সন্তোষ কাশ্যপ বিদায়ের পর বাহাত্তর ঘণ্টা কেটে গেলেও নতুন কোচ ঠিক করতে পারল না মোহনবাগান। প্রেসিডেন্ট টুটু বসুর লি রোডের বাড়িতে দফায় দফায় আলোচনার পরও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কর্তারা। কারণ তাঁরা যে যে শর্তে কোচ চাইছেন, তা পাওয়া যাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে, কোচ হতে গেলে তিনটি শর্ত মানতে হবে। এক) বাজেটের মধ্যে আর্থিক চুক্তি করতে হবে। দুই) কর্তাদের সঙ্গে সখ্যতা রাখতে হবে। তিন) ফুটবলার সামলানোর জন্য ভাল ম্যান ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা। |
সন্তোষ-বিসর্জনের পরে মোহনবাগানের ‘কোচ-সয়ম্বর’ সভায় বহু দেশি-বিদেশি নাম ঘুরপাক খেলেও, পাল তোলা নৌকায় এখনও আলোর ‘দেখা নাই রে’। করিম বেঞ্চারিফা থেকে ডেভিড বুথ, সুব্রত ভট্টচার্য থেকে সুখবিন্দর সিংহ— সবুজ-মেরুনের কোচ হওয়ার ঢেউ-এ সবাই তাই ভাসছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে যাঁকে নিয়ে মহা-জল্পনা হচ্ছিল, সেই ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ স্টিভন কনস্ট্যানটাইন রাত গড়াতেই ‘সরি’ লিখে ই-মেল পাঠিয়ে দিলেন কর্তাদের। আগামী দিনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে ইউরোপ থেকে তাঁর বার্তা, “আমাকে মোহনবাগান প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি সেটা গ্রহণ করিনি। ইউরোপে আমি এখন খুব ভাল আছি। এই মুহূর্তে পরিবারকে ছেড়েও বাইরে কোথাও যেতে চাই না।”
কনস্ট্যানটাইন সরে দাঁড়ানোয় এখন আরও সমস্যায় বাগান। করিম বেঞ্চারিফাকে এখনও ছাড়তে রাজি নয় সালগাওকর। ফলে বিদেশি বলতে ডেভিড বুথ। তিনিও যা টাকা হাঁকছেন তাতে আবার চক্ষু চড়কগাছ কর্তাদের। এর মধ্যে হঠাৎ-ই ই পি এলের ক্লাব লেভার কুসেনের প্রাক্তন কোচ রবিন দত্তর কথা বলছেন কেউ কেউ। শোনা যাচ্ছে, স্পনসর ইউ বি গ্রুপ না কি ট্রেভর মর্গ্যানের মতো কোনও দাপুটে বিদেশি কোচ চাইছেন। এবং দীর্ঘমেয়াদী হিসাবে। সেটা ক্লাব কর্তাদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। এখন সমস্যা হল, ভাল বিদেশি কোচ কোথায়? তবে অন্ধকারের মধ্যে আশার আলো না কি একটাই, শোনা যাচ্ছে করিম বেঞ্চারিফা বুধবার সকাল পর্যন্ত ফের সময় চেয়েছেন। সালগাওকরের সঙ্গে আরও একবার কথা বলে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। বিদেশি কোচ একান্তই না পাওয়া গেলে স্বদেশি কোচ হিসাবে সুখবিন্দার সিংহের নাম উঠেছে। কোনও কোনও মহল থেকে আবার ভাসানো হচ্ছে সুব্রত ভট্টাচার্যের নাম।
কিন্তু কবে সরকারিভাবে ঘোষণা হবে নতুন কোচের নাম, কেউ জানেন না। ওডাফা-টোলগেরা অবশ্য ফিজিও-র তত্ত্বাবধানে নিজেদের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন পুরোদমে। কোচের জন্য অপেক্ষা না করে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পরিশ্রম করছেন নিজেদের স্বার্থেই। আলো দেখার আশায়। কর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ফোন ধরছেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা বলছেন, দু’একদিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। সদস্য-সমর্থকদের উদ্বেগ অবশ্য বাড়ছে। কারণ দশ দিনের মধ্যেই আবার আই লিগের ম্যাচ খেলতে নামতে হবে মোহনবাগানকে।
|
বুধবারে কলকাতা লিগে
প্রয়াগ ইউনাইটেড: রেলওয়ে এফসি (যুবভারতী, ২-১৫)। |