সমন্বয়েই এগোবে দুই শহরের উন্নয়ন |
গত ২৯ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর শহরের ফেডারেশন হলে আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন
মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি। নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা নিয়ে হয়
আলোচনা। সঞ্চালনায় ছিলেন সুমন ঘোষ। বাছাই প্রশ্নোত্তরের প্রথম পর্ব আজ। |
এখন চারিদিকেই ফ্ল্যাট হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নিয়মের তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠছে ওই সব বহুতল। নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ভবিষ্যতে এই সমস্যা ভয়ঙ্কর রূপ নেবে। কেরানিতলা থেকে উড়ালপুল পর্যন্ত যে ডিভাইডার হয়েছে তাতে অন্য লেনের কিছু দেখা যায় না। টার্নিং নিতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সুজিত দত্ত, ইঞ্জিনিয়ার।
|
এখন চারিদিকেই ফ্ল্যাট হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নিয়মের তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠছে ওই সব বহুতল। নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ভবিষ্যতে এই সমস্যা ভয়ঙ্কর রূপ নেবে। কেরানিতলা থেকে উড়ালপুল পর্যন্ত যে ডিভাইডার হয়েছে তাতে অন্য লেনের কিছু দেখা যায় না। টার্নিং নিতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সুজিত দত্ত, ইঞ্জিনিয়ার।
|
এটা ঠিক একের পর এক ফ্ল্যাট উঠছে। কিন্তু বিষয়টি পুরসভার দেখার কথা। পর্ষদ কেবলমাত্র কয়েকটি বিষয় দেখে ফ্ল্যাট বানানোর ছাড়পত্র দেয়। তার মধ্যে মুখ্য যে দু’টি বিষয় দেখা হয়, তা হল যেখানে ফ্ল্যাট করা হচ্ছে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকবে কি না, আর দমকল ঢুকবে কি না। আর ডিভাইডারটি সত্যিই খুব উঁচু হয়েছে। এটি করেছে পূর্ত দফতর। তৈরি হওয়ার পর আমি বিষয়টি জানতে পারি। দুর্ঘটনা এড়াতে পূর্ত দফতরকে ব্যবস্থা নিতে বলব।
যত দিন যাচ্ছে রাস্তা সঙ্কুচিত হচ্ছে। রাস্তার ধারে যত্রতত্র হকার বসে যাচ্ছে। ফলে মেদিনীপুর শহরে গতি কমছে। এ বিষয়ে এমকেডিএ-র ভাবনা কী?
উদয়চাঁদ পাল, কলেজ অধ্যক্ষ।
|
এটা ঠিক। আবার কোথাও কোথাও বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও দোকানের সামনে ক্রেতা বা গ্রাহকেরা সাইকেল, গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় রাস্তার পরিসর কমছে। তার উপর দিনের বেলাতেও শহরে লরি ঢুকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক বৈঠকও হয়েছে। দিনে লরি ঢোকার একটা নির্দিষ্ট সময় করা হয়েছে। এটা ঠিক যে, হকারদের না সরালে রাস্তা বড় করা সম্ভব নয়। আবার তাঁদের রুজির বিষয়টিও ভাবতে হবে। কিছু ব্যবস্থা না করেই সরিয়ে দেওয়া যায় না। যদিও হকারদের বিষয়টি পুরসভার দেখার কথা। আমাদের দিক দিয়েও কিছু করা যায় কি না ভাবব।
ব্যবসায় পুনর্বাসনের জন্য আড়াই হাজার টাকা করে ১৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পুরসভার হাতে তুলে দিয়েছিলাম কয়েক বছর আগে। কিন্তু এখনও পুনর্বাসন মেলেনি। উল্টে দু’চারদিন ছাড়াই হুমকি শোনা যায়, হকার উচ্ছেদ হবে। পুরসভা আপনাদের। রাজ্যেও আপনাদেরই সরকার। আপনাদের ভাবনা কী?
