আরও একটা হতাশাজনক হার। হারের চেয়েও যেটা দেখে বেশি খারাপ লাগছে সেটা হল, হার দুটোর ব্যবধান। প্রথমে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কাছে ৫২ রানে। তার পর অকল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৪ বল বাকি থাকতে সাত উইকেটে। মনের উপর দিয়ে কী যাচ্ছে সেটা বলে বোঝাতে পারব না। এই দুটো জঘন্য হারের জন্য কেকেআরের সমর্থকদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।
সোমবারের ম্যাচে ন’নম্বর ওভার শুরুর সময় আমরা ৭২-১ ছিলাম। দশ নম্বর ওভারের শেষে সেটাই কিনা হয়ে দাঁড়াল ৭২-৪! আরও এক বার ছন্দটা হারিয়ে গেল। যেটা আর ফিরে পাওয়া গেল না। আমার খুব হতাশ লাগছে ভেবে যে, কেকেআরের মতো চ্যাম্পিয়ন দল ঘুরে দাঁড়াতে পারল না। যে দলগুলো ধারাবাহিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, ক্রিকেটবিশ্বে তারাই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। এদের ঘিরে একটা ঐতিহ্য তৈরি হয়। যেমন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমটাকে ঘিরে। নব্বইয়ের দশকের শেষার্ধ আর গত দশকের বেশির ভাগ সময় জুড়ে যে জায়গাটা অস্ট্রেলিয়ার দখলে ছিল।
সারা জীবন আমি যোদ্ধার মতো খেলেছি। যে জন্য গত রাতে আমার টিম যে পাল্টা লড়াই দিতে পারল না, সেটা আরও বেশি করে খারাপ লাগছে। হ্যাঁ, দশম ওভারটায় আজহার মেহমুদ দুর্দান্ত বল করেছিল। হ্যাঁ, ও-ই আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিল। হ্যাঁ, ওর ওভারটাই ম্যাচের রং পাল্টে দিয়েছিল। কিন্তু আমার এখনও মনে হয়, আমারা আরও বেশি লড়াই করতে পারতাম।
অকল্যান্ড ম্যাচে ব্রেট লি-র বদলে সাকিব আল হাসানকে খেলানো নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। সিদ্ধান্তটার পিছনে ছিল অকল্যান্ডের স্পিন খেলার অক্ষমতা। আমি এখনও সিদ্ধান্তটাকে সমর্থন করি। পিচে ভেজা-ভেজা ভাব ছিল। সাকিবের বল গ্রিপ আর টার্ন করছিল। তবে হয়তো কালকের দিনটা ওর ছিল না। পুরো ম্যাচটাই তো আজহার মেহমুদ নিয়ন্ত্রণ করল। ওকে উপরের দিকে ব্যাট করতে পাঠানোর সিদ্ধান্তটা অকল্যান্ড বেশ ভাল নিয়েছিল। ওর বিরুদ্ধে আমাদের স্পিনাররা খুব সুবিধে করতে পারেনি। আজহার যে কেন অসাধারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার, সেটা আরও এক বার দেখিয়ে দিল। কোনও অজুহাত দেব না। সত্যি কথা হল, শেষ দুটো ম্যাচে আমরা ভাল খেলতে পারিনি। |
আমরা এখন ডারবানে। এখানে কেপটাউনের মতো ঠান্ডা নেই। আশা করছি বুধবার আমরাও পার্থ স্কর্চার্সকে ঝলসে দিতে পারব। ওদের দলে ভাল ভারসাম্য আছে। কিন্তু আমাদের চোট পাওয়া আত্মসম্মানও টিমকে তাতিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আজ নেটে খুব ভাল প্র্যাক্টিস করেছে টিম। আমিও অনেকক্ষণ নেটে কাটিয়েছি। মুভমেন্ট একদম ঠিকঠাক ছিল। আগের সেশনগুলোর মতো ব্যাটে-বলেও হচ্ছিল। লক্ষণ পরিষ্কারট্যাঙ্কে যথেষ্ট বারুদ মজুত।
বুধবারের ম্যাচে কী টিম নামাব সেটা নিয়ে এখনও ভাবিনি। তবে হারলেই প্রথম এগারোয় বিরাট বদল আনতে হবে, আমি এই ফর্মুলা বিশ্বাস করি না। আমার মতে ধারাবাহিক ভাবে, ন্যায্য ভাবে সুযোগ পাওয়াটা যে কোনও ক্রিকেটারের প্রাপ্য। হ্যাঁ, ম্যাচ জেতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটাই তো দলের আসল লক্ষ। কিন্তু আমার প্রথম না দ্বিতীয় কোন একটা কলামেই তো লিখেছিলাম কেকেআরের মূল লক্ষ হল দলের ক্রিকেটারদের একটা ভাল পরিবেশ উপহার দেওয়া। যাতে ওরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারে।
|
আজ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে |
অকল্যান্ড : টাইটানস (ডারবান)
কেকেআর : স্কর্চার্স
(ডারবান, রাত ৯-০০) |
|