুব ভাল লাগে। গত বছর পুজোতেও বাজিয়েছিলাম। এ বারও সুযোগ পেলেই বাজাব। ঢাকের শব্দটা কেমন অদ্ভুত। মন ভাল হয়ে যায়।” তখনও টোলগে জানতেন না, রাতে ভিসা সমস্যায় পড়ে তাঁকে তড়িঘড়ি দেশ ছাড়তে হবে।
অস্ট্রেলিয়া চলে গেলেও একটা বিশ্বাস কিন্তু সঙ্গে নিয়েই যাচ্ছেন টোলগে। “মোহনবাগান খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, দুর্গাপুজোর পর সব ঠিক হয়ে যাবে। দল আবার উঠে দাঁড়াবে।”
|
মা, পুজোয় চাই
• গোলের অভ্যাসে ফিরতে
• ক্লাবের দেরাজে একটা ট্রফি
• বাগানের গুমোট পরিবেশে তাজা হাওয়া |
|