শঙ্কর দাস, সম্পাদক, মেদিনীপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকার্স ইউনিয়ন।
|
পুনর্বাসনের বিষয়টি পুরসভার দেখার কথা। আমি পুরসভা ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে যাতে একটা নির্দিষ্ট সমাধান সূত্র বের করা যায় তার চেষ্টা করব।
মেদিনীপুরে মশার উপদ্রব খুব বেড়েছে। কিন্তু মশা নিধনে পুরসভা উদ্যোগী নয়। এমনকী বহু ক্ষেত্রে নিকাশিনালাও যথাযথ পরিষ্কার করা হচ্ছে না। যে নিকাশিনালার পাশ দিয়েই গিয়েছে জলের পাইপলাইনও। অনেক সময় পাইপলাইন ফুটো হয়ে নোংরা জল ঢুকে যাচ্ছে ভিতরে। ফলে আন্ত্রিক ছড়াচ্ছে এলাকায়। এই বিষয়ে আপনাদের কী পরিকল্পনা?
এম বি দে, চিকিৎসক।
|
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
মেদিনীপুর শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। সমস্যার সমাধানে পর্ষদের পক্ষ থেকে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। ধর্মার দিক দিয়ে একটা বড় নিকাশি খাল তৈরি করতে হবে। তা ছাড়া শহরের বেশিরভাগ নিকাশিনালার সংস্কার জরুরি। পর্ষদের পরিকল্পনা কিছু দিনের মধ্যেই আপনারা জানতে পারবেন। আর পাইপলাইন ফুটো হয়ে নোংরা জল ঢোকার বিষয়গুলি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করব।
শহরের নতুন এলাকাগুলি গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত ভাবে। ফলে পুরনো শহরের মতোই ধর্মা, তাঁতিগেড়িয়া, আবাসের মতো নতুন এলাকাগুলিও ঘিঞ্জি হয়ে পড়ার আশঙ্কা। এ বিষয়ে এমকেডিএ-র পরিকল্পনা কী? ব্যবসার প্রসারে নতুন কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কী?
উদয়রঞ্জন পাল, চেম্বার অফ কমার্সের শহর চেয়ারম্যান।
|
মেদিনীপুর শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। সমস্যার সমাধানে পর্ষদের পক্ষ থেকে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। ধর্মার দিক দিয়ে একটা বড় নিকাশি খাল তৈরি করতে হবে। তা ছাড়া শহরের বেশিরভাগ নিকাশিনালার সংস্কার জরুরি। পর্ষদের পরিকল্পনা কিছু দিনের মধ্যেই আপনারা জানতে পারবেন। আর পাইপলাইন ফুটো হয়ে নোংরা জল ঢোকার বিষয়গুলি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করব।
শহরের নতুন এলাকাগুলি গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত ভাবে। ফলে পুরনো শহরের মতোই ধর্মা, তাঁতিগেড়িয়া, আবাসের মতো নতুন এলাকাগুলিও ঘিঞ্জি হয়ে পড়ার আশঙ্কা। এ বিষয়ে এমকেডিএ-র পরিকল্পনা কী? ব্যবসার প্রসারে নতুন কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কী?
উদয়রঞ্জন পাল, চেম্বার অফ কমার্সের শহর চেয়ারম্যান।
|
মেদিনীপুর শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। সমস্যার সমাধানে পর্ষদের পক্ষ থেকে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। ধর্মার দিক দিয়ে একটা বড় নিকাশি খাল তৈরি করতে হবে। তা ছাড়া শহরের বেশিরভাগ নিকাশিনালার সংস্কার জরুরি। পর্ষদের পরিকল্পনা কিছু দিনের মধ্যেই আপনারা জানতে পারবেন। আর পাইপলাইন ফুটো হয়ে নোংরা জল ঢোকার বিষয়গুলি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করব।
শহরের নতুন এলাকাগুলি গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত ভাবে। ফলে পুরনো শহরের মতোই ধর্মা, তাঁতিগেড়িয়া, আবাসের মতো নতুন এলাকাগুলিও ঘিঞ্জি হয়ে পড়ার আশঙ্কা। এ বিষয়ে এমকেডিএ-র পরিকল্পনা কী? ব্যবসার প্রসারে নতুন কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কী?
