পুজোর বাগনান যেন
মিনি পর্যটনকেন্দ্র

পুজোর চারদিন বাগনান যেন মিনি পর্যটনকেন্দ্র। সাঁচির বৌদ্ধস্তুপ, সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্রের বাড়ি, কামারপুকুরে ঠাকুর রামকৃষ্ণের জন্মস্থান, দক্ষিণেশ্বর-বেলুড় মঠ, দিল্লির লালকেল্লা কলকাতার শহিদমিনার সবই একাকার হয়ে যাবে পুজোর সময়ে। দর্শনার্থীরা বেড়াতে আসার স্বাদ পাবেন পুজো মণ্ডপগুলিতে ঘুরলে।
হাওড়ার ছোট্ট মফস্সল শহরটির গুরুত্ব যে কারণে তা হল উন্নত যোগাযোগ। রেল ছাড়াও বিভিন্ন রুটের বাস বাগনান থেকে চলাচল করে। হুগলি, হাওড়া এবং দুই মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকার লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন বাগনানের উপর দিয়ে কলকাতা এবং শহরতলিতে যাতায়াত করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্যই বাগনানে পুজোর সময় মণ্ডপগুলিতে দর্শনার্থীদের ভিড় ভেঙে পড়ে। আর তাই দর্শনার্থীদের কাছে টানতে পুজোর উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতি তুঙ্গে।
জাতীয় সংঘের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে সাঁচির বৌদ্ধস্তুপের আদলে। প্রায় দু’মাস ধরে শিল্পী ও কারিগরদের নৈপুণ্যে বোঝা ভার আসল নকলের ফারাক। উদ্যোক্তারা জানালেন, তাঁরা প্রতিবছর দর্শনার্থীদের নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ বার সেই পথ ধরেই এসেছে সাঁচির বৌদ্ধস্তুপ।
খালোড় দক্ষিণপল্লির পুজোমণ্ডপে গেলে ধন্দ লেগে যাবে। এটাই তো হুগলির কামারপুকুর, যেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ! মাটির দোতলা ঘর, যে ঢেঁকিসালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে যা মন্দিরে পরিণত হয়, আটচালা যেখানে ঠাকুর বসে ভক্তদের সঙ্গে ধর্মচর্চা করতেন সবই অবিকল তুলে আনা হয়েছে মডেলে। ঠাকুরের মডেল এবং প্রতিমা গড়ছেন কৃষ্ণনগরের শিল্পীরা। উদ্যোক্তাদের দাবি, কামারপুুকুরে গিয়ে ঠাকুরের বাড়ির ছবি তুলে তার আদলে নিখুঁতভাবে গড়া হয়েছে মণ্ডপ। কিছুটা দূরেই চোখে পড়বে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের বাড়ি। খালোড় মহাপ্রভূ স্পোর্টিং ক্লাব সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্রের বাড়ির আদলে তৈরি করেছে মণ্ডপ। বাড়ি ঘিরে গাছগাছালিও তৈরি করা হয়েছে আসলের মতো। রাস্তার ধারে যে নয়ানজুলি রয়েছে সেটি সাফসুতরো করে নদীর রূপ দেওয়া হয়েছে। শ্রীকান্ত উপন্যাসে কথাশিল্পীর বালক বয়সে নৌকাযাত্রার যে বিবরণ রয়েছে তা মডেলের আকারে তুলে ধরা হয়েছে কৃত্রিম এই নদীতে। মণ্ডপের সঙ্গে একেবারে যা একেবারে যথার্থ মানিয়ে গিয়েছে।
বাঁটুল ক্লাবের থিম অমৃতের সন্ধান। নরেন্দ্রনাথ দত্ত বিলে থেকে কী ভাবে বিবেকানন্দ হলেন, ছবি ও মডেলের সাহায্যে তা তুলে আনা হয়েছে। মাটি খুঁড়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম হুগলি নদ, যার একধারে রয়েছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, অপর পাড়ে বেলুড় মঠ। উদ্যোক্তাদের দাবি, বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবর্ষকে মাথায় রেখেই তাঁদের এই ভাবনা।
বাঁটুল প্রগতি সংঘের থিম ‘মা তুঝে সালাম’। ভারতের গরিমাকে বোঝাতে তৈরি করা হয়েছে লালকেল্লা। রয়েছে কলকাতার শহিদ মিনার। রবীন্দ্রনাথ, গাঁধী থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং দেশনায়কদের মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। এখানে এলে দেশের প্রতি মমত্ব অনেকটা বাড়বে বলে উদ্যোক্তাদের দাবি।
কমতি নেই থিমের বৈচিত্রেও। খালোড় শিশুসংঘের থিম ‘ছোটবেলা’। অনেক আগে শিশুদের ছড়ার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হত। সেই সংস্কৃতি এখন লুপ্তপ্রায়। হারিয়ে যাওয়া সেই সংস্কৃতিই তুলে ধরা হয়েছে। মণ্ডপের গায়ে শৈল্পিক আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে ছড়ার নিদর্শন। প্রতিমা তৈরিতেও রয়েছে অভিনবত্ব। একরত্তি গণেশকে কোলে নিয়ে দুর্গা এখানে বাংলার গৃহবধূ।

ছবি: সুব্রত জানা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.