উদয়রঞ্জন পাল, চেম্বার অফ কমার্সের শহর চেয়ারম্যান।
|
পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ি তৈরি করতে হলে রাস্তার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ছেড়ে করতে হবে। আগে বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি। এ বার সেগুলি দেখা হচ্ছে। নিয়ম না মানলে জরিমানা হবে। ইতিমধ্যে বহু কারখানার ক্ষেত্রে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা পর্ষদে ক্ষমতায় এসেছি সবে এক বছর হল। ৬ মাস কেটে গিয়েছে পুরনো সমস্যা মেটাতেই। এ বার এই বিষয়গুলির উপর জোর দেব। ২০০৫ সালে পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল খড়্গপুরের চৌরঙ্গীতে একটি সিটি সেন্টার করা হবে। তার জন্য ১২০ একর জমিও দখল করে রেখেছিল। কিন্তু সেই জমি অধিগ্রহণও করা হয়নি, আবার কেনাও হয়নি। ওখানেই ৬৫ একর জমির উপর যাতে সিটি সেন্টার করার ভাবনা চলছে। আসলে পর্ষদের বার্ষিক বাজেট মাত্র ৩-৪ কোটি টাকা। যেখানে বছরে ন্যূনতম ২২-২৫ কোটি টাকা ছাড়া কাজ করা কঠিন। তাই সমস্যা হচ্ছে।
মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহর মিলিয়ে প্রায় ৩০০টি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ। তাঁদের সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। এ বিষয়ে পর্ষদ কিছু করতে পারে? ছোটখাটো অনুষ্ঠানে শব্দ-দানবের অত্যাচার বেড়েই চলেছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা যায় কী?
ঋত্বিক ত্রিপাঠী, লিটল
ম্যাগাজিনের সম্পাদক।
|
আমি নিজেও সাহিত্যের ছাত্র। তাই এ বিষয়ে কিছু করার চেষ্টা করব। কলকাতায় একটি লিটল ম্যাগাজিন সংরক্ষণ কেন্দ্র করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা স্তরেও যাতে কিছু করা যায় সে জন্য চেষ্টা করব। এটা ঠিক যে, এখন প্রচণ্ড জোরে মাইক বাজানো হয়। বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের দেখার কথা। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।
শহরে অটো চলছে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে। দুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে কী কিছু পদক্ষেপ করা যায়? শহরে শৌচাগারের সংখ্যা খুবই কম। শৌচাগার থাকলেও তা এতটাই অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন যে ব্যবহারের অযোগ্য। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শহরে আসা মানুষজনকে, বিশেষত মহিলাদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়। বিষয়টি এমকেডিএ ভেবেছে কী?
প্রসূনকুমার পড়িয়া, প্রধান শিক্ষক।
|
সত্যিই শহরে অটো রিকশাগুলি বেপোরোয়া ভাবে চলছে। অনেক সময় অধিক যাত্রী নিয়েও যাচ্ছে। মানুষের সুবিধের কথা ভেবেই শহরে অটো চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এখন তা বিড়ম্বনা। আসলে সরকার বদল হলেও আমলা বা আধিকারিকেরা একই থেকে গিয়েছেন। এঁরা সহজে কাজ করতে চান না। বিষয়টি মোটর ভেহিক্যালস্ দফতরের দেখার কথা। আমি ওই দফতরের সঙ্গে কথা বলব। চলতি আর্থিক বছরে শহর ও শহর লাগোয়া চারটি জায়গায় সুলভ শৌচাগার করা হচ্ছে। প্রতি বছরেই দুই শহর মিলিয়ে চারটি করে ৮টি সুলভ শৌচাগার তৈরির জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। |